Advertisement
E-Paper

রাস্তা আটকেই মণ্ডপ ও জলসার মঞ্চ শহর জুড়ে

বিধি ভাঙার এই প্রতিযোগিতায় উত্তরের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে দক্ষিণও। যার জেরে ভোগান্তির মুখে পড়ছে গাড়ি থেকে শুরু করে হাসপাতালমুখী অ্যাম্বুল্যান্স— সবই।

অবরুদ্ধ: রাস্তা আটকে কালীপুজো শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে। (বাঁ দিকে) বিবেকানন্দ রোডে, (ডান দিকে) হিন্দুস্থান রোডে। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক ও রণজিৎ নন্দী

অবরুদ্ধ: রাস্তা আটকে কালীপুজো শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে। (বাঁ দিকে) বিবেকানন্দ রোডে, (ডান দিকে) হিন্দুস্থান রোডে। রবিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক ও রণজিৎ নন্দী

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২২ ০৯:২১
Share
Save

কোথাও ফুটপাত পেরিয়ে পুজো মণ্ডপ চলে এসেছে রাস্তার মাঝখানে, কোথাও আবার গোটা রাস্তা দখল করেই সেজে উঠেছে জলসার মঞ্চ। এক-এক জায়গায় রাস্তা দখল করে মণ্ডপ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ এমন ভাবে মুখোমুখি তৈরি হয়েছে যে, একটি গাড়িও যেতে পারছে না। ব্যস্ত রাস্তার ধারে পুজো ঘিরে সার দিয়ে বসেছে দোকান থেকে নাগরদোলা, এমনও দেখা গিয়েছে। সেখানে দিনের বেলায় কিছু গাড়ি যাতায়াত করতে পারলেও রাত হলেই ভয়াবহ অবস্থা হচ্ছে। আর উদ্যোক্তাদেররাস্তা আটকে পুজোর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেই উত্তর দিচ্ছেন, ‘‘ক’দিনের তো ব্যাপার! সারা বছর তো থাকবে না!’’

দুর্গাপুজোর পরে কালীপুজোতেও রাস্তা আটকে উৎসব। বিধি ভাঙার এই প্রতিযোগিতায় উত্তরের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে দক্ষিণও। যার জেরে ভোগান্তির মুখে পড়ছে গাড়ি থেকে শুরু করে হাসপাতালমুখী অ্যাম্বুল্যান্স— সবই। রাস্তার এই ঝামেলা এড়াতে কেউ কয়েক কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে যাওয়ার কথা শোনালেন, কেউ আবার ঝামেলার ভয়ে অভিযোগ তো দূর, কোনও কথাই বলতে চাইলেন না। কিসের ভয়? প্রশ্ন করতেই উত্তর এল, ‘‘আপনি তো চলে যাবেন। তার পরে ওরা জানতে পারলে আমার কী হবে?’’ উত্তর কলকাতার দমদম সেভেন ট্যাঙ্কস এলাকায় শাসকদলের এক দাপুটে নেতার পুজো ঘিরে দীপেন ঘোষ সরণি আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়দের একাংশ। দমদম এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে যাওয়া-আসার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা বন্ধ রাখার ফলে প্রায় এক কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। রাস্তাআটকে জলসা কেন হবে, এই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। একই ভাবে রাস্তা আটকে পুজোর অভিযোগ উঠেছে উত্তরের মদন মিত্র লেনেও। কার্যত গোটা মদন মিত্র লেন আটকেই এ বছর মণ্ডপ তৈরির অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি এমনই যে, গাড়ি তো দূর, একটি সাইকেল নিয়ে যাওয়ারও পরিসর নেই। রাস্তা আটকে পুজো করছেন কেন? পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা তপন দেব বললেন, ‘‘এ বার পুজোর ৫০তম বছর। তাই বাজেট কিছুটা বাড়িয়ে বড় করে করা হচ্ছে। অন্যান্য বার জায়গা থাকে। এ বছরই মণ্ডপ একটু বেশি বড় হয়েছে। তবে বিকল্প রাস্তা আছে, সেখান দিয়ে যাতায়াত করা যাবে। অসুবিধা তেমন হবে না!’’

অসুবিধা না হওয়ার একই কথা শোনাচ্ছেন উত্তর কলকাতার রাজা রামমোহন রায় সরণির অন্যতম বড় পুজোর এক কর্তাও। ৮১তম বর্ষের ওই পুজো ঘিরে গত দু’বছর মেলা না বসলেও এ বছর রাস্তার দু’দিকে সার দিয়ে বসেছে একের পর এক দোকান। রাস্তার পাশে নাগরদোলাও বসানো হয়েছে। উত্তর কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত ওই রাস্তা দিয়ে দিনের বেলায় কোনও মতে যাতায়াত করা গেলেও বিকেল থেকেই মেলার ভিড়ে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে পথ। তাই কার্যত বাধ্য হয়েই অন্য রাস্তা ধরতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। অসুবিধার কথা মেনে নিচ্ছেন পুজোর কর্তাদের একাংশও। এক কর্তার কথায়, ‘‘অসুবিধা যে একেবারে হচ্ছে না, এ কথা বলব না। তবে রাস্তায় যান চলাচল যাতে স্বাভাবিক থাকে, তার জন্য পুলিশের সঙ্গে ক্লাবের ছেলেরাও সব সময়ে থাকছে।’’ রাস্তা আটকে পুজো মণ্ডপের পাশাপাশি জলসার মঞ্চ বাঁধার অভিযোগ উঠেছে রাজা রামমোহন রায় সরণির একতা সঙ্ঘের বিরুদ্ধেও। যদিও পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সঞ্জীব দত্ত বললেন, ‘‘কারও কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ আসেনি। পুলিশকে বলা আছে।’’ রাস্তা আটকে পুজো করার একই অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণের ডোভার লেন, হিন্দুস্থান রোড, ডক্টর সরোজ ব্যানার্জি রোডেও।

আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। রাস্তা আটকে পুজো ও জলসার অনুমতি পুলিশের তরফে দেওয়া হচ্ছে কী ভাবে? কেনই বা পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? পুলিশের অধিকাংশ কর্তাই অবশ্য এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। লালবাজারের এক কর্তা শুধু বললেন, ‘‘সব রকম বিধি মেনে পুজো হচ্ছে কি না, তা দেখার নির্দেশ প্রতিটি থানাকেই দেওয়া আছে।’’ কিন্তু সেই বিধি আদৌ মানা হচ্ছে কি? না হলে কি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? এই প্রশ্নের অবশ্য কোনও উত্তর মেলেনি।

kali Puja 2022

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।