বিপজ্জনক: নিউ টাউনের একটি বিনোদন পার্কে সুইমিং পুলের নামার জায়গা দিয়েই পরপর উপরে উঠছেন অনেকে। সোমবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
লাইফ জ্যাকেট না পরেই কোনও জলাশয়ে বোটিং করছেন লোকজন। কোথাও আবার দেখা গেল, সুইমিং পুলে জলের গভীরতা কত সেই তথ্যটুকু পর্যন্ত পুলের সামনে লেখা নেই। অথচ সেখানেই বিবিধ জলক্রীড়ায় মেতেছেন ছোট থেকে বড় সকলে।
সোমবার দু’টি বিনোদন পার্ক ঘুরে দেখা গেল এমনই ছবি। গত শনিবার নিউ টাউনের ইকো পার্কে বেড়াতে গিয়ে চিল্ড্রেন্স পার্কের কাছে একটি জলাশয়ে ডুবে মৃত্যু হয় বছর চারেকের একটি শিশুর। ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে এই প্রশ্নও ওঠে, শহরের অন্য বিনোদন পার্কগুলির নিরাপত্তা নিয়ে কতটা সচেতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ?
এ দিন নিউ টাউনের কোচপুকুরের কাছে একটি বিনোদন পার্কে গিয়ে দেখা গেল, সেখানকার কোনও সুইমিং পুলের সামনেই জলের গভীরতা সংক্রান্ত তথ্য লেখা নেই। অথচ ওই পার্কের সমস্ত রাইডই ছোট-বড় নানা রকম সুইমিং পুলকে ঘিরে। এমনই একটি রাইডে স্লিপের মাধ্যমে উপর থেকে পুলের জলে পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। যেখান দিয়ে পিছলে সুইমিং পুলে নামার কথা, সেখান দিয়েই হেঁটে বিপজ্জনক ভাবে উপরে উঠতে দেখা গেল অনেককে। কিন্তু এ ভাবে যদি বড় কোনও বিপদ ঘটে? সে দিকে অবশ্য ভ্রূক্ষেপ নেই কারও। পার্ক কর্তৃপক্ষ বারণ করলেও তাতে কান দিচ্ছেন না তাঁরা। কয়েক জন আবার সিঁড়ি ব্যবহার না করে রেলিং বেয়ে রাইডে উঠছেন। পেন্ডুলাম নামে একটি রাইডের সামনে বিপজ্জনক জায়গায় দাঁড়িয়ে এক যুবককে ছবি তুলতেও দেখা গেল। তিনিই জানালেন, বিহারের ছাপরা থেকে তাঁরা ৬৫ জন বেড়াতে এসেছেন।
প্রশ্ন উঠেছে, এই ৬৫ জনের ভিড় সামলাতেই যদি হিমশিম খেতে হয় পার্ক কর্তৃপক্ষকে, তা হলে ছুটির দিনে বেশি ভিড় হলে তা সামলানোর পরিকাঠামো তাঁদের আছে তো? ওই বিনোদন পার্কের জেনারেল ম্যানেজার গৌরব গোস্বামীর দাবি, ‘‘পার্কের মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসা-কেন্দ্র থেকে শুরু করে অ্যাম্বুল্যান্স, সবই রয়েছে। রয়েছেন যথেষ্ট সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষী। আছে সিসি ক্যামেরাও।’’
সল্টলেকের একটি বিনোদন পার্কে লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই চলছে বোটিং। সোমবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
সল্টলেকের সেক্টর ৪-এ একটি জনপ্রিয় বিনোদন পার্কে গিয়ে অবশ্য চোখে পড়ল, তাঁদের সুইমিং পুলে জলের গভীরতা কত, বোর্ডে সেই তথ্য লিখে দেওয়া হয়েছে। ওই পার্কের প্রেসিডেন্ট রাজেশ রাইসিঙ্ঘানি বলেন, ‘‘এই বোর্ড লাগানো সত্ত্বেও সুইমিং পুলে বিপজ্জনক ভাবে ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। পুলের জল অগভীর এবং এ ভাবে সেখানে ঝাঁপ দিলে যে মারাত্মক বিপদ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে, সেই সচেতনতাটুকুও অনেকের মধ্যে তৈরি হয়নি। তবু আমরা সাধ্য মতো পার্কে আসা পর্যটকদের সাবধান করি।’’ তিনি জানান, তাঁদের একটি নিজস্ব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। পার্কের কোথাও নিরাপত্তায় গাফিলতি চোখে পড়লে তা ওই গ্রুপে তুলে দেওয়া হয়।
এর পাশাপাশি ওই বিনোদন পার্কে দেখা গিয়েছে, লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই চলছে বোটিং। যাঁরা বোটিং করাচ্ছেন তাঁদের দাবি, জল অগভীর হওয়ায় লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। কিন্তু পর্যটকদের প্রশ্ন, অগভীর জলে বোটিং হলেও লাইফ জ্যাকেট থাকলে তাঁরা আরও সুরক্ষিত বোধ করতেন। কেন এই ন্যূনতম নিরাপত্তা থাকবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy