তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বেলা সাড়ে ১১টার ডোরিনা ক্রসিং। মিছিলের অভিমুখ কোন দিকে, বোঝার উপায় নেই। চৌরঙ্গি মোড়ের দিকে আসার বদলে ভিড়ের অনেকেই হাঁটছেন এক্সাইড মোড়ের দিকে। একই রকম দৃশ্য রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতেও। সভাস্থলের দিকে যাওয়ার বদলে উল্টো দিকে হাঁটতে থাকা ভিড়ের উদ্দেশে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কোথায় যাচ্ছেন? উত্তর এল, ‘‘দু’দিন তো কলকাতায় হল। ফিরে যাচ্ছি। মিছিল শুরু হলেই বেরিয়ে পড়ব, কথা ছিল।’’ একই অবস্থা শিয়ালদহ স্টেশনেও। সকাল সাড়ে ১০টাতেই লালগোলা প্যাসেঞ্জারে চড়ে বসেছেন মিছিল ফেরত অনেকেই। তাঁদেরই এক জন স্পষ্ট বললেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ ছেড়েছি বুধবার সকালে। ফিরতে আর কত দেরি করব?’’
মিছিল চলাকালীন বাড়িমুখো ভিড়ের চিত্র নতুন নয়। অন্যান্য বার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চে ওঠা অবধি থাকতেন বেশির ভাগ মানুষ। তাঁর বক্তৃতা যখন মাঝামাঝি, সেই সময়েই মূলত ফেরার তৎপরতা শুরু হত। কিন্তু এ বছর যেন অন্য সুর। মমতা মঞ্চে ওঠার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই কার্যত হালকা হতে শুরু করেছিল সভার ভিড়। দুপুর ১টার পরে ভিড় এতটাই হালকা হতে থাকে যে, পুলিশ জওহরলাল নেহরু রোডে নিউ মার্কেটের কাছের সিগন্যাল থেকে সভায় আসা বাস বা অন্য গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে শুরু করে। ভিড়ে পথ আটকে থাকার ব্যাপার ছিল না। সেই ভিড়ের মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টাতেই ফিরে যেতে দেখা যায় ভাঙড়ের নেতা আরাবুল ইসলামের ছেলে হাকিমুলকে। তিনি বলেও দেন, ‘‘অনেক হয়েছে, এত গরমে ভাল লাগছে না!’’ মাঝে দু’বার বৃষ্টি আসার সময়ে কার্যত ফাঁকা হয়ে যায় সভাস্থলের মুখ থেকে কিছুটা দূরের ধর্মতলা চত্বর। সেই সময়ে মাথা বাঁচাতে ছাউনির নীচে আশ্রয় নেওয়া এক ব্যক্তি বললেন, ‘‘ফিরতে তো হবে নিজের দায়িত্বেই। বেরোনোর সময়ে দেখেছি, রাস্তাঘাট ফাঁকা। তেমন গাড়িও নেই!’’
এই অভিজ্ঞতা অবশ্য অনেকেরই। সভামুখী মিছিলের জেরে এ দিন যে ভুগতে হবে, তা ধরেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, পরিস্থিতি আরও খারাপ। কার্যত যেন বন্ধের চেহারা নিয়েছে শহর। মানিকতলা বাজার চত্বরের সমস্ত দোকান বন্ধ। খোলেনি শিয়ালদহের বৈঠকখানা বাজারের বহু দোকানও। সভাস্থলের কাছে রাজভবন বা চৌরঙ্গি এলাকারও সমস্ত দোকানে তালা ঝুলেছে বিকেল পর্যন্ত। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ বা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডে বাসের দেখা মেলেনি। একই ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছিল অটো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানিকতলায় অপেক্ষায় থেকেও গিরিশ পার্কের দিকে যাওয়ার অটো মেলেনি। একই অবস্থা উল্টোডাঙা থেকে শোভাবাজার যাওয়ার রাস্তাতেও। কবি সুভাষ যাওয়ার অটোও সংখ্যায় ছিল যথেষ্ট কম। সকালের দু’-একটি ‘ট্রিপ’ সেরেই এক অটোচালক বলে দেন, ‘‘আর চালানো যাবে না। এ বার বন্ধই করে দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy