এক-একজনের জন্য এক-একটা যন্ত্রর সৃষ্টি হয়। যেমন সরোদ আলি আকবরের জন্য, সানাই বিসমিল্লা খান, গীটার ব্রিজভূষণ কাব্রা-র, এস্রাজ তেমন রণধীরের জন্যই জন্মেছিল। অকালে সে চলে না-গেলে সারা দেশ আমার মতের পক্ষে সায় দিত।’’ বলেছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ কুমারপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। অপূর্ণ ছেচল্লিশে চলে গিয়েছিলেন বিশ্বভারতী সঙ্গীতভবনের অধ্যাপক রণধীর রায় (১৯৪৩-৮৯), কিন্তু তাঁর এই হ্রস্ব জীবনে পূর্ণ একক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে গেলেন এসরাজকে। এসরাজবাদককে সহায়ক সঙ্গতকার থেকে একক সঙ্গীতশিল্পীর মান্যতা দিয়েছিলেন বিষ্ণুপুর ঘরানার বিশিষ্ট শিল্পী অশেষচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, আর যন্ত্রটির সীমাবদ্ধতা ও অমিত সম্ভাবনা আবিষ্কার করেছিলেন অশেষচন্দ্রের সুযোগ্য শিষ্য রণধীর। তাঁর হাত ধরেই এসরাজ উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের অধিবেশনে অনুষঙ্গ-যন্ত্রের পরম্পরা থেকে সেতার সরোদ সুরবাহারের পাশে একক যন্ত্রের মর্যাদা পেল। ধ্রুপদী হিন্দুস্থানি সঙ্গীতের গৎকারি আর গায়ন অঙ্গের সমীকৃত ব্যঞ্জনা ও বাজের বিস্তার ঘটাতে যন্ত্রের আমূল সংস্কার করেছিলেন তিনি। বর্তমানে যাঁরা দেশেবিদেশে এসরাজ যন্ত্রে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত পরিবেশন করেন, তাঁরা সকলেই রণধীরের পরিকল্পিত যন্ত্রটি ব্যবহার করেন।
অবনীন্দ্রনাথের শিষ্য প্রশান্ত রায় ও নন্দলাল বসুর ছাত্রী গীতা রায়, এই শিল্পীদম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান রণধীর দশ থেকে তেইশ বছর বয়েস পর্যন্ত সনাতন গুরুমুখী পদ্ধতিতে তালিম নেন অশেষচন্দ্রের তত্ত্বাবধানে। পরে জাতীয় বৃত্তিতে তাঁর প্রশিক্ষক ছিলেন পণ্ডিত বিষ্ণুগোবিন্দ যোগ ও পণ্ডিত ধ্রুবতারা জোপশি। ১৯৭৫ থেকে সঙ্গীতভবনে অধ্যাপনায় যোগ দেন রণধীর। তিনি দেশে-বিদেশে তাঁর উদ্ভাবিত এসরাজে উচ্চাঙ্গসঙ্গীত পরিবেশন করে শ্রদ্ধা অর্জন করেন। শ্রোতারা তাঁর কাছে পেয়েছেন একাধিক রাগরূপের মিশ্রণে তিলক-কল্যাণ, সিন্ধু-গান্ধার, ভূপ-ভাটিয়ার, মাজ-ইমন, মধু-পলাশের মতো নতুন সৃষ্টি। ২৪ মার্চ ১৯৮৯ কলকাতার সুজাতা সদনে সঙ্গীত উৎসবে সুরের নিবেদনে উজাড় করে দেন নিজেকে, আর সেই রাত্রেই সুরশিল্পী পাড়ি দিলেন অজানা ঠিকানায়। তাঁর ৭৫তম জন্মবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে জীবনস্মৃতি ডিজিটাল আর্কাইভ প্রযোজিত, হিন্দমোটর ফোকাস নিবেদিত অরিন্দম সাহা সরদারের ৬৫ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘এস্রাজের রণধীর’ ৪ জুলাই শিল্পীর জন্মদিনে প্রদর্শিত হল শান্তিনিকেতনে। এ বার ১২ জুলাই বিকেল ৫টায় কলকাতার নজরুলতীর্থ, নিউটাউনে এবং ২০ জুলাই বিকেল ৫টায় চিত্রবাণীতে সেটি দেখানো হবে।
ভাস্কর প্রয়াত
শৈশব থেকেই মাটি দিয়ে মূর্তি গড়া শুরু। সারদাচরণ এরিয়ান ইনস্টিটিউশনে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে স্কুলের পুজোয় সরস্বতী প্রতিমা গড়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন। শিল্পী বিপিন গোস্বামীর জন্ম ১৯৩৪-এ, উত্তর কলকাতার এক বনেদি পরিবারে। ভাস্কর সুনীল পালের স্টুডিয়োতে প্রায়ই যেতেন কাজ দেখতে, তিনিই সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। সেখানে ভাস্কর প্রদোষ দাশগুপ্তের সান্নিধ্য পান। সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়ে যুগোস্লাভ সরকারের বৃত্তি নিয়ে জ়াগ্রেব শহরে ভাস্কর্য শিক্ষা, ব্রোঞ্জ ঢালাইয়েরও পাঠ নেন। পরে রামকিঙ্করের ভাস্কর্য ব্রোঞ্জ ঢালাই করেছেন। ১৯৬২তে দেশে ফিরে প্রথমে ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজে, পরে শান্তিনিকেতনে কলাভবনে শিক্ষকতা করেন। বিশেষ করে ‘বাবু’ সিরিজ়ের ভাস্কর্যমালা তাঁকে খ্যাতি এনে দিয়েছিল। শিরোমণি, অবনীন্দ্র পুরস্কার-সহ নানা সম্মান পেয়েছেন। চলে গেলেন ২৫ জুন।
ভাষা-ভাবুক
ভাষার প্রতি তাঁর ছিল গভীর অভিনিবেশ। ছোট ছোট প্রশ্ন তাঁকে ভাবাত। রসিক এক অনুজ সহকর্মী মন্তব্য করেছিলেন ‘কনকনে’ আর ‘গনগনে’ এই ধ্বন্যাত্মক শব্দ দুটির মধ্যে পার্থক্য তো কেবল ঘোষ আর অঘোষের, অথচ একটি বসে শীতলতা বোঝাতে অন্যটি বসে আগুনের সামনে। এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে লিখেছিলেন বাংলা ধ্বন্যাত্মক শব্দ। সম্পাদনা করেন ভাষাচিন্তক রবীন্দ্রনাথ। বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগে অবাঙালি ও অভারতীয়দের যত্ন করে বাংলা শেখাতেন। তাঁর লার্নিং বেঙ্গলি অন আ ফোনেটিক বেসিস বইটি দেশবিদেশে বহু-প্রশংসিত। শিক্ষক হিসেবে বিশ্বাস করতেন দায়বদ্ধতায়। চলে গেলেন বিশ্বভারতীর সেই ভাষা-ভাবুক অলিভা দাক্ষী (১৯৫১-২০১৯)।
বঙ্গসংস্কৃতি
এ পার এবং ও পার— দুই বাংলার যাপন মিলে যায় অন্তঃসলিলা কোনও প্রবাহে। শিকড়ের সন্ধান লগ্ন হয়ে থাকে অন্তরে-অন্দরে। দুই বাংলার শিল্পী ও অন্যান্য বিশিষ্ট জনের মেলামেশা আর মতবিনিময় এই সম্পর্ককে দৃঢ়মূল করে, বিশ্ব জুড়ে প্রসারিত করে বাঙালির সাংস্কৃতিক মানচিত্র। এরই সঙ্গে প্রবাসে বাঙালিকে মাতৃভাষা শেখাতে তৈরি হচ্ছে বাংলা উচ্চারণ ও ভাষা শিক্ষার সহজপাঠ। উদ্দেশ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে বাঙালিরা বাংলা সংস্কৃতি চর্চা অব্যাহত রেখেছেন তাঁদের সকলকে একই মঞ্চে উপস্থিত করা, আলোচনা করা কী ভাবে বাংলা ভাষার হৃতগৌরব ফেরানো যায়, বাংলা ও বাঙালির ভবিষ্যতের রূপরেখা কী হবে। এই বৃহত্তর পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই ১৩ জুলাই আইসিসিআর-এ ভারত-বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত হয়েছে অনুষ্ঠান।
মঞ্চে মৃগয়া
মঞ্চে সময় পিছিয়ে গিয়েছে একশো বছর। ব্রিটিশ রাজত্বে এক আদিবাসী গ্রাম। সাদামাটা জীবনধারা। কিন্তু শান্তি কই? বন্যজন্তুর তাণ্ডবে সন্ত্রস্ত অবস্থা। এর সঙ্গে লড়াই করতে তৈরি তুখড় শিকারি ঘিনুয়া। যাঁর সঙ্গে ডুংরির প্রেম-পরিণয়। ইংরেজ শাসকের সঙ্গে গ্রামের মানুষের বন্ধুত্ব, সুদখোর মহাজনের অত্যাচার আর তাকে খুনের দায়ে ঘিনুয়ার প্রাণদণ্ড। ১৯৭৬ সালে ভগবতীচরণ পাণিগ্রাহীর এই গল্পকে রুপোলি পর্দায় তুলে ধরেছিলেন মৃণাল সেন। তৈরি হয় ‘মৃগয়া’। সেই প্রথম পর্দায় দেখা মেলে মিঠুন চক্রবর্তী, মমতাশঙ্করের। একেই সম্প্রতি মঞ্চে উপস্থাপন করল হাওড়ার শিবপুরের ‘মরীচিকা’ নাট্যগোষ্ঠী। নাটকের আঙ্গিকে অন্য স্বাদ আনতে মিশিয়ে দেওয়া হল ‘সিনেম্যাটিক’ আদল। কিছু দিন আগেই চলে গেলেন ‘মৃগয়া’র স্রষ্টা। এই নাটক তা-ই মৃণাল সেনের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য।
জ্ঞানতৃষ্ণা
বিলেতের বহু আমন্ত্রণেও দেশের মাটি ছাড়েননি। বলতেন, ‘আমি হোম বেক্ড স্কলার’। তিনি সুকুমার সেন (১৯০০-৯২)। এই নামটির সঙ্গেই ‘হিস্ট্রি অব ব্রজবুলি লিটারেচার’, ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস’, ‘ভাষার ইতিবৃত্ত’-সহ নানা মহাগ্রন্থের নাম জড়িয়ে আছে। খণ্ডে খণ্ডে তাঁর প্রবন্ধসংগ্রহ প্রকাশ করছে আনন্দ পাবলিশার্স। প্রবল মেধা আর প্রবলতর জ্ঞান-তৃষ্ণাকে সঙ্গী করে ভারত-সংস্কৃতির খোঁজ করেছেন সুকুমার। সেই খোঁজেই যাতায়াত ভাষাতত্ত্ব, সাহিত্য, ইতিহাস-সহ বিদ্যাচর্চার নানা রাজপথে। এই গবেষক সুকুমারের পাশাপাশি মানুষ ও শিক্ষক সুকুমারের অবদান কোথায়, তারই সন্ধানে ৯ ও ১০ জুলাই জাতীয় আলোচনাসভা এশিয়াটিক সোসাইটিতে। দু’দিনই বেলা ১১টায় বিদ্যাসাগর হলে ‘রিভিজ়িটিং দ্য কন্ট্রিবিউশন অব প্রফেসর সুকুমার সেন’, শীর্ষক সভাটি শুরু হবে। বলবেন পবিত্র সরকার, বি এন পট্টনায়ক, রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্ট জন।
আপসহীন
আজ তাঁর মৃত্যুদিন, বেঁচে থাকলে একশো বছর বয়স হত তাঁর। জীবদ্দশায় বার বার জানিয়েছিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়, পথই একমাত্র পথ। বিশ্বাসে যখনই আঘাত লেগেছে তখনই সরে এসেছেন, সে সময়ের শাসকদলের বিরুদ্ধে গিয়ে রবীন্দ্রসরোবর বাঁচাও কমিটির আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। এর আগে থেকেই বরফসদৃশ অবহেলা পেতে শুরু করেছিলেন, কিন্তু তাতেও তাঁকে টলানো যায়নি। ষোলো বছর আগে বিদায়বেলার দুপুরে হাতে-গোনা জনা তিনেক তরুণ কবি বাদে আর কেউ ছিলেন না, কেননা ওই শাসকের চোখরাঙানি। প্রবল শ্লেষের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘বাবু হয়ে বসে গদিতে/ ভুলে গেছে ভুঁয়ে পা দিতে/ দেশের লোকের ছাড়ছে নাড়ি/ বাড়ছে দলের গাড়ি বাড়ি/ মন্ত্রীমশাই করেন কী/ পরের ধনে পোদ্দারি’’। রোগশয্যায় সামনে মৃত্যুকে অনুভব করে ‘বজ্রকণ্ঠে তোলো আওয়াজ’-এর মতোই লিখেছিলেন: ‘‘ছোটলোকের কী আস্পর্ধা/ গুলিবন্দুক না এনে গ্রাহ্যে/ ছড়িয়ে দিয়ে গলার পর্দা/ বলছে কি না/ সরুন’’। এই আপসহীনতা তাঁকেই মানায়।
বই নিয়ে
এ এক অন্য ধরনের পুস্তক পরিচয়। বইয়ের পনেরোটি অধ্যায় নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশের দিনেই আলোচনা। ইসলামিক ইতিহাস, সংগ্রহশালা বিজ্ঞান ও প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস এই তিন বিভাগের স্নাতকোত্তর কৃতী ছাত্রী, মোগল চরিতনামা ও বৌদ্ধ দেবদেবী বইটির লেখিকা সিপ্রা চক্রবর্তীকে স্মরণ করে। ভারতীয় সংগ্রহালয়ের চারু ও কারুকলা বিভাগের প্রাক্তন কিপার ছিলেন তিনি। আলোচক যোগেন চৌধুরী, বিভাস চক্রবর্তী, দিলীপ চক্রবর্তী, অনিট ঘোষ, পল্লব সেনগুপ্ত। কলারসিক আকবর, মুঘল রাজকুমারী গুলবদন, পাল যুগের নারী জাগরণে সিদ্ধাচার্যদের ভূমিকা, তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মে সে কালের বাঙালিদের অবদান, দক্ষিণী চিত্রকলায় রাগরাগিণী ইত্যাদি নিয়েই বইটি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলিপুর ক্যাম্পাসের দোতলায় ইসলামিক ইতিহাসের আলোচনা কক্ষে ১০ জুলাই দুপুর সাড়ে তিনটেয় বইটির লোকার্পণ করবেন শঙ্খ ঘোষ।
তেরোর গেরো
আমাদের জীবনে নানা কুসংস্কার আছে, আমরা তার বাইরে বেরোতে পারি না বা ভয় পাই। কিন্তু আসলে তো জীবন এবং সম্পর্ক চলে তার গতিতে। সেখানে কোনও বিশেষ দিন কখনও গেরো হতে পারে না। সমাজের ক্ষেত্রেও তাই, আমরা যদি পরস্পরকে মেনে নিতে পারি তা হলে যুদ্ধ থেমে শান্তি আসবে। আদর্শগত মতপার্থক্য থাকতেই পারে কিন্তু হিংসা ছড়িয়ে পড়বে কেন? এই প্রশ্নের উত্তর দিতেই কিছু গান কিছু কবিতায় ১৩ জুলাই, শিশির মঞ্চে, সন্ধে ৭টায় অনুষ্ঠান ‘১৩-র গেরো’। থাকবেন প্রবাল মল্লিক, সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বর্ণাশ্রম
রাজস্থানের সেই গ্রামে একটিই মাত্র পুকুর। উচ্চবর্ণের মানুষ জল নেওয়ার পরে দলিতরা তা থেকে পানীয় জল নিতে পারে, অন্যথায় জোটে শাস্তি। অনেক আগে, এই গ্রামের সবাই মাঠে সাদা চাদর টাঙিয়ে সত্যজিৎ রায়ের ‘সদগতি’ দেখে সিনেমাটিকে অচ্ছুৎ মানুষদের অত্যাচার সহ্য করেও কী ভাবে বাঁচা উচিত, তার উদাহরণ হিসেবে নিয়েছিল। এর পর যত রদবদলই ঘটুক, বদলায় না বর্ণাশ্রমের জাঁতাকল। এর মূলেই আঘাত করতে চেয়ে ‘দক্ষিণ রুচিরঙ্গ’ নাট্যদলের নতুন হিন্দি নাটক ‘‘আরে, ইসনে ‘সদগতি’ নহি দেখি!!’’ লিখেছেন রজতেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। তাঁর কন্যা, সদ্য কুড়ি পেরনো রুচিরা— সেন্ট জেভিয়ার্সে সমাজবিদ্যার ছাত্রী— তাঁরই নির্দেশনায় এ-নাটকে অভিনয় করছেন কমবয়সিরা। প্রথম অভিনয় গিরিশ মঞ্চে ১০ জুলাই সন্ধে ৬.৩০-এ।
শতবর্ষে
শতবর্ষে পা দিল স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন। ১৯২১ সালের ২৭ জানুয়ারি ব্যাঙ্ক অব বেঙ্গল, ব্যাঙ্ক অব মাদ্রাজ ও ব্যাঙ্ক অব মুম্বই মিলে গিয়ে তৈরি হল ইম্পিরিয়াল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। কিন্তু সংগঠনের জন্ম তার প্রস্তুতিপর্বেই, ৯ জুলাই ১৯২০। তখনও ট্রেড ইউনিয়ন আইন হয়নি, বেনেভোলেন্ট সোসাইটি আইনের সাহায্যে তার সৃষ্টি। ১৯৩২-এ তা ট্রেড ইউনিয়ন আইনের আওতায় আসে। মেঘনাদ সাহা, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, নলিনাক্ষ সান্যাল প্রমুখের সভাপতিত্বে এর অগ্রগতি। ১৯৫৫-য় ইম্পিরিয়াল ব্যাঙ্ক পরিণত হয় স্টেট ব্যাঙ্কে। আজ সংগঠন বাংলা থেকে আরও সাতটি সার্কেলে ছড়িয়েছে। ১৩ জুলাই নজরুল মঞ্চে শতবর্ষে পদার্পণের অনুষ্ঠান। সাতটি সার্কেলে সারা বছর অনুষ্ঠান চলবে।
বাঙালি
কলকাতায় লুঙ্গি পরা সাহেব দেখে থতমত খাচ্ছেন? অতিথিকে দেখে তাও গায়ে টি-শার্ট চড়ালাম, নইলে জুন-জুলাইয়ের ভ্যাপসা কলকাতায় খালি গায়ে থাকাই আরামের,’’ বলছিলেন জন উইলিয়াম হুড (জন্ম ১৯৪৪)। অস্ট্রেলীয় সাহেব বহু বছর হল কলকাতায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। আগে ছ’মাস মেলবোর্ন ছ’মাস কলকাতা করতেন, ইদানীং এ শহরে থাকেন মাস এক-দুই, বাকিটা ও দেশে, নইলে গুচ্ছের কাজ জমে যায়, বাড়ির ছোটগুলোও মিস করে খুব। কিন্তু তাঁর মন জুড়ে কলকাতা। এই শহরে আসছেন সেই ষাটের দশক থেকে। ওই দশকেই মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে ঘটনাচক্রে ছাত্র বনে যান ভারততত্ত্বের। দুই মাস্টারমশাই শিবনারায়ণ রায় ও অতীন্দ্র মজুমদারের সূত্রে বাঁধা পড়েন বাংলার ইতিহাস ও সাহিত্যের সঙ্গে। এমনই সে টান, গবেষণা করলেন নীহাররঞ্জন রায়ের উপরে। নীহাররঞ্জনের ‘বাঙ্গালীর ইতিহাস’ অনুবাদ করেছেন, ‘হিস্ট্রি অব দ্য বেঙ্গলি পিপল’-এর দ্বিতীয় সংস্করণও হয়েছে ২০১৩-য়। প্রফুল্ল রায়, বুদ্ধদেব গুহ, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের সঙ্গে সখ্য তাঁকে জড়িয়ে নিয়েছে বঙ্গসাহিত্য ও চলচ্চিত্রের নিবিড় বীক্ষায়। ইংরেজিতে বই লিখেছেন সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত-সহ বহু ভারতীয় পরিচালকের ছবি নিয়ে। বুদ্ধদেবের বহু ছবির, সন্দীপ রায়, শেখর দাসের ছবিরও ইংরেজি সাবটাইটল তাঁর করা। অনুবাদ করেছেন প্রফুল্ল রায়ের বহু ছোটগল্প ও উপন্যাস, বুদ্ধদেব গুহর ‘কোজাগর’। হাসান আজিজুল হকের ‘সাবিত্রীর উপাখ্যান’-এর অনুবাদ প্রকাশের পথে, আরও অন্তত ছ’টা বাংলা উপন্যাসের অনুবাদ তৈরি, প্রকাশকের প্রতীক্ষায়। শীতের কলকাতায় দেখা হবে আবার, জানিয়ে গেলেন। ছবি: তথাগত সিকদার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy