Advertisement
২৪ অক্টোবর ২০২৪
RG Kar Hospital Incident

চার দাবিতে অনড় আরজি করের আন্দোলন, গেলেন পুলিশ কমিশনার, ‘একাধিক জড়িত’ তত্ত্ব নিয়েও মন্তব্য

রবিবার আরজি করের আবাসিক চিকিৎসকদের সংগঠন চার দফা দাবি প্রকাশ করে। তাদের প্রথম দাবি, অভিযুক্তকে গ্রেফতার, তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং প্রাণদণ্ড দেওয়া।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৪ ২৩:৩৮
Share: Save:

অচলাবস্থায় বিদ্ধ আরজি কর হাসপাতাল। মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে গত শুক্রবার থেকে জরুরি পরিষেবা বাদে বাকি সব ক্ষেত্রে কর্মবিরতির ডাক দিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শনিবারও সেই অবস্থা জারি থাকার পর রবিবার আন্দোলনের ঝাঁজ আরও কিছুটা বাড়ল। চার দফা দাবি প্রকাশ্যে এনে এ বার হাসপাতালের জরুরি পরিষেবাতেও কর্মবিরতি ঘোষণা করলেন আন্দোলনকারীরা। যার জেরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা। এই পরিস্থিতিতে রবিবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের পর ফের স্বচ্ছ তদন্তেরই আশ্বাস দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি) বিনীত গোয়েল। সেই সঙ্গে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার যে তত্ত্ব ভাসছে বিভিন্ন মাধ্যমে, তা নিয়েও কমিশনারের বার্তা, “যদি কেউ সন্দেহ করেন, ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকতে পারেন— সেটি আমরা সবরকম গুরুত্ব দিয়ে দেখব। আমাদের কিছুই আড়াল করার নেই।”

রবিবার আরজি করের আবাসিক চিকিৎসকদের সংগঠন চার দফা দাবি প্রকাশ করে। তাদের প্রথম দাবি, অভিযুক্তকে গ্রেফতার, তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং প্রাণদণ্ড দেওয়া। পাশাপাশিই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সিসিটিভি ফুটেজে যে প্রমাণ মিলেছে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যা পাওয়া গিয়েছে, তা আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদেরও সবিস্তার জানাতে হবে। প্রসঙ্গত, পুলিশ ইতিমধ্যেই এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত বর্তমানে পুলিশি হেফাজতেই। পুলিশ সূত্রেই দাবি, অপরাধের কথা ধৃত স্বীকারও করেছেন। যদিও এ নিয়ে পুলিশের তরফে সরকারি ভাবে কিছু বলা হয়নি। আন্দোলনকারীদের দ্বিতীয় দাবি, লিখিত ভাবে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে হাসপাতালের প্রিন্সিপাল, হাসপাতালের সুপার, বুক ও ফুসফুসের চিকিৎসা বিভাগের প্রধান এবং আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অন্তর্বর্তী থানার কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে। ঘটনাচক্রে, তার আগেই সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠকে অপসারণ করা হয়েছে। সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিন বুলবুল মুখোপাধ্যায়কে। আন্দোলনকারীদের বাকি দু’টি দাবি হল— মৃতের পরিবারের জন্য অর্থ সাহায্য এবং কত দূর তদন্ত এগোচ্ছে, তা নির্দিষ্ট সময় অন্তর আন্দোলনকারীদের জানানো। আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট করে দেন, এই দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁদের কর্মবিরতি, অবস্থান-বিক্ষোভ চলবে।

ঘটনাচক্রে, এর পরেই আরজি করে যান সিপি। তদন্তের স্বার্থে গিয়েছিলেন লালবাজারের গোয়েন্দাকর্তারাও। পরে সন্ধ্যার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সিপির বৈঠক হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বৈঠক শেষে বেরিয়ে সিপি জানান, আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। তিনি বলেন, “আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের যা জিজ্ঞাস্য ছিল, সেগুলি নিয়ে আলোচনা ছিল। রবিবার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার-১ পরিবারের সঙ্গেও দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি পরিবারের কাছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তুলে দিয়েছেন। আমরা মনে করি আলোচনার পর আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা সন্তুষ্ট। যদি তাঁদের কোনও প্রশ্ন থাকে, যে কোনও সময়ে আমাদের কাছে জানতে চাইতে পারেন।”

তদন্ত সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যে সব ‘তত্ত্ব’ ছড়িয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে, তা নিয়েও সিপি বলেন, “এখন বিভিন্ন ধরনের গুজব চারদিকে চলছে। কোথাও বলা হচ্ছে একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন, কোথাও বলা হচ্ছে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে, কোথাও বলা হচ্ছে তিন জনের সিমেনের নমুনা পাওয়া গিয়েছে— এমন একাধিক গুজব ছড়াচ্ছে। এ সব নিয়ে আন্দোলনকারীদের মনেও প্রশ্ন ছিল। সেগুলি নিয়ে কথা হয়েছে তাঁদের সঙ্গে। আমরা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। যদি কারও কোনও প্রশ্ন থাকে, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।” তিনি জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ইতিমধ্যেই পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজের বিষয়েও কথা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের যে গাইডলাইন রয়েছে, সেটি ভাঙা যাবে না। পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আন্দোলনকারীদের দেখানো নিয়ে কথা উঠেছিল বৈঠকে। জুনিয়র ডাক্তারদের পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধিদল তৈরি করতে বলা হয়েছে। যদি সম্ভব হয়, তা হলেই সেই দলকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখানো হবে।

সিপি ফিরে যাওয়ার পরেই আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে এসিপি নর্থকে আরজি কর হাসপাতালের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়। এ ছাড়া, আরজি কর হাসপাতালের ভিতরে যে পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে, সেখানেও অতিরিক্ত ওসির পদ অনেক দিন ফাঁকা ছিল। ইনস্পেক্টর শুভ্রাংশু মুদলিকে আরজি কর হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির অতিরিক্ত ওসি হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে। দ্রুত তাঁকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, গোটা ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ঘটনার দিন দায়িত্বে থাকা দুই নিরাপত্তা কর্মীকে সরিয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থাকেও সতর্ক করা হয়েছে। হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং নজরদারি বাড়াতে শুরু হয়েছে সিসিটিভি লাগানোর কাজ। যে সব জায়গায় সিসিটিভি নেই, সেই জায়গাগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, মহিলা চিকিৎসকদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসকদের অনেক সময় টানা কাজ করতে হয়। ফলে কাজের ফাঁকে তাঁরা যে ডিউটি রুমে বসেন, সেই ঘরগুলিও মেরামত করে বসার যোগ্য করে তোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।

হাসপাতালে আন্দোলনের জেরে কার্যত শিকেয় উঠেছে চিকিৎসা পরিষেবা। বিপাকে পড়েছিলেন দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগী ও তাঁদের পরিবার-পরিজন। রবিবার আন্দোলনকারীরা জরুরি পরিষেবাতেও কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর, জুনিয়র ডাক্তরেরা কর্মবিরতির ডাক দেওয়ায় জরুরি পরিষেবা যে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে, সে কথা বলা যাবে না। বিষয়টি হল, আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা জরুরি পরিষেবায় অংশগ্রহণ করবেন না। তবে সেখানে রোগীদের দেখার জন্য অন্য চিকিৎসকেরা থাকবেন। এই পরিস্থিতিতে রবিবার সকালেই নোটিস জারি করে আরজি করে সমস্ত চিকিৎসক এবং অচিকিৎসক কর্মীর ছুটিও বাতিল করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে আগে থেকে যাঁদের ছুটি অনুমোদিত হয়ে গিয়েছিল, তাঁদের আপাতত ছুটি বাতিল করে কাজে যোগ দিতে হবে না। ঘটনাচক্রে, এই নোটিস জারির করা পরেই সুপার পদ থেকে সঞ্জয়কে সরানো হয়। আরজি কর হাসপাতালের এই ঘটনায় রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতাল তো বটেই, জাতীয় স্তরের চিকিৎসক সংগঠনও প্রতিবাদ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। ফেডারেশন অফ রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন দেশের হাসপাতালগুলিকে সোমবার একাধিক পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। দেশ জুড়ে চিকিৎসক সংগঠনগুলি দোষীর কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছে। যে দাবিতে মঙ্গলবারও প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে জাতীয় স্তরের চিকিৎসক সংগঠনটি।

প্রভাব সরকারি হাসপাতালের পরিষেবায়

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতা-সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা রবিবারও কর্মবিরতি পালন করছেন। আরজি কর তো বটেই, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে কর্মবিরতি চলছে। কোথাও কোথাও পরিষেবা খানিক স্বাভাবিক হলেও তা বিক্ষোভ, আন্দোলনের আঁচ রয়েছে রবিবারেও। শনিবারের মতো রবিবারও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তবে জরুরি পরিষেবা চলছে। রবিবার ছুটির দিন বলে এমনিতেই হাসপাতালের বহির্বিভাগ বা আউটডোর বন্ধ। সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনে রোগীদের চাপ বাড়বে বলে ধরে নেওয়াই যায়। যদিও পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে ওই দিনও। বর্ধমান জেলা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির চিকিৎসার ক্ষেত্রে অন্যতম ভরসার জায়গা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পিজিটি থেকে জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। বিক্ষোভ অব্যাহত বীরভূমের রামপুরহাট সরকারি মেডিক্যাল কলেজে। শনিবার আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে সরকারি হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। একই ছবি দেখা গিয়েছে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজেও। রবিবারও সেখানে কর্মবিরতি চলছে। জরুরি পরিষেবা বাদ দিয়ে ইন্ডোর পরিষেবায় যুক্ত হননি হাসপাতালে কর্মরত কোনও ইন্টার্ন, কর্মী এবং পিজিটি চিকিৎসকেরা।

ধৃতকে নিয়ে নানা প্রশ্ন

ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সম্পর্কে বেশ কিছু নতুন তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার হলেও যথেষ্ট ‘প্রভাবশালী’ ছিলেন অভিযুক্ত। পুলিশের গাড়ি-বাইক চড়েই ঘুরে বেড়াতেন। সেই বাইক নিয়ে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ছিল তাঁর অবাধ যাতায়াত। নিজেকে সরাসরি ‘পুলিশ’ বলেই পরিচয় দিতেন তিনি। এমনকি, তাঁর হাবভাব দেখে অন্য সিভিক ভলান্টিয়ারেরা ভাবতেন, তিনি হয়তো সত্যিই হোমগার্ড! এলাকাতেও ছিল দেখনসই চালচলন! সঙ্গে মহিলাদের উত্ত্যক্ত করা, তোলাবাজি, এ সব তো ছিল বলেই অভিযোগ। প্রকাশ্যেই বলে বেড়াতেন, ‘‘আমিই তো পুলিশ!’’ তাঁর ‘দাপটে’ সিঁটিয়ে থাকতেন সকলেই। ধৃত যুবকের মা-ও জানাচ্ছেন, কখনও দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাড়িতে, কখনও ফোর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাকে থাকতেন ছেলে। সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও পুলিশের জন্য নির্দিষ্ট ফোর্থ ব্যাটেলিয়নের ব্যারাকে কী ভাবে থাকার অনুমতি পেলেন ধৃত, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এই সবের জেরেই মনে করা হচ্ছে, আর পাঁচজন সিভিক ভলান্টিয়ারের তুলনায় ‘আলাদা চোখে’ দেখা হত অভিযুক্তকে। আরজি করের নিরাপত্তারক্ষীরা জানাচ্ছেন, হাসপাতালেও ছিল তাঁর নিত্য যাতায়াত। মনে করা হচ্ছে, হাসপাতালে দালালির সঙ্গেও তাঁর যোগ ছিল।

ধৃত সম্পর্কে তাঁর দিদি

ভাইয়ের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবি করেছেন ধৃতের দিদি। তিনি পেশায় পুলিশকর্মী। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘ওর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। ওর সঙ্গে কোনও রকম সম্পর্ক রাখতে চাই না। সরকার এবং প্রশাসন ওকে যা শাস্তি দেওয়ার দিক। কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি যেন হয়।’’ জানান, অনেক দিন ধরে ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নেই। ফলে ভাই সম্পর্কে তিনি বেশি কিছু বলতে পারবেন না। তবে সম্পর্ক না রাখার কারণ হিসাবে অভিযুক্তের অতিরিক্ত মদ্যপানকেই কারণ হিসাবে দেখাতে চেয়েছেন তিনি। তাঁর ভাই কখন বাড়িতে আসতেন, কখন বেরিয়ে যেতেন, কী করতেন, কিছুই তিনি জানতেন না বলেও দাবি করেছেন। কেন সম্পর্ক নেই? এই প্রশ্ন করতেই অভিযুক্তের দিদি দাবি করেন, “ও খুব মদ খেত। তাই ওর সঙ্গে সম্পর্ক রাখিনি।” অভিযুক্ত কি বরাবরই এ রকম? এ প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, ও বরাবরই এ রকম। কখনও বাড়ি আসত, কখনও আসত না। কাউকে কিছু বলতও না। নিজের মর্জির মালিক ছিল।” তবে বার বারই তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে, “ও আমার কেউ নয়। ওর সঙ্গে আমার কোনও‌ সম্পর্ক নেই। তাই ওর সম্পর্কে আমি বিশেষ কিছু বলতে পারব না। যার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই, সে আমার কে হবে!” অভিযুক্তের বিয়ে প্রসঙ্গেও প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁর দিদিকে। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গিয়েছিল, অভিযুক্তের পাঁচটি বিয়ে। কিন্তু এই প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি এড়িয়ে গিয়ে আবারও বলেন, “ওর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আমি কিছু বলতে পারব না। তবে যা করেছে, তার জন্য প্রশাসন যা শাস্তি দেওয়ার দিক।” শেষে ধৃতের দিদি বলেন, “আমি সত্যিই অবাক হচ্ছি। এর জন্য আমি ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা। এ রকম মানুষ আমি দেখিনি। সরকার যদি ওকে কঠোর শাস্তিও দেয় আমার কিছু যাবে-আসবে না।” সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরির পর থেকেই অভিযুক্তের হাবভাব কি বদলে গিয়েছিল? এই প্রশ্ন করা হলে অভিযুক্তের দিদি বলেন, “ও অনেক দিন আগে থেকেই বদলে গিয়েছিল। যখন ওর হাবভাব বদলে যায়, তখন থেকেই ওর সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করি।”

কী বললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

আরজি কর-কাণ্ডে মুখ খুললেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভ বললেন, “এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ছেলে হোক বা মেয়ে, কারও সঙ্গেই এমন হওয়া উচিত নয়।” এনসিআরবির রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ শহর কলকাতা। তবে আরজি করের ঘটনার পর থেকে অনেকেই রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। যদিও পশ্চিমবঙ্গ একটি নিরাপদ জায়গা বলেই মত সৌরভের। তিনি বলেন, “ভারতকে সাধারণত একটি নিরাপদ দেশ হিসাবেই গোটা বিশ্ব চেনে। বাংলাও নিরাপদ। সেখানে এ ধরনের ঘটনা হওয়া উচিত নয়।” তাঁর মতে, কোনও একটি নির্দিষ্ট ঘটনা থেকে সামগ্রিক চিত্র বিচার করা উচিত নয়। তবে প্রতিটি হাসপাতালে যে সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি অত্যন্ত প্রয়োজন, সেটির দিকেও আলোকপাত করেন।

অন্য বিষয়গুলি:

RG Kar Medical College Hospital Crime Against Women
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE