তৈরি: মাঝেরহাট সেতুর কাজ প্রায় শেষের মুখে। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
প্রাথমিক পরীক্ষায় পাশ করল মাঝেরহাট সেতু। এ বার রেলের ছাড়পত্র পেলেই সেতু উদ্বোধনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে রাজ্য সরকার। প্রাথমিক পরীক্ষার রিপোর্ট-সহ রেলকে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠিয়েছে পূর্ত দফতর। রেলের বিশেষজ্ঞরা সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেবেন।
অনেকগুলি জট কাটিয়ে মাঝেরহাট সেতু নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ হয়েছে। প্রথা এবং আন্তর্জাতিক কোড মেনে সেতুর ভার বহন ক্ষমতার যাচাই প্রক্রিয়া শেষ করেছেন পূর্ত দফতরের সেতু-বিশেষজ্ঞরা। এর প্রথম পর্যায়ে আন্তর্জাতিক কোড, নকশা এবং নির্মাণের গাণিতিক সমীকরণ মেনে ফাঁকা সেতুর কেব্লগুলির ‘টিউনিং’ (সঙ্কোচন-প্রসারণের নিরিখে কেব্লগুলি টানটান করার পদ্ধতি) করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে হয়েছে ‘ডেড লোড’ বা সেতুর নিজস্ব ওজন যাচাই। তৃতীয় এবং শেষ ধাপে সেতুর উপরে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি দাঁড় করিয়ে সেটির শক্তি পরীক্ষা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই গাড়িগুলি সেতুর উপরে চালিয়ে কম্পন মেপেছেন বিশেষজ্ঞেরা।
সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, সেতুর ভার বাড়লে অথবা কমলে কেব্লগুলি কতটা সঙ্কুচিত এবং প্রসারিত হচ্ছে, তার নির্দিষ্ট মানদণ্ড রয়েছে। নির্ধারিত সীমার মধ্যে কেব্লগুলির সঙ্কোচন-প্রসারণ হলে ধরে নেওয়া হয়, ভার বহনে সেতু প্রস্তুত। সেই পরীক্ষাতেই পাশ করেছে মাঝেরহাট সেতু। প্রায় সাড়ে ছ’শো মিটার লম্বা এই সেতুর ভার বহন ক্ষমতা ৩৮৫ টন। সেতুর মাঝের যে অংশটি রেল লাইনের উপরে রয়েছে, তার দৈর্ঘ্য ২২৭ মিটার। ওই অংশের ভার রয়েছে ৮৪টি কেব্লের উপরে।
এই পরীক্ষার বিস্তারিত রিপোর্ট গত মঙ্গলবারই পাঠানো হয়েছে পূর্ব রেলের আঞ্চলিক সেফটি কমিশনারের কাছে। তা খতিয়ে দেখে রেলওয়ে সেফটি কমিশনার ছাড়পত্র দিলেই মাঝেরহাট সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা থাকবে না। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, চিঠি দিয়ে রেলকে জানানো হয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে চায় রাজ্য। রেল ছাড়পত্র দিলে উদ্বোধনের দিনক্ষণ জানতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে চূড়ান্ত রিপোর্ট পাঠানো হবে।
এই মুহূর্তে মাঝেরহাট স্টেশনের সামনে জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রোর নির্মাণকাজ চলছে। ফলে সার্ভিস রোড তৈরির জন্য ওই অংশটি এখনও পাওয়া যায়নি। তবে অন্য তিনটি সার্ভিস রোডের কাজ প্রায় শেষ। সেতুর উপরে বসে গিয়েছে আলো। এক পরত রঙের পোঁচও পড়েছে। যদিও সেতুর উপরে যানবাহনের দিক এবং গতিবেগ নির্দেশক বিভিন্ন বোর্ড বসানোর কাজ এখনও বাকি। সেতুর উপরে রং দিয়ে বিভিন্ন লেন চিহ্নিত করার কাজও বাকি আছে। এ দিন সেতুর অগ্রগতি ঘুরে দেখেন পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বকেয়া সব কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy