বহু গরিব পড়ুয়ার গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়ার সামর্থ্য নেই। এর ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রতীকী ছবি।
প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন শেষ হতে না হতেই রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে আগামী ২ মে থেকে গরমের ছুটি পড়ে যাচ্ছে। শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, কবে স্কুল খুলবে, তা আবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু শিক্ষকদের বড় অংশের আশঙ্কা, দীর্ঘ গ্রীষ্মাবকাশের পরে স্কুল খুললে পড়ুয়ারা দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় না-ও পেতে পারে। তাঁদের মতে, করোনাকালের দু’বছর পড়াশোনায় যে ঘাটতি হয়েছিল, তা এখনও পুরো মেটানো যায়নি। তাই এখন দরকার ছিল টানা পঠনপাঠন। পাশাপাশি, অনেক শিক্ষক বলছেন, বার বার লম্বা ছুটিতে অনেক পড়ুয়ার অভিভাবক গৃহশিক্ষকের খোঁজ শুরু করেছেন। কিন্তু বহু গরিব পড়ুয়ার গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়ার সামর্থ্য নেই। এর ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার-পোষিত স্কুলগুলিতে বছরে তিন বার পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন হয়। প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন সবে শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন হবে অগস্টের প্রথম সপ্তাহে। তৃতীয়টি হবে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। শিক্ষকদের প্রশ্ন, গ্রীষ্মের ছুটির পরে স্কুল খুললে পড়ুয়ারা কি দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের জন্য তৈরি হওয়ার যথেষ্ট সময় পাবে?
‘বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি'র সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হন্ডা বলেন, ‘‘সব চেয়ে বেশি অসুবিধা হবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াদের। প্রত্যেক পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের পরে তাদের পরবর্তী পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের জন্য নতুন বই দেওয়া হয়। এই দুই শ্রেণির পড়ুয়ারা সবে মাত্র দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের জন্য নতুন বই পেয়েছে। কিন্তু তাদের পড়াবেন কারা?’’
আনন্দ জানান, তাঁরা শিক্ষা দফতরকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, ছাত্রছাত্রীদের প্রস্তুতির জন্য গরমের ছুটি দীর্ঘ করার প্রয়োজন তো নেই-ই, বরং চলতি মাসের যে সাত দিন তীব্র দহনের জন্য স্কুল বন্ধ ছিল, ওই দিনগুলিকে গরমের ছুটির মধ্যে ধরে নিয়ে ছুটি কমানো হোক।
‘পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র বলেন, ‘‘পুরো জুন মাস যদি গ্রীষ্মের ছুটি থাকে, তার পরে স্কুল খুলতে না খুলতেই ফের চলে আসবে পঞ্চায়েত ভোট। আর সাধারণত স্কুলগুলি হয় পঞ্চায়েত ভোটের কেন্দ্র। ফলে, তখন ফের পঠনপাঠন বন্ধ থাকবে। তা হলে পড়ুয়ারা দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের প্রস্তুতির জন্য সময় পাবে কখন? এ ভাবে তো প্রতি বছর লেখাপড়ায় ঘাটতি বেড়েই চলেছে।’’ যদিও শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, পড়ুয়াদের প্রস্তুতিতে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। গ্রীষ্মের ছুটির পরে স্কুল খুললে প্রয়োজনে অতিরিক্ত ক্লাস নিতে শিক্ষকদের বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy