Advertisement
E-Paper

Kumartuli: গঙ্গা-পথে মাটি বহনে নিষেধাজ্ঞায় বিপাকে কুমোরটুলি

পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি নবান্ন থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। যার নেপথ্যে রয়েছে মাস তিনেক আগের একটি ঘটনা।

ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৫৬
Share
Save

তিরিশ টন এঁটেল মাটি নিয়ে কুমোরটুলি ঘাটে আসছিল নৌকাটি। উলুবেড়িয়া থেকে আসা মাটি বোঝাই সেই নৌকা, সম্প্রতি বাবুঘাটে আটকে দেয় রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ। কেন? পুলিশ জানাচ্ছে, কোনও ভাবেই কলকাতা সংলগ্ন গঙ্গা দিয়ে মাটি বা বালি আর বহন করা যাবে না। যা শুনে মাথায় বাজ পড়েছে কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী ও মাটি বিক্রেতাদের। শিল্পীদের বক্তব্য, বরাবর উলুবেড়িয়া থেকে জলপথেই কুমোরটুলি ঘাটে মাটি আসে। যা তাঁরা মূর্তি তৈরিতে ব্যবহার করে থাকেন।

পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি নবান্ন থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। যার নেপথ্যে রয়েছে মাস তিনেক আগের একটি ঘটনা। কাশীপুরের কাছে গঙ্গা থেকে বালি তোলার বিষয়টি সে বার নজরে এসেছিল উত্তর বন্দর থানার। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই খাস কলকাতায় মাঝগঙ্গা থেকে বালি তোলা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তা রুখতে কঠোর হয় রাজ্য প্রশাসন। তারই প্রেক্ষিতে নির্দেশিকা জারি করে কলকাতা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশকে নবান্ন জানায়, কলকাতা সংলগ্ন গঙ্গার উপর দিয়ে কোনও ভাবেই নৌকা করে মাটি, বালি বহন করা যাবে না।

ওই আটক নৌকার মাঝি, উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা সীমন্ত নস্কর বলেন, ‘‘দিনভর আটকে থাকার পরে ওই মাটি নিয়ে পরের দিন সকালে উলুবেড়িয়া পৌঁছই।’’ বছরভর নৌকা করে মাটি এনে কুমোরটুলির শিল্পীদের বিক্রি করেন সীমন্ত, উৎপল মণ্ডল ও চাঁদু মণ্ডলেরা। উৎপল বলেন, ‘‘নৌকা করে মাটি বিক্রি করেই আমাদের পেট চলে। জানি না এ বার কী ভাবে, কী হবে!’’ আর সীমন্তের আফশোস, পুলিশ আটকে দেওয়ায় তিরিশ টন মাটি বিক্রি করে দশ হাজার টাকা পেলেন না। উপরন্তু ডিজ়েলের দামও দিতে হল। সীমন্ত জানাচ্ছেন, মাটি নিয়ে উলুবেড়িয়া থেকে ডিজ়েলচালিত ভুটভুটিতে করে কুমোরটুলির ঘাটে পৌঁছতে পাঁচ ঘণ্টা লাগে। সেই তেলের খরচ পকেট থেকে দিতে হয়েছে। তাঁর সঙ্গী আরও ছ’জন মাটি তোলার কাজে যুক্ত ছিলেন, এ বার তাঁদের কী হবে? প্রশ্ন তুলেছেন সীমন্ত।

এ দিকে, সামনেই অন্নপূর্ণা পুজো। প্রতিমা তৈরির কাজ কী ভাবে হবে, ভাবতে পারছেন না কুমোরটুলির শিল্পীরাও। ‘কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃতি সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক বাবু পালের কথাতেও ধরা পড়ল অনিশ্চয়তা। তিনি বলেন, ‘‘উলুবেড়িয়া থেকে আসা মাটি দিয়েই প্রতিমা তৈরির চূড়ান্ত পর্বের কাজটা হয়। ওই মাটি না হলে প্রতিমা তৈরিই হবে না। প্রতিমার নাক, আঙুল গড়তে উলুবেড়িয়ার মাটিই জরুরি।’’

কুমোরটুলির শিল্পীদের প্রশ্ন, ‘‘কাশীপুরের গঙ্গা থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার কোপটা তাঁদের ঘাড়ে কেন এসে পড়বে?’’ প্রশাসনের কাছে মৃৎশিল্পীদের আর্জি, তাঁদের পেশা এবং মৃৎশিল্পের স্বার্থে নৌকাপথে উলুবেড়িয়া থেকে মাটি আনার অনুমতি দেওয়া হোক।
একই আবেদন শিল্পী মিন্টু পালের। তিনি বলেন, ‘‘কুমোরটুলির শিল্পীদের কখনও মাটির সমস্যা হয় না। পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ, মৃৎশিল্পীদের গঙ্গাপথে মাটি আনার অনুমতি দেওয়া হোক।’’

সমস্যার সমাধানে সম্প্রতি রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের একপ্রস্ত বৈঠক হয়েছে। কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘নবান্নের নির্দেশ মেনে নৌকায় বালি, মাটি পরিবহণ বন্ধ আছে। মৃৎশিল্পীদের সমস্যার কথা নবান্নের শীর্ষ মহলে জানানো হয়েছে।’’

Kumartuli ganga soil

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}