Advertisement
৩১ অক্টোবর ২০২৪
Kolkata Police

ব্যারাকে ঘর-বণ্টনকে কেন্দ্র করে গোলমাল, কলকাতা পুলিশের ওসির বিরুদ্ধে ধর্না মহিলা সাব ইনস্পেক্টরের

মহিলা পুলিশকর্মীর অভিযোগ, সম্প্রতি তিনি ছুটিতে গিয়েছিলেন। সেই সময়েই ব্যারাকে তাঁর ঘর ‘দখল’ হয়ে যায়। ছুটি কাটিয়ে ব্যারাকে ফিরে দেখেন তাঁর ঘরে আরও কয়েকটি শয্যা রাখা আছে।

নাদিয়াল থানার ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকালে ধর্নায় মহিলা সাব ইনস্পেক্টর সোমা তরফদার।

নাদিয়াল থানার ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকালে ধর্নায় মহিলা সাব ইনস্পেক্টর সোমা তরফদার। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বারুইপুর শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৪৪
Share: Save:

কলকাতা পুলিশের বন্দর এলাকার নাদিয়াল থানার ওসির বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকালে ধর্নায় বসেছিলেন ওই থানারই কর্তব্যরত এক মহিলা সাব ইনস্পেক্টর। পুলিশ ব্যারাকে ঘর-বণ্টনকে কেন্দ্র করে ওসির সঙ্গে ‘মতানৈক্য’ তৈরি হয়েছিল সোমা তরফদার নামে ওই সাব ইনস্পেক্টরের। সোমার অভিযোগ, সম্প্রতি ছুটিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়েই ব্যারাকে তাঁর ঘর ‘দখল’ হয়ে যায়। ছুটি কাটিয়ে ব্যারাকে ফিরে তিনি দেখেন তাঁর ঘরে আরও কয়েকটি শয্যা রাখা আছে। ওসির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডাও হয় তাঁর। পুলিশ সূত্রে খবর, নির্দেশ অমান্য করার কারণে সোমাকে ‘ক্লোজ়’ও করা হয়েছে ইতিমধ্যে। এর পরেই বৃহস্পতিবার সকালে নাদিয়াল থানা এলাকায় একটি কাঠগোলার কাছে রাস্তার উপরেই ধর্নায় বসে পড়েন ওই সাব ইনস্পেক্টর। পরে পুলিশের একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্ষোভরত ওই পুলিশকর্মীকে।

থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাকে ঘর-বণ্টনকে কেন্দ্র করে বুধবারই ওসির সঙ্গে একপ্রস্ত তর্কাতর্কি হয় সোমার। এ নিয়ে ওসি একটি রিপোর্টও পাঠান কলকাতা পুলিশের ডিসি (বন্দর)-এর কাছে। এর পরেও ওসির কোনও কথা শুনতে চাইছিলেন না মহিলা সাব ইনস্পেক্টর সোমা। শেষে নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে বুধবারই তাঁকে ‘ক্লোজ়’ করা হয়।

সোমা এত দিন ব্যারাকে একাই থাকতেন। কিন্তু সম্প্রতি থানায় নতুন কয়েক জন মহিলা পুলিশকর্মী কাজে যোগ দেন। তাঁদের জন্যও ব্যারাকে শয্যা বরাদ্দ করার প্রয়োজন হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই কারণে ওই মহিলা সাব ইনস্পেক্টরের ঘরে নতুন মহিলা পুলিশকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। কিন্তু তাতে আপত্তি জানান সোমা। কেন তাঁর থাকার ঘরে অন্য শয্যা রাখা হয়েছে, তা নিয়ে ওসির সঙ্গে ‘মতানৈক্য’ শুরু হয় তাঁর।

যদিও লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাকের ঘরগুলিতে এক জন করেই পুলিশকর্মী থাকবেন এমন কোনও নিয়ম নেই। একটি ঘরে একাধিক পুলিশকর্মীর থাকার ব্যবস্থা করা হতে পারে। স্থানীয় স্তরে পুলিশকর্মীর সংখ্যার ভিত্তিতে তা স্থির করা হয়। তাতে কখনও একটি ঘরে কেউ একা থাকতে পারেন। আবার প্রয়োজন অনুসারে একাধিক জনের জন্যও বরাদ্দ হতে পারে একটি ঘর।

নাদিয়াল থানার ক্ষেত্রেও ঘটনাটি সে রকমই বলে মনে করছে পুলিশের একাংশ। থানা সূত্রে খবর, এত দিন মহিলা পুলিশকর্মীর সংখ্যা তুলনায় কম থাকায় একটি ঘরে একাই থাকছিলেন সোমা। কিন্তু এখন আরও কয়েক জন মহিলা কনস্টেবল থানায় যোগ কাজে দিয়েছেন। নতুনদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ওই মহিলা সাব ইনস্পেক্টরের ঘরেই।

এই নিয়ে পুলিশের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে লালবাজার সূত্রে খবর, বুধবারই ওই মহিলা সাব ইনস্পেক্টরকে ‘ক্লোজ়’ করা হয়েছে। গোলমালের কারণ হিসাবে লালবাজারের ওই সূত্র জানিয়েছে, নাদিয়াল থানায় নতুন মহিলা পুলিশকর্মীর পোস্টিং হয়েছে। সেই কারণে ব্যারাকে জায়গার দরকার ছিল। পুলিশের অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, নাদিয়ালের ঘটনাটি একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। ঘটনাটির বিভাগীয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

যদিও মহিলা সাব ইনস্পেক্টরের দাবি, বুধবার ডিউটিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ব্যারাকে গিয়েছিলেন উর্দি পরার জন্য। তখন ব্যারাকের ওই নির্দিষ্ট ঘরে আরও অন্য কয়েকটি শয্যা রাখা ছিল। সেখানে তিনি নিজের উর্দি খুঁজে পাননি বলে দাবি মহিলার। ওই ঘরে তাঁর বেশ কিছু জরুরি কাগজপত্রও ছিল বলে জানিয়েছেন সাব ইনস্পেক্টর। তাঁর অনুপস্থিতিতে কেন অন্য মহিলা কনস্টেবলদের জন্য ওই ঘরে শয্যা বরাদ্দ করা হল, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিক্ষুব্ধ তিনি। মহিলার দাবি, বিষয়টি নিয়ে তিনি ইতিমধ্যে লালবাজারে পুলিশের সদর দফতরে ইমেল পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে, কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে, ডিসি (বন্দর), ডিসি (মহিলা পুলিশ)-কেও তিনি ইমেল পাঠিয়েছেন বলে দাবি মহিলা সাব ইনস্পেক্টরের।

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Nadial
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE