ফাইল চিত্র।
হাওড়া শহরে গত ছ’বছরে তিন হাজারেরও বেশি বেআইনি বাড়ি তৈরির অভিযোগ উঠেছিল আগেই। যা প্রকাশ্যে আসায় এ বার কঠোর পদক্ষেপ করল হাওড়া পুরসভার নতুন প্রশাসকমণ্ডলী। দুর্নীতি কমিয়ে কাজে গতি আনতে বৃহস্পতিবার বিল্ডিং দফতর থেকে বদলি করে দেওয়া হল সমস্ত পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারকে। তাঁদের জায়গায় অন্যান্য দফতর থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ইঞ্জিনিয়ারদের। হাওড়া পুরসভার ইতিহাসে এত জন পদস্থ কর্তাকে একসঙ্গে বদলি করার ঘটনা নজিরবিহীন বলেই জানা গিয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন অন্যান্য দফতরে বদলি করে দেওয়া হয়েছে এক জন এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও তিন জন সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে। পুরসভার বক্তব্য, যাঁদের বদলি করে অন্য দফতরে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ১৫ থেকে ১৭ বছর ধরে এক পদে কাজ করছিলেন। কারও কারও বিরুদ্ধে অসাধু প্রোমোটারদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগও একাধিক বার জমা পড়েছে পুরসভায়।
যদিও এই বদলিকে পুরোপুরি ‘রুটিন’ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘এটা রুটিন বদলি। কয়েক জন বছরের পর বছর একই পদে কাজ করছিলেন। তাই বদলি করে দেওয়া হল। বিল্ডিং দফতরকে নতুন করে সাজানো হল। এতে কাজেও গতি আসবে।’’
চেয়ারপার্সন যা-ই বলুন, বাম আমল থেকে একই পদে থাকা বিল্ডিং দফতরের কর্তাদের একাংশের মদতেই যে হাওড়া শহরে প্রতি বছর গড়ে ৫০০-৬০০ অবৈধ বাড়ি তৈরি হয়েছে, তা মানছেন পুরসভার পদস্থ কর্তারাও। তাঁদেরই এক জন বললেন, ‘‘বিল্ডিং দফতরে গত দু’দশক ধরে অনেকেরই মৌরসিপাট্টা তৈরি হয়েছিল। সেটা ভেঙে দেওয়ায় আদতে সাধারণ মানুষেরই উপকার হবে। নকশা অনুমোদন করাতে গিয়ে তাঁদের হয়রানি অনেক কমবে।’’
বেআইনি বহুতল তৈরির একের পর এক ঘটনায় পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক শ্রেণির পদস্থ কর্তার দিকে আঙুল উঠেছিল অনেক আগেই। কিন্তু কোনও পুর দফতরের খোলনলচে বদলানোর ঘটনা এই প্রথম ঘটল। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র তিন মাস আগে ওই দফতরে যোগ দেওয়া এক অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে দুর্নীতির অভিযোগে সরাতে চেয়ে এক তৃণমূল বিধায়ক নিজের প্যাডে চিঠি দেন। এর পরেই শোরগোল পড়ে যায় প্রশাসকমণ্ডলীতে। প্রশ্ন ওঠে, এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মাত্র তিন মাসে কী এমন দুর্নীতি করলেন যে, তাঁকে বদলি করার সুপারিশ এল? তা হলে যাঁরা বছরের পর বছর ওই দফতরে রয়ে গিয়েছেন এবং হাজার হাজার বেআইনি বহুতলের অনুমোদন দিয়েছেন, তাঁদের বদলির সুপারিশ করা হয় না? এর পরেই প্রশাসকমণ্ডলী সিদ্ধান্ত নেয় যে, ওই দফতর থেকে সমস্ত পদস্থ কর্তাকে বদলি করে বিল্ডিং দফতরকে নতুন করে সাজানো হবে। এর পরেই এ দিন রাতে বদলির নোটিস জারি করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy