Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Police

পথে আজ মুখ্যমন্ত্রী, শহর সচল রাখার পরীক্ষা পুলিশের

পুলিশকে চিন্তায় রেখেছে সকাল আটটায় গণেশ টকিজ়ের কাছ থেকে বেরোতে চলা একটি শোভাযাত্রা। কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসে অর্ধদিবস ছুটি থাকলেও আজ রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটি নেই।

An image of Mamata Banerjee

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:০৬
Share: Save:

এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অন্য দিকে, যে কোনও রকম অশান্তি রুখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখা। সেই সঙ্গেই থাকছে মিছিলে জেরবার শহরের গতি যাতে বাধা না পায়, সে দিকেও লক্ষ রাখা। আজ, সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের দিনে কার্যত এই তিনটি পরীক্ষার মুখে পড়তে হচ্ছে কলকাতা পুলিশকে। পুলিশকর্তারা বলছেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা। কারণ, তাঁর ডাকে মিছিলের অনেকটাই রয়েছে ‘স্পর্শকাতর’ এলাকার মধ্যে দিয়ে। তাই পুলিশকর্তারা তাঁদের তরফে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার বন্দোবস্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে বলছেন, ‘‘শান্তি বজায় রাখুন। মনে রাখবেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব যথাযথ পালন করলে তবেই উৎসব পালনের অধিকার রক্ষা করা সম্ভব।’’

যদিও এই বড় পরীক্ষার আগে পুলিশের কাছে কিছুটা হলেও ধাক্কা হিসাবে এসেছে রবিবারের হাফ ম্যারাথনে তোরণ ভেঙে পড়ায় অতিরিক্ত নগরপাল (১) মুরলীধর শর্মার আহত হওয়ার ঘটনা। লালবাজার সূত্রের খবর, সোমবারের পুলিশি পরিকল্পনার অনেকটা অংশ জুড়ে ছিলেন মুরলীধর। তাঁর উপরেই ছিল মূলত মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথের নিরাপত্তার দায়িত্ব।

জানা গিয়েছে, আজ দুপুর তিনটের পরে হাজরা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বেরোনো সংহতি মিছিল পার্ক সার্কাস ময়দানে শেষ হওয়ার পরে সেখানে বক্তব্য রাখার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। ওই মিছিলের যাত্রাপথের বেশ কিছু অংশ যে হেতু স্পর্শকাতর এলাকার মধ্যে দিয়ে যাবে, তাই অনেক আগে থেকেই আশপাশের বহুতলের দায়িত্ব নেওয়ার কথা গোয়েন্দা পুলিশের। সংহতি মিছিলের মুখোমুখি যাতে অন্য মিছিল চলে না আসে, বিশেষ নজর রাখা হবে সে দিকে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছাকাছি যাতে কেউ আসতে না পারেন কিংবা বিরূপ কোনও স্লোগান দিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে কয়েকশো পুলিশকর্মীকে সাদা পোশাকেও রাখা হচ্ছে। এই সব দিক খতিয়ে দেখে মুরলীধরকে রিপোর্ট দেওয়ার কথা। কিন্তু আপাতত ওই পুলিশকর্তার বদলে কে এই গুরুদায়িত্ব সামলাবেন, রবিবার সন্ধ্যায় সেই নিয়ে লালবাজারে বিশেষ বৈঠক হয়। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিদের ছাড়া বাকিদের মুখ্যমন্ত্রীর থেকে কিছুটা দূরত্ব রেখে হাঁটানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

পুলিশকে চিন্তায় রেখেছে সকাল আটটায় গণেশ টকিজ়ের কাছ থেকে বেরোতে চলা একটি শোভাযাত্রা। কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসে অর্ধদিবস ছুটি থাকলেও আজ রাজ্য সরকারি কর্মীদের ছুটি নেই। ফলে, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে অফিসের সময়ে যানজটের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে।

লালবাজারের মাথাব্যথা মুখ্যমন্ত্রীর সংহতি মিছিলের প্রায় একই সময়ে ভবানীপুরের রমেশ মিত্র রোড থেকে হতে চলা রামভক্তদের একটি মিছিলও। আরও একটি বিষয় হল, রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি দেখানোর জন্য অনেক জায়গায় বড় পর্দা লাগানো হচ্ছে। রবিবার গভীর রাতের পরে ওই জায়ান্ট স্ক্রিনগুলির বেশির ভাগ লাগানোর কথা। ফলে, পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে পুলিশকেও।

সমান চিন্তায় সাধারণ নাগরিকদের অনেকেই। গড়িয়াহাটের তমাল তালুকদার যেমন বললেন, ‘‘তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করি। আমাদের ছুটি নেই। অফিস যাওয়ার জন্য ঘণ্টা দুয়েক সময় হাতে নিয়ে বেরোব।’’ বেলেঘাটার স্নিগ্ধা সরকার বললেন, ‘‘বাবাকে নিয়ে কাল ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা হাসপাতালে। রাস্তার কী অবস্থা হবে, বুঝতেই পারছি না।’’ গোলমালের আশঙ্কায় ছেলেকে স্কুলে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শোভাবাজারের তপন দত্ত। বললেন, ‘‘একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার এই যে মিছিল-রাজনীতি চলছে, তাতে রাস্তায় বেরিয়ে বিপদ ঘটতে পারে যখন তখন। তার চেয়ে ছেলেকে না পাঠানো ভাল।’’

পুলিশ কি পারবে এত কিছুর সমাধান করে শহর সচল রাখতে? উত্তর মিলবে কয়েক ঘণ্টাতেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy