Advertisement
E-Paper

শহরে মানসিক ভারসাম্যহীন সেজে জোড়া খুনে অভিযুক্ত

শুক্রবার রাতে টালা থানার টালা পার্ক থেকে ওই জোড়া খুনে অভিযুক্ত নেত্তাবুদ্দিন খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২১ ০৮:০২
Share
Save

ভাঙড়ে জোড়া খুনের দায়ে তাকে খুঁজছে পুলিশ। অথচ, পুলিশের চোখে ধুলো দিতে খাস কলকাতার রাস্তায় দিন কাটাচ্ছিল সে, মানসিক ভারসাম্যহীন সেজে! তবে এর পরেও শেষরক্ষা হল না। শুক্রবার রাতে টালা থানার টালা পার্ক থেকে ওই জোড়া খুনে অভিযুক্ত নেত্তাবুদ্দিন খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার ধৃতকে বারুইপুর আদালতে তোলা হলে তার ন’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়।

এ দিন অবশ্য পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে নেত্তাবুদ্দিন সংবাদমাধ্যমের কাছে জানায়, পাওনা টাকা নিয়ে ঝামেলার জেরেই মুজিবর মোল্লাকে খুন করেছে সে। আর গোটা ঘটনাটি তার ভাইপো রবিউল খান দেখে ফেলায় তাঁকেও খুন করে সে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভাঙড়ের কাশীপুর থানার পূর্ব রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা নেত্তাবুদ্দিনের বাড়িতে প্রায়ই মদ-গাঁজা-জুয়ার আসর বসত। অভিযোগ, জুয়ার টাকা নিয়ে সেখানেই তার এক আত্মীয় মুজিবর ওরফে লাল্টুর সঙ্গে গণ্ডগোল হয়। বার বার তার কাছ টাকা চেয়েও পাননি লাল্টু।

শেষে গত ২৭ জুন লাল্টুকে টাকা দেওয়ার নাম করে নেত্তাবুদ্দিন নিজের বাড়িতে ডেকে এনে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, তার স্ত্রী ওহিদা বিবিও এ কাজে সাহায্য করে। এমনকি, পুরো ঘটনাটি দেখে ফেলায় প্রমাণ লোপাটের জন্য কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় নেত্তাবুদ্দিনের ভাইপো রবিউলকেও। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এর পরে স্বামীকে বাড়ি থেকে পালাতে সাহায্য করে ওহিদা। এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় চাইতে গেলে নেত্তাবুদ্দিনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জেনেছে, এর পরেই সে ওই বাড়ির উঠোনে শুকোতে দেওয়া মেয়েদের একটি রাতপোশাক পরে নেয় এবং ওড়নায় মুখ ঢেলে পালায়। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে সেই ছবি দেখতে পায় পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এর পরে নেত্তাবুদ্দিন পৌঁছয় শিয়ালদহে। কিন্তু হাতে টাকাপয়সা বেশি না থাকায় খুব দূরে যেতে পারেনি সে। তাই শহরের রাস্তাতেই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির মতো আচরণ করতে থাকে। হাঁটতে হাঁটতে সে পৌঁছয় টালা থানা এলাকায়। সেখানেই ক’দিন ধরে অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছিল সে। লোকের কাছে হাত পেতে পেট ভরাত, আর রাতে টালা পার্কের ভিতরে ভবঘুরেদের সঙ্গে বেঞ্চের উপরেই শুয়ে থাকত। কিন্তু সম্প্রতি ভাঙড়ের এক মহিলা ওই এলাকায় কাজে গিয়ে নেত্তাবুদ্দিনকে দেখে চিনে ফেলেন। তিনি এক আত্মীয়কে বিষয়টি জানান। সেখান থেকে খবর যায় পুলিশে। শুক্রবার সন্ধ্যায় কাশীপুর থানার ওসি সমরেশ ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে পৌঁছে ঘুমন্ত ভবঘুরেদের মধ্যে থেকে নেত্তাবুদ্দিনকে ধরে ফেলে। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘দু’জনকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ভবঘুরে সেজে কলকাতায় লুকিয়ে ছিল। বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আগেই দ্রেফতার করেছিল নেত্তাবুদ্দিনের স্ত্রী ওহিদাকে। এখন সে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, নেত্তাবুদ্দিন ও তার স্ত্রীকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে। জোড়া খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত কুড়ুলও উদ্ধার করার চেষ্টা হবে।

Murder arrest murder case Kolkata Police

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}