প্রতীকী ছবি।
বহু লক্ষ টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছেন। কিন্তু মিউটেশন করাতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, বাড়ির নকশা বৈধ নয় বা নকশার কোনও অস্তিত্বই নেই পুরসভার রেকর্ডে। তার জেরে ক্রেতার মিউটেশন, সম্পত্তি কর দেওয়া আটকে গিয়েছে। ফ্ল্যাটের রি-সেল মূল্যও শূন্য হয়ে গিয়েছে। বিধাননগর পুর এলাকার রাজারহাট-গোপালপুর এলাকায় ফ্ল্যাট কিনে বহু ক্রেতার এখন মাথায় হাত। হাত তুলে দিয়েছেন প্রোমোটারেরাও। পরিস্থিতি এমনই যে সম্প্রতি বিধাননগর পুরসভার তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ক্রেতাদের সাবধান হতে বলা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, রাজারহাট-গোপালপুর এলাকায় এমন একশো থেকে দেড়শো বহুতল চিহ্নিত করে কাজ বন্ধের নোটিস দিয়েছে পুরসভা। পুলিশ সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে সাত নম্বর ওয়ার্ডে একটি বেআইনি নির্মাণ বন্ধ না করতে চাওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রোমোটারের লোকজনকে গ্রেফতার করা হয়।
২০১৫ সালে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা ও বিধাননগর পুরসভা সংযুক্ত হয়ে বিধাননগর পুরসভা (কর্পোরেশন) তৈরি হয়। সেই সময়ে নিয়ম হয়েছিল, ২০১৪ সালে অনুমোদিত নকশা ২০১৭ সাল পর্যন্ত বৈধ থাকবে। পুর আধিকারিকদের দাবি, অনেকে এমন নকশা নিয়েও হাজির হচ্ছেন, যেগুলিতে পুরসভার স্ট্যাম্পের মতো অবিকল ছাপ মারা রয়েছে। জনপ্রতিনিধির সই রয়েছে। কিন্তু রেকর্ডে সেই সব নকশার অস্তিত্বই নেই। এ সবের পাশাপাশি বহু প্রোমোটার পুরনো নকশা নতুন কর্পোরেশনে পুনর্নবীকরণ না করিয়েই ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন। আবার নির্দিষ্ট মাপের রাস্তা না থাকা সত্ত্বেও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বহুতল বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। একতলার গ্যারাজ ঘিরে ফ্ল্যাট হয়েছে। যার জেরে ওই সব বহুতল বা ফ্ল্যাটের বৈধতা প্রশ্নের মুখে পড়ছে।
পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “মানুষকে সতর্ক করতেই বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পুরসভা। জটিলতা থাকায় মানুষকে সাহায্য করতে পারছি না। তাই তাঁদের সতর্ক হতে আবেদন করেছি।”
ক্রেতাদের প্রশ্ন, জনপ্রতিনিধিরা কেন এ সবের খেয়াল রাখবেন না। কেনই বা পুরসভা জাল নকশার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করছে না।
রাজারহাট-গোপালপুর এলাকায় কানাঘুষো এমনও যে, জাল নকশা তৈরি বা নিয়মবহির্ভূত ভাবে বহুতল নির্মাণের পিছনে জনপ্রতিনিধিদেরই একাংশের ঘনিষ্ঠদের মদত রয়েছে। পুরসভার ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে নকল বা বাতিল হওয়া নকশা দেখিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রির বিষয়টি। লোকবলের অভাবে নজরদারি চালানো যায় না বলে জানাচ্ছেন পুরসভার এক আধিকারিক।
এক আধিকারিকের কথায়, “ফ্ল্যাট বেআইনি হলেও সেখানে বসবাস শুরু হলে আইন অনুযায়ী সেটি ভাঙার নির্দেশ দেওয়া যাবে না। আগে বসবাসকারীর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। অথচ এর জেরে ক্রেতার ফ্ল্যাটের মূল্য থাকছে না। পুরসভাও সম্পত্তিকর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।” বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনার আগে পুরসভার নকশা অনুমোদন দফতরে তথ্য যাচাই করতে।
পুরসভার এমন বিজ্ঞপ্তি ঘিরে ভোটের মুখে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান বিজেপি নেতা সব্যসাচী দত্তের অভিযোগ, “মেয়র থাকাকালীন রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার এমন বহু বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে চিঠি দিয়েছিলাম। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওই সব বেআইনি নির্মাণ নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাও চলছে। পুরসভার ঘুম ভাঙল অনেক দেরিতে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy