Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

দুই দুষ্কৃতী স্থানীয়, আতঙ্ক কাটছে না সেই চিকিৎসকের

ই চিকিৎসক দেবীশঙ্কর দে এবং তাঁর পরিবারের নাড়ি-নক্ষত্র জানত অপহরণকারীরা। শুধু তা-ই নয়, যে চার দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করেছিল দেবীশঙ্করবাবুকে, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও তাদের খোঁজ নেই।

দেবীশঙ্কর দে।

দেবীশঙ্কর দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫৩
Share: Save:

অপহরণকারীদের হাত থেকে ফিরে এসেও আতঙ্ক কাটছে না হাওড়ার চিকিৎসক ও তাঁর পরিবারের। কারণ প্রথমত, অপহরণের ঘটনায় যে দুই দুষ্কৃতী মুক্তিপণের টাকা নিতে এসেছিল তারা স্থানীয় বাসিন্দা। দ্বিতীয়ত, ওই চিকিৎসক দেবীশঙ্কর দে এবং তাঁর পরিবারের নাড়ি-নক্ষত্র জানত অপহরণকারীরা। শুধু তা-ই নয়, যে চার দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে অপহরণ করেছিল দেবীশঙ্করবাবুকে, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও তাদের খোঁজ নেই। ওই চিকিৎসক তাই নিরাপত্তার দাবিতে মঙ্গলবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। এ দিকে, অপহরণকারীদের দুই সঙ্গীকে ধরতে এলাকার যে ক্লাব-সদস্যেরা তৎপর হয়েছিলেন, এ দিন পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা তাঁর অফিসে ডেকে তাঁদের সাহসিকতার জন্য শংসাপত্র দেন।

সোমবার সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ আমতার পলিক্লিনিকে রোগী দেখতে যাওয়ার সময়ে প্রকাশ্য রাস্তায় চার যুবক মোটরবাইকে এসে দেবীশঙ্করবাবুকে অপহরণ করে। পরে তাঁকে দিয়েই বাড়িতে ফোন করিয়ে ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায়। সেই টাকা নিতে এলে স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যেরা দুই দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেন। তাদের দিয়ে সঙ্গীদের ফোন করিয়ে মিথ্যা খবর দিতে বাধ্য করেন। দুষ্কৃতীরা চাপে পড়ে বাকি দুই সঙ্গীকে জানায়, মুক্তিপণের টাকা হাতে এসে গিয়েছে। এর পরেই দেবীশঙ্করবাবুকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। তিনি সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফেরেন।

পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া জিৎ গোরা এবং সংগ্রাম দাস ওরফে সুমন দাস স্থানীয় এস এন গাঙ্গুলি রোডের বাসিন্দা। একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে জিৎ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, মুক্তিপণের দিন টাকা নিতে এসেছিল চার দুষ্কৃতী। ধরা পড়ে যায় দু’জন। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ তাদের সঙ্গীদের নাম জেনেছে। তাদের মধ্যে এক জন জিতের স্কুলে তারই সহপাঠী ছিল। অন্য জন স্থানীয় বাসিন্দা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কুসঙ্গে মিশে ওই ছাত্রেরা সম্প্রতি এলাকায় একাধিক অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার রামরাজাতলার বাড়িতে বসে দেবীশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা আমার বাড়ির কাছেই থাকে। যারা আমার বুকে ৯ এমএম পিস্তল ঠেকিয়ে অপহরণ করেছিল, তারা আমার পরিবারের সব খুঁটিনাটি জানে। কোন ব্যাঙ্কে আমার টাকা থাকে, আমার ছ’বছরের ছেলে কখন স্কুলে যায়— সবই তাদের নখদর্পণে। তাই ভীষণ আতঙ্কে আছি।’’

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় স্থানীয় ঝিলপাড় এলাকার একটি দুষ্কৃতী-চক্র জড়িত। সম্প্রতি তারা মধ্য হাওড়ায় তোলাবাজি, নারী পাচার ও মাদক পাচারের ঘটনায় ঘুম কেড়েছে পুলিশের। ওই দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। অপহরণে ধৃত জিৎ এবং সুমনকে এ দিন উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হলে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা চলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Doctor Miscreants Attempt to murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy