ফাইল চিত্র।
চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে!
অঘটন ঘটে যাওয়ার পরে তবে ব্যবস্থা নেওয়ার সেই ধারা সমানে চলছে। গত শুক্রবার ভরদুপুরে পার্ক সার্কাসে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে কিয়স্কের ডিউটি ছেড়ে বেরিয়ে এসে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকেন কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবল। গুলিতে এক তরুণীর মৃত্যুর পরে ওই পুলিশকর্মীও আত্মঘাতী হন। ঘটনার পরেই তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক ছিল কি না, সেই প্রশ্ন ওঠে নানা মহলে। তিনি ছুটি থেকে ফিরে কাজে যোগ দেওয়ার আগে বা তাঁর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেওয়ার আগে মানসিক অবস্থার কোনও রকম পরীক্ষা কেন করা হয়নি, সেই প্রশ্নও ওঠে। বিষয়টি নিয়ে কার্যত শোরগোল পড়ে যায় বাহিনীতে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পরে কলকাতা পুলিশের সব সদস্যের মানসিক অবস্থা জানতে উদ্যোগী হল লালবাজার। কোনও পুলিশকর্মী বা অফিসার মানসিক অবসাদ বা উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন কি না, তা বাহিনীর সব ইউনিট হেডদের কাছে জানতে চেয়েছে লালবাজার। আগামী ২০ জুনের মধ্যে বাহিনীর সদস্যদের মানসিক অবস্থা কেমন, তা লালবাজারকে জানাতে হবে। পুলিশের একাংশের অনুমান, ওই তালিকা তৈরি হলে প্রয়োজনে মনোবিদের সাহায্য নিতে পারে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, পার্ক সার্কাসের ওই ঘটনায় মৃত কনস্টেবল ছোডুপ লেপচা মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলেন না বলে পুলিশকর্তারাও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। সূত্রের দাবি, এর পরেই পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল বাহিনীর নিচুতলা থেকে সর্বস্তরের কর্মী-অফিসারদের মানসিক অবস্থার খোঁজ নিতে বলেন।
লালবাজার জানিয়েছে, মঙ্গলবার যুগ্ম কমিশনার (সদর)-এর তরফে ওই নির্দেশ কলকাতা পুলিশের সব থানা, পুলিশ ট্রেনিং স্কুল, ব্যাটালিয়ন, গোয়েন্দা বিভাগ-সহ সব ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। বাদ যাননি হেডকোয়ার্টার্স ফোর্সের কর্মী-অফিসারেরাও। এক পুলিশকর্তা জানান, থানার ওসি বা ইউনিট হেডদের বলা হয়েছে, সব পুলিশকর্মীর সঙ্গে কথা বলতে হবে। কারও মানসিক অবস্থা ঠিক না থাকলে বা কেউ অবসাদে ভুগলে তার কারণ জানতে হবে। তালিকায় সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীর নামের পাশে সেই কারণ লিখে রাখতে হবে, যাতে তাঁকে দ্রুত সুস্থ করা যায়।
বছর বারো আগে পুলিশকর্মীদের চাপ কমানোর জন্য একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছিল লালবাজার। বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার সাহায্যও নেওয়া হয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, ফের একই পথে হাঁটবে লালবাজার। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু থানার ওসি তাঁদের অধীনে থাকা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে মানসিক অবস্থা জানতে চেয়েছেন।
শুক্রবারের ওই ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে, ওই কনস্টেবল নিজের রাইফেল থেকে ছ’রাউন্ড গুলি চালিয়েছিলেন। যার মধ্যে পাঁচ রাউন্ড খালি কার্তুজের খোল উদ্ধার করেছিলেন তদন্তকারীরা। এ ছাড়া, ঘটনাস্থল থেকে ৩৪ রাউন্ড অব্যবহৃত কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি তাঁকে ডিউটির জন্য দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ গুলি চালানোর পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা খুঁজে পায়নি। এক পুলিশকর্তা শুধু জানান, গুলিতে হত রিমা সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না অভিযুক্তের।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy