ফাইল ছবি
ব্রিটিশ আমল থেকেই কলকাতা পুলিশের কর্মীদের হাতে কিংবা কাঁধে শোভা পেয়েছে সে। এ বার তার বিদায়ের পালা শুরু হয়েছে।
প্রশাসনের খবর, ‘শর্ট ম্যাগাজ়িন লি এনফিল্ড’ রাইফেল, যার পোশাকি নাম থ্রি-নট-থ্রি, এ বার অতীত হতে চলেছে। তার জায়গা নেবে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির তৈরি ‘এক্সক্যালিবার’ রাইফেল। ইতিমধ্যেই ১০৪০টি এমন রাইফেল এসে পৌঁছেছে লালবাজারের হাতে। অগস্ট মাসের মধ্যে আসবে আরও ৩০০টি। ধাপে ধাপে সেগুলি তুলে দেওয়া হবে কর্মীদের হাতে। নতুন রাইফেল চালানোর প্রশিক্ষণও ইতিমধ্যে নিয়েছেন অনেক পুলিশকর্মী। তবে এই নতুন আগ্নেয়াস্ত্র মূলত পাবেন সশস্ত্র বাহিনীর সাধারণ কর্মী এবং সেন্ট্রি ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীরাই। কলকাতা পুলিশের কম্যান্ডোদের কাছে এর থেকেও উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা এবং রাজ্য পুলিশের সঙ্গে থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল কার্যত সমার্থক। ওজনে ভারী হলেও পুলিশকর্মীরা যেন এর সঙ্গে মায়ার বাঁধনে বাঁধা পড়ে গিয়েছেন। এই রাইফেলের ইতিহাসও কম চমকপ্রদ নয়। জেমস পারিশ লি নামে এক মার্কিন সাহেব এই রাইফেলের নির্মাতা। তাঁর নাম থেকেই এর নামলি এনফিল্ড রাইফেল। উল্লেখ্য, এনফিল্ড রাইফেল এবং তার কার্তুজ নিয়েই ঘটেছিল সিপাহি বিদ্রোহ। পরবর্তী কালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের সহায় হয়েছিল এই রাইফেল। এর কার্তুজ ০.৩০৩ বোর-এর হওয়ায় ক্রমে চলতি কথায় তার নাম হয়ে যায় ‘থ্রি-নট-থ্রি’। প্রায় তিনশো গজ দূরের বস্তুকেও এই রাইফেলের গুলি আঘাত করতে পারে।
তবে পুলিশকর্তারা বলছেন, বর্তমানে যে পরিমাণ উন্নত মানের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হয়, তার সঙ্গে পুরনো প্রযুক্তির রাইফেল নিয়ে লড়াই করা অসম্ভব। নতুন এক্সক্যালিবার রাইফেলের ওজন মাত্র ৪২৫ গ্রাম। মিনিটে ৬০০ রাউন্ড পর্যন্ত গুলি ছোড়া যায়। সেখানে থ্রি-নট-থ্রি দিয়ে মিনিটে বড়জোর ১০টি গুলি চালানো সম্ভব। সেই কথা মাথায় রেখেই কয়েক বছর আগে নতুন অস্ত্র কেনার নীতি তৈরি হয়েছিল লালবাজারে। সেই নীতি অনুযায়ী, রাইফেলপিছু প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, রাজ্য পুলিশও একই কায়দায় আগেই আগ্নেয়াস্ত্র বদলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নতুন নীতি নেওয়ার পরে প্রায় দেড় হাজার থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল বাতিল করে নতুন ওই রাইফেল তুলে দেওয়া হয়েছে কর্মীদের হাতে। নতুন রাইফেলে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। কারণ, থ্রি-নট-থ্রি থেকে প্রতি বার গুলি ছোড়ার আগে বোল্ট করতে হয়। যাতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু নতুন রাইফেলে অনায়াসে একের পর এক গুলি চালানো যায়।
লালবাজারের খবর, বর্তমানে কলকাতা পুলিশের প্রায় আট হাজার কর্মী থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল নিয়ে ডিউটি করেন। পুলিশকর্তাদের অনুমান, তাঁদের সকলের হাতে নতুন রাইফেল তুলে দিতে আগামী বছর গড়িয়ে যাবে। এক কর্তা বলেন, ‘‘ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি যে ভাবে নতুন রাইফেল আমাদের সরবরাহ করবে, আমার তা সেই ভাবেই কাজে লাগাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy