প্রতীকী ছবি।
ভোটের দিনের গোলমালের নিরিখে শহরের কুখ্যাত এলাকাগুলি চিহ্নিত করার কাজ শুরু করল কলকাতা পুলিশ। তার ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশনে বিস্তারিত পরিকল্পনার রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে বলে খবর। তালিকায় উপরের দিকে রাখা হয়েছে ২০১৫ এবং ২০১০ সালের পুরভোটের দিন গন্ডগোলের দিক থেকে শিরোনামে উঠে আসা এলাকাগুলিকে। তালিকা ধরে ধরে ওই সব এলাকার বুথগুলিকে স্পর্শকাতর এবং অতি স্পর্শকাতর, এই দু’ভাগে ভাগ করে এখন থেকেই সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, এ বার মোট বুথের সংখ্যা ৪৭৪২। অতিরিক্ত বা অগজ়িলিয়ারি বুথ থাকছে ৩৮৫টি। পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের পুরভোটের দিন সব চেয়ে বেশি গোলমালের অভিযোগ এসেছিল বন্দর এলাকা এবং উত্তর কলকাতা থেকে। গার্ডেনরিচ, মেটিয়াবুরুজ, ওয়াটগঞ্জ এবং পশ্চিম বন্দর এলাকার একাধিক বুথকে এ বার তাই অতি স্পর্শকাতরের তালিকায় রাখা হয়েছে। এর পরেই রয়েছে বেহালা এবং সংযুক্ত এলাকার একাধিক বুথ। বাড়তি নজরদারি থাকছে কলকাতা পুরসভার সাত এবং ন’নম্বর বরোর জন্য।
তিলজলা, তপসিয়ার পাশাপাশি কসবা এবং যাদবপুরেও এ বার বিক্ষিপ্ত অশান্তি হতে পারে বলে লালবাজারের অনুমান। সূত্র মারফত পুলিশের কাছে খবর পৌঁছেছে ২৮, ২৯, ৫৮ এবং ৫৯ নম্বর বুথ ঘিরেও। সেখানে নির্বাচনের আগে থেকেই বহিরাগতদের উপস্থিতি দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা। লালবাজারের এক কর্তার দাবি, সম্পূর্ণ পৃথক বন্দোবস্ত রাখার পরিকল্পনা হয়েছে কাশীপুর ঘিরে। নির্বাচনের দিনের গন্ডগোলের নিরিখে ওই এলাকার স্থান বন্দরের পরেই। এ বার অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে গিরিশ পার্কের জন্য। ২০১৫ সালের পুরভোটের দিন ওই এলাকাতেই গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের এসআই জগন্নাথ মণ্ডল।
জানা গিয়েছে, এর সঙ্গেই এ বার শহরে ভোটের দিন রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ মিলিয়ে মোতায়েন থাকবেন ২৩ হাজার কর্মী। অতি স্পর্শকাতর এবং স্পর্শকাতর বুথের দায়িত্বে থাকবে ডিসি-র নেতৃত্বাধীন কলকাতা পুলিশের বিশেষ দল। ৭৮টি কুইক রেসপন্স টিমের (কিউআরটি) পাশাপাশি রাখা হচ্ছে ৩৫টি হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড (এইচআরএফএস)। ২৫ শতাংশ বুথে থাকছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে থানার ওসিদের নিয়ে বৈঠকে পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র বলে দিয়েছেন, এখন থেকেই ওসিদের নিজেদের এলাকার ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বা বুথ ঘুরে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া যাতে শান্তিতে সম্পন্ন হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। কলকাতা পুলিশের এক অনুষ্ঠানে কমিশনার বলেন, ‘‘শহরবাসীকে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে কলকাতা পুলিশ বদ্ধপরিকর।’’
কিন্তু তা সত্ত্বেও পুরভোট অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ী বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবি ইতিমধ্যেই তুলেছে তারা। এই সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, পাঁচ বছর আগের ভোটে ৩২ হাজার পুলিশ এবং তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা
সত্ত্বেও নির্বাচন রক্তপাতশূন্য হয়নি। এ বার কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া, অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক বাহিনী নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভোট হওয়া আসলে ‘সোনার পাথরবাটি’!
রাজ্যের শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোটের আশ্বাস দিয়ে বলে রেখেছেন, দলের কেউ কোনও রকম গন্ডগোলে জড়িত রয়েছেন প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়, তা স্পষ্ট হবে আগামী কয়েক দিনেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy