সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে (বিজিবিএস) কলকাতার গণপরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নে পরিবহণ দফতরের তরফে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের ঘোষণা করা হয়েছে। এই সম্মেলনে একাধিক সংস্থার সঙ্গে বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, অভিজ্ঞদের মত, এই উদ্যোগ শহরের পরিবহণ ব্যবস্থাকে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব করে তুলতে সাহায্য করবে। বেসরকারি অ্যাপ ক্যাপ পরিষেবা বৃদ্ধির সঙ্গে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী হলুদ ট্যাক্সির চাকা সচল রাখাও সম্ভব হবে।
পরিবহণসচিব সৌমিত্র মোহনের উপস্থিতিতে স্বাক্ষরিত মউ অনুযায়ী, বাইগো, হেরিটেজ ক্যাব এবং র্যাপিডো শহরের পরিবহণ পরিষেবায় বিনিয়োগ করবে। বাইগো ইলেক্ট্রিক আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে ৩৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে অ্যাপ নির্ভর ইলেক্ট্রিক বাইক পরিষেবায়। বিনিয়োগের মোট পরিমাণ ৬২৫ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:
এ ছাড়াও কলকাতার ঐতিহ্যবাহী হলুদ ট্যাক্সির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হেরিটেজ ক্যাব ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। সংস্থাটি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে অন্তত ২০০টি পরিবেশবান্ধব সিএনজি হলুদ ট্যাক্সি রাস্তায় নামাবে। অন্য দিকে, র্যাপিডো ২০২৮ সালের মধ্যে ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগের ফলে শহরে বাইক ট্যাক্সি পরিষেবা আরও শক্তিশালী হবে এবং দ্রুত যাতায়াতের সুবিধা বাড়বে বলে দাবি। কলকাতার যানজট ও যাতায়াত সংক্রান্ত সমস্যা মেটাতে এই উদ্যোগ অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়াও, পরিবহণ খাত ছাড়িয়ে জলপথ পরিবহণেও বড়সড় বিনিয়োগের ঘোষণা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে অন্তরা ক্রুজ় ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। সংস্থাটি গার্ডেনরিচ শিপ ইয়ার্ডে দেশীয় প্রযুক্তিতে জাহাজ নির্মাণ করবে। এর ফলে স্থানীয় ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং রাজ্যের সামুদ্রিক পরিবহণ ব্যবস্থাও আরও উন্নত হবে।
এই বিনিয়োগগুলির ফলে কলকাতার গণপরিবহণ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন ঘটবে এবং শহরের মানুষ আরও আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব পরিবহণ ব্যবস্থার সুবিধা পাবে বলে মনে করছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে এই উন্নয়ন পরিকল্পনা শহরের পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও কার্যকরী করে তুলবে, যা ভবিষ্যতে কলকাতাকে এক নতুন দিশা দেখাবে বলে মত বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের।