লালবাজার। —ফাইল চিত্র
ই এম বাইপাসের ধারে একটি পানাশালায় তল্লাশি করতে গিয়েছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। অভিযোগ ওঠে পানশালার ভিতরে দুর্ব্যবহার করেছেন তাঁরা। যা নিয়ে আইনি জটিলতাও তৈরি হয়েছিল। কয়েক বছর আগের ওই ঘটনায় গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ পৌঁছেছিল আদালতেও।
লালবাজার সূত্রের খবর, তল্লাশির সময়ে গোয়েন্দা বা পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে বেআইনি কাজের অভিযোগ ওঠা ঠেকাতে তা ভিডিয়ো রেকর্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর সেই কারণে তল্লাশিতে থাকা গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীদের দেওয়া হচ্ছে ‘বডি ক্যামেরা’। যা তল্লাশি কিংবা অভিযানে অংশে নেওয়া দলের পুলিশকর্মীদের দেহে লাগানো থাকবে। তাতে তল্লাশির শুরু থেকেই পুরো ঘটনা রেকর্ড করে রাখা হবে।
বর্তমানে ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা ওই বডি ক্যামেরা ব্যবহার করছেন যে কোনও ট্র্যাফিক সংক্রান্ত মামলা কিংবা রাস্তায় ঘটা গোলমালের সময়ে। দেহে লাগানো ওই ক্যামেরা ট্র্যাফিক সার্জেন্ট থেকে শুরু করে কনস্টেবল— সকলকেই কাজের সময়ে ব্যবহার করতে হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের ওই ক্যামেরা ব্যবহারের ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের হার অনেকটাই কমেছে।
লালবাজারের বিভিন্ন বিভাগের বিরুদ্ধেই তল্লাশির সময়ে দুর্ব্যবহারের পাশাপাশি অভিযুক্তের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে। ক্যামেরা ব্যবহারের ফলে ওই ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ কমবে বলেই অনুমান পুলিশকর্তাদের।
সূত্রের দাবি, আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে ওই ক্যামেরার ব্যবহার শুরু হচ্ছে। ১০০টি বডি ক্যামেরা দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগকে। তল্লাশির সঙ্গে যুক্ত দলের কিছু সদস্যকে আপাতত ওই ক্যামেরা পরতে বলা হয়েছে। পরে সেই সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে বলে লালবাজারের এক গোয়েন্দা কর্তা জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, প্রতিটি ক্যামেরায় কম করে রয়েছে ৩২ জিবি মেমোরি কার্ড। ক্যামেরাগুলিতে কোনও হার্ড ডিস্ক নেই। ওই ক্যামেরায় প্রায় ৮ ঘণ্টা অডিয়ো-ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা যাবে। ক্যামেরায় খুব সহজেই চল্লিশ ফুট দূরত্বের ছবি রেকর্ড করা যাবে। ফলে কোনও অভিযুক্তের বাড়ি কিংবা অন্য কোথাও তল্লাশি করার সময়কার সব কথোপকথন এবং কার্যকলাপ সবই রেকর্ডিং হয়ে যাবে ওই ক্যামেরায়। গোয়েন্দাদের তল্লাশি নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে ওই ক্যামেরায় রেকর্ড হওয়া পুরো ভিডিয়ো লালবাজারের কর্তারা দেখতে পারবেন।
গোয়েন্দারা বিভিন্ন জায়গায় গোপনে তল্লাশি করেন। দেহে ক্যামেরা লাগানো থাকলে তা দেখে অভিযুক্তেরা সতর্ক হয়ে যেতে পারে। তা হলে কী ভাবে ওই ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে? পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, তল্লাশি শুরু করার মুহূর্তে দলের এক জনকে ওই ক্যামেরা লাগিয়ে নিতে হবে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে ক্যামেরা ব্যবহারের উপরে শিথিলতা থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy