প্রতীকী ছবি।
বাবা-মা ও স্ত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল এক যুবক। ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে সকলকে জীবন্ত দগ্ধ হতে দেখেছিল সে। তখন অন্য ঘরে দোলনায় ঘুমোচ্ছিল তার তিন মাসের মেয়ে। পাশের বাড়ি থেকে তার খুড়তুতো ভাই আগুন দেখে চিৎকার করে লোকজন জড়ো করেন। অগ্নিদগ্ধ তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও পরে সেখানে তাঁরা মারা যান। ২০১৬ সালে বাগুইআটির তেঘরিয়ার সেই খুনের ঘটনায় শনিবার অমিত নস্কর নামে ওই যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল বারাসত আদালত।
ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর বাগুইআটি থানার তেঘরিয়ার মণ্ডলপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে অশান্তি হওয়ায় দরজা বন্ধ করে তিন জনের গায়েই আগুন ধরিয়ে দেয় অমিত। স্থানীয় মানুষ তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে এবং পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মৃত্যু হয় অমিতের বাবা-মা অরুণ ও পূর্ণিমা নস্কর এবং স্ত্রী মিনা নস্করের।
মৃত্যুর আগে অবশ্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক এবং পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে অমিতের এই কুকীর্তির কথা জানিয়ে গিয়েছিলেন তিন জনই। তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা ওই মামলায় ওই গোপন জবানবন্দি ছাড়াও প্রত্যক্ষদর্শী অমিতের ভাইয়ের সাক্ষ্যও নেয় আদালত। এ দিন ওই মামলায় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের প্রথম নগর দায়রা বিচারক শ্রীময়ী কুণ্ডু যাবজ্জীবনের রায় শোনান। রায় ঘোষণার পরে মামলার সরকারি কৌঁসুলি সন্দীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যাবজ্জীবনের পাশাপাশি আদালত ১৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে অতিরিক্ত দু’বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশও দিয়েছেন।’’
এ দিন সন্দীপবাবু আরও জানান, আদালতের নির্দেশেই অমিতের মেয়ে তার বোনের কাছে রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তিরিশ বছরের অমিত কোনও কাজ করত না। চায়ের দোকান করে কোনওমতে সংসার চালাতেন তার বাবা অরুণবাবু। কিন্তু দিনের শেষে তাঁর থেকে টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়ে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মদ্যপান করত অমিত। টাকা দিতে না চাইলে বাবা-মাকে মারধর করত। স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করে বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিত সে।
পরিবারের তিন জনের একসঙ্গে পুড়ে মৃত্যুর পরে অমিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বয়ানে অসঙ্গতি পায় পুলিশ। মিনার পরিবারের তরফেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তকারী অফিসার তমালতরু সরকারের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে অমিত জানিয়েছিল, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হওয়ায় অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন ওই তিন জন। কিন্তু ফরেন্সিক পরীক্ষায় দেখা যায়, গ্যাস সিলিন্ডারের কিছু হয়নি। ঘরে যে পেট্রল ঢালা হয়েছিল, তার নমুনাও পাওয়া যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy