Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

টালা সেতু নিয়ে আজ সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী

পুলিশ সূত্রের খবর, ২৪টি বেসরকারি রুটের বিকল্প পথ রাত পর্যন্ত স্থির করা গিয়েছে। এর মধ্যে সাতটি রুটে মিনিবাস চলে। তার মধ্যে তিনটি রুটকে বেলগাছিয়া এবং বাকি চারটি রুটকে দমদম-নাগেরবাজার হয়ে ঘোরানো হচ্ছে।

বিপজ্জনক: টালা সেতুর উপর দিয়ে যাচ্ছে ভারী ট্রাক। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

বিপজ্জনক: টালা সেতুর উপর দিয়ে যাচ্ছে ভারী ট্রাক। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২২
Share: Save:

টালা সেতুতে বাস চলাচল কি বন্ধ হতে চলেছে? বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যসচিবের উপস্থিতিতে পুলিশ ও পরিবহণ দফতরের বৈঠকের পরে এই প্রশ্নটাই জোরালো হয়েছে। রাত পর্যন্ত সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে পরিবহণ দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, টালা সেতু দিয়ে ৫০টি রুটের বাস চলে। সেগুলির বিকল্প পথ নির্বাচন করা হচ্ছে। নবান্নের খবর, বাস চলাচল বন্ধের বিষয়টি নিয়ে আজ, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে ছোট গাড়ি আপাতত চলবে বলেই প্রশাসনের খবর। টালা সেতু দিয়ে পথচারীদের চলাচলও বন্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

পুলিশ সূত্রের খবর, ২৪টি বেসরকারি রুটের বিকল্প পথ রাত পর্যন্ত স্থির করা গিয়েছে। এর মধ্যে সাতটি রুটে মিনিবাস চলে। তার মধ্যে তিনটি রুটকে বেলগাছিয়া এবং বাকি চারটি রুটকে দমদম-নাগেরবাজার হয়ে ঘোরানো হচ্ছে। বাকি ১৭টি রুটের কয়েকটি দমদমের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ঘোরানো হবে। বালি হয়ে আসা বাসগুলিকে হাওড়া দিয়ে পাঠানো হবে। কলকাতা স্টেশনকে কেন্দ্র করে কিছু অস্থায়ী বাস রুট তৈরি হবে।

প্রশাসনের একটি বড় অংশই মনে করছেন, পুজোর আগে টালা সেতুতে বাস চলাচল বন্ধ হলে সাধারণ মানুষের সমস্যা বাড়বে। কিন্তু সেতুর যা অবস্থা, তাতে বাসের মতো বড় যাত্রিবাহী গাড়ি চালানো নিরাপদ হবে কি না, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, ভারী গাড়ি চলাচল করলে টালা সেতু যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে। এমনকি, মাঝেরহাট সেতুর মতো বিপর্যয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশও।

এ দিন নবান্নে বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব মলয় দে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা, ডিসি (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পাণ্ডে, পরিবহণসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম-সহ পদস্থ কর্তারা। সেতুর অবস্থা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল রাইটস-কে। রাইটস রাজ্যকে জানিয়েছিল, টালা সেতুর ‘ডেক’ (যার উপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করে) খারাপ হয়ে গিয়েছে। মূলত সেতুর গার্ডার (যে অংশগুলি জুড়ে ডেক তৈরি হয়) এবং সেগুলির সংযোগকারী কিছু কেব্‌ল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্যা অনেকটা মাঝেরহাট সেতুর মতোই। সূত্রের খবর, সেতু বিশেষজ্ঞ ভি কে রায়নাকে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি সেতুর স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখে মতামত দেবেন। তবে প্রশাসনের শীর্ষ মহলের বক্তব্য, বিশেষজ্ঞেরা যদি সেতুর স্বাস্থ্য ফেরানোর দাওয়াই সম্পর্কে নিশ্চিত হন, তা হলে তৃতীয় কোনও সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করানো হবে না। না হলে কোনও পেশাদার সংস্থা ফের সেতুর পরীক্ষা করবে। তবে গোটা প্রক্রিয়ার সময়সীমাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

পুলিশ সূত্রের খবর, রাইটস-এর রিপোর্ট পাওয়ার পরেই সেতুতে ভারী, পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, সেতুর গার্ডার ও কেব্‌ল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে তার ভার বহনের ক্ষমতা কমেছে। তার ফলে সেতুর উপরে অতিরিক্ত ওজন চাপালে তা ভেঙে পড়তে পারে। সেই কারণে এ দিন সেতুর উপরে রাস্তার দু’পাশে থাকা কংক্রিটের স্ল্যাবও সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, টালা সেতুতে বাস চলাচল যদি বন্ধ করতে হয়, তা হলে কী করা হবে? পুলিশ সূত্রের খবর, বি টি রোডের বদলে আর জি কর রোড, যশোর রোড এবং বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে বাস ঘোরানো হতে পারে। অনেকে বলছেন, সেতুতে গাড়ির সংখ্যা কমাতে দু’পাশে যান নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। যাতে একসঙ্গে অনেক গাড়ি সেতুতে না ওঠে। পাশাপাশি সেতুর নীচ দিয়ে রাস্তা তৈরি করা যায় কি না, তা-ও দেখতে হবে। সে ক্ষেত্রে টালা সেতুর নীচে থাকা চিৎপুরের রেললাইনে লেভেল ক্রসিং এবং সার্কুলার খালের উপরে বেলি ব্রিজ তৈরির কথাও ভেবে দেখা যেতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

Tala Bridge Nabanna KMDA Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE