Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

চার্জশিটে রাঘিব, সঙ্গী আরসালানও

গোয়েন্দারা জানান, দুর্ঘটনার এক মাসের মাথায় চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (২) (প্রাণহানি হবে জেনেও ধাক্কা মারার অভিযোগ) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

রাঘিব পারভেজ। ফাইল চিত্র।

রাঘিব পারভেজ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৬
Share: Save:

বেপরোয়া গতিতে জাগুয়ার চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটানোর অভিযোগে প্রথমে ধরা পড়েছিলেন কলকাতার একটি বিরিয়ানি সংস্থার মালিকের ছোট ছেলে আরসালান পারভেজ। শেক্সপিয়র সরণির সেই দুর্ঘটনায় পরে অবশ্য আরসালানের দাদা রাঘিব পারভেজকে গ্রেফতার করা হয়। চার্জশিটে মূল অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে সেই রাঘিবকেই। তবে আরসালানকে ছাড় দেওয়া হয়নি। রাঘিবের সঙ্গে সঙ্গে আরসালান এবং তাঁদের মামা মহম্মদ হামজার বিরুদ্ধেও বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

লালবাজার সূত্রের খবর, চার্জশিটে জাগুয়ারের চালক রাঘিবকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানো), ৩০৮ (অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা) সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের জন্য পিডিপিপি আইনের তিন নম্বর ধারা এবং মোটরযান আইনের ১১৯ ও ১৭৭ নম্বর ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। আরসালানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২০১ (তথ্যপ্রমাণ লোপাট) এবং হামজার বিরুদ্ধে ২০১, ২১২ (তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং অভিযুক্তকে আশ্রয় দেওয়া) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে চার্জশিটে।

গোয়েন্দারা জানান, দুর্ঘটনার এক মাসের মাথায় চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (২) (প্রাণহানি হবে জেনেও ধাক্কা মারার অভিযোগ) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে পুলিশ ৩০৪ বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর ধারায় অভিযোগ এনেছে। লালবাজারের দাবি, চার্জশিটে নতুন ধারা যোগ করা হয়নি। তদন্তের পরে মনে হয়েছে, এ ক্ষেত্রে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারাটিই প্রযোজ্য। তবে আদৌ ওই ধারায় চার্জ গঠন হবে কি না, সেটা আদালত ঠিক করবে। সরকারি কৌঁসুলি অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, এ দিন রাঘিবকে আদালতে তোলা হয়েছিল। অভিযুক্ত নিজেই জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন। বিচারক তাঁকে দু’দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

১৬ অগস্ট রাতে শেক্সপিয়র সরণি ও লাউডন স্ট্রিটের মোড়ে রাঘিবের দ্রুত গতির জাগুয়ার ধাক্কা মারে একটি মার্সিডিজ়কে। সেই সংঘর্ষের জেরে মার্সিডিজ় গিয়ে ধাক্কা মারে ট্র্যাফিক পুলিশের কিয়স্কে এবং ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা তিন বাংলাদেশি নাগরিককে। মৃত্যু হয় কাজি মহম্মদ মনিরুল আলম এবং ফারহানা ইসলাম তানিয়া নামে দুই বাংলাদেশির। সেই ঘটনায় জাগুয়ারের চালক হিসেবে আরসালানকে ১৭ অগস্ট গ্রেফতার করা হয়। তার চার দিন পরে পুলিশ জানায়, আরসালান নন, সে-রাতে জাগুয়ার চালাচ্ছিলেন তাঁর দাদা রাঘিব এবং তিনিই দুর্ঘটনা ঘটান। তার পরে পালিয়ে যান দুবাইয়ে। পুলিশের চাপে পরে এসে ধরা দেন তিনি।

পুলিশ জানায়, প্রায় ২০০ পাতার চার্জশিটে ৬০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। গাড়ির গতি নিয়ে জাগুয়ার সংস্থা যে-রিপোর্ট দিয়েছে, সেটিও যুক্ত করা হয়েছে চার্জশিটে। ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ধাক্কা মারার আগের মুহূর্তে ওই জাগুয়ারের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার। এবং ধাক্কা মারার সময় গতিবেগ ছিল ১০০ কিলোমিটার। চার্জশিটে বলা হয়েছে, রাঘিব ট্র্যাফিক সিগন্যাল অমান্য করে এগিয়ে গিয়ে মার্সিডিজ়ে ধাক্কা মারেন এবং দুর্ঘটনার পরেই সঙ্গে থাকা বন্ধুকে নিয়ে পালিয়ে যান।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy