কলকাতা মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
প্রায় প্রতি সপ্তাহেই নিয়ম করে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগআসছে। শুক্রবারও যার ব্যতিক্রম হয়নি। বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা মেয়র বার বার মুখে বললেও বাস্তবে তার উল্টোটাই দেখা যাচ্ছে। এ দিন আবারও ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ শুনে ধৈর্য হারিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘এ বার দু’জন ইঞ্জিনিয়ারকে (সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার) চাকরি খোয়াতে হবে। তবে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ হবে।’’
যদিও এ দিন মেয়রের এ হেন হুঁশিয়ারির পরে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে পুরসভার অন্দরেই। প্রশ্ন উঠেছে, শুধু ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই কি শহরে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ হবে?পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, স্থানীয় ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতাদের মদতেই অনেক ক্ষেত্রে বেআইনি নির্মাণ চলছে রমরমিয়ে। মাসকয়েক আগে ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে বেআইনি নির্মাণভাঙার সময়ে সেখানকার পুরপ্রতিনিধি রুখে দাঁড়ান। ফলে, বাধ্য হয়ে সেই বেআইনি নির্মাণ না ভেঙে ফিরে আসতে হয়েছিল পুলিশ ও পুরসভার আধিকারিকদের।
এই প্রসঙ্গে মেয়র এ দিন বলেন, ‘‘শহরের কোথাও কোনও বেআইনি নির্মাণ যখন শুরু হয়, তখন সেই এলাকার বিল্ডিংবিভাগের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা সেই খবর রাখেন। শুরুতেই তাঁরাবেআইনি নির্মাণ ভাঙতে উদ্যোগী হলে পরে আর সমস্যা পোহাতে হয় না।’’ মেয়রের দাবি,‘‘বেআইনি নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে সেই বাড়িতে লোকজন ঢুকেপড়লে মানবিকতার খাতিরে সেখান থেকে তাঁদের বার করে দিয়েভাঙার কাজ খুব কঠিন হয়ে পড়ে। সেই জন্য বেআইনি নির্মাণের শুরুতেই ভাঙার কাজ হলে পুরসভার কাজটা সহজ হয়ে যায়।’’
মেয়রের কথায়, ‘‘এ ক্ষেত্রে বেআইনি নির্মাণ পুরোপুরি হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট এলাকার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে কঠোরব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাঁদের চাকরি গেলে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ হবে।’’মাস দুয়েক আগে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানেই মেয়রকে বলতে হয়েছিল, ‘‘প্রতিদিন বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ শুনতে হচ্ছে। এটা আমার কাছে অত্যন্ত অপমানজনক।’’ মেয়র বলেছিলেন, ‘‘বেআইনি বাড়ির খবর দেওয়া মানুষের কাজ নয়। তাঁরা অভিযোগ জানানোর পরে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। তা হলে সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের রেখে লাভ কী? এমন হলে আমরা একটা ওয়েবসাইট তৈরি করি, যেখানে নাগরিকেরাই বেআইনি নির্মাণের খবর দেবেন!’’
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের দায়িত্বে মেয়র নিজে রয়েছেন। বছরের পর বছর ‘টক টু মেয়র’অনুষ্ঠানে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে মেয়র সরব হচ্ছেন। অথচ, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সেই কারণেপ্রশ্ন উঠেছে, বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুরসভা কি ব্যর্থ? এই প্রশ্নের উত্তরে মেয়রবলেন, ‘‘আগের তুলনায় বেআইনি নির্মাণ ৮০ শতাংশ কমেছে। বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুরসভা বিল্ডিং বিভাগের ১৬ জন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে শো-কজ় ও তিন জনকে সাসপেন্ড করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy