ফাইল চিত্র।
কোনও মেসেজে লেখা, ‘এটা চালু আছে?’ কেউ আবার শুধুই হাই-হ্যালো লিখছেন মেসেজে। এ ছাড়া ‘গুড মর্নিং’, ‘গুড নাইট’ মেসেজের বন্যা তো আছেই। কেউ কেউ আবার নিজের কোনও লেখা পাঠিয়ে মন্তব্য আশা করছেন। থানার অভিযোগ জানানোর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এমন অপ্রয়োজনীয় মেসেজের ঠ্যালায় কার্যত নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় ডিউটি অফিসার থেকে শুরু করে একাধিক পুলিশকর্মীর।
বড়দিনের পর থেকেই কলকাতায় হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। নতুন বছরের গোড়ায় তা কার্যত লাগাম ছাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সংক্রমণ বেড়েছে কলকাতা পুলিশ বাহিনীতেও। এক সময়ে শহরের বেশ কয়েকটি থানার পুলিশকর্মীরা এমন ভাবে আক্রান্ত হচ্ছিলেন যে, থানার কাজ পরিচালনা করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছিল। ফলে সংক্রমণ রুখতে থানায় না গিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে বলে জানানো হয়। এমনকি থানায় না এসে এফআইআর বা জিডি নম্বরও সংগ্রহ করা যাবে বলে জানানো হয়। গত সপ্তাহ থেকেই প্রতিটি থানায় একটি নির্দিষ্ট নম্বর দেওয়ার পাশাপাশি চালু হয় হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর। এর পর থেকেই শুরু হয়েছে উল্টো বিপত্তি!
নয়া নম্বর চালু হওয়ার পরে কোনও কোনও থানায় দিনে গড়ে একটি বা দু’টি অভিযোগ আসছে। কোনও কোনও থানায় সেই সংখ্যা আরও কম। আর বাকি সবই অপ্রয়োজনীয় মেসেজ। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে দু’-তিনটি করে অভিযোগ আসছে বলে জানালেন গল্ফ গ্রিন থানার এক পুলিশকর্মী। কেউ কেউ বাড়ির পাশে মধ্যরাত পর্যন্ত পিকনিক করার অভিযোগও লিখে পাঠাচ্ছেন। ওই পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘নম্বর প্রচার করা হলেও এখনও অনেকে জানেন না। অনেকে আবার মোবাইলে অভিযোগ জানানো যায়, এটাই বিশ্বাস করতে পারছেন না। ফলে সরাসরি থানায় চলে আসছেন।’’
সরাসরি থানায় চলে আসার একই সমস্যার কথা শোনা গেল ভবানীপুর, প্রগতি ময়দান, উল্টোডাঙা, মানিকতলা, হেস্টিংস, মুচিপাড়া-সহ শহরের একাধিক থানা সূত্রেই। ভবানীপুর থানার এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘প্রথম তিন দিন তো থানার মোবাইলে কোনও অভিযোগই আসেনি। শুধু হাই-হ্যালো মেসেজ এসেছে।’’ সাউথ ডিভিশনের এক থানার পুলিশ আধিকারিক বললেন, ‘‘লালবাজারের দেওয়া নম্বরে অভিযোগ আসছে কোথায়! সবই তো আসছে পরিচিত অফিসারদের ব্যক্তিগত নম্বরে। দিনকয়েক গেলে হয়তো পরিস্থিতি বদলাবে।’’ শহরের অন্য এক থানার কর্মী আবার বললেন, ‘‘সকাল-রাতে শুধু গুড মর্নিং আর গুড নাইটের মেসেজ। এমন অবস্থা যে, ওই সময়ে কেউ অভিযোগের মেসেজ পাঠিয়ে থাকলে তা নজর এড়িয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। অপ্রয়োজনীয় ওই মেসেজ থেকে যে কী ভাবে মুক্তি মিলবে, তাই ভাবছি।’’
তবে কয়েকটি থানা এখনও পর্যন্ত এমন অপ্রয়োজনীয় মেসেজের সমস্যার মুখোমুখি হয়নি বলেই জানাচ্ছেন সেগুলির আধিকারিকেরা। ইস্ট ডিভিশনের থানার এক আধিকারিক বললেন, ‘‘আমাদের থানায় এখনও এ সব কেউ করেনি। তবে আমরা ভেবে রেখেছি, কেউ এসব লিখলে তাঁকে কড়া ভাষায় বারণ করা হবে।’’ এমন কড়া দাওয়াইয়ের কথা ভাবছেন আরও কয়েকটি থানার আধিকারিকেরাও।
কিন্তু তার পরেও অপ্রয়োজনীয় মেসেজ থেকে মুক্তি মিলবে কি? নিশ্চিত নন কেউই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy