কর্মক্ষেত্রে থাকার কথা আট ঘণ্টা। কিন্তু, তাঁরা থাকছেন তিরিশ মিনিট। বড়জোর ঘণ্টাখানেক! অভিযোগ জানিয়ে শিক্ষা দফতর এবং কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতিকে চিঠি দিলেন দক্ষিণ কলকাতার চারুচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ সত্রাজিৎ ঘোষ।
সুরাহা পেতে কলেজে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর ভাবনাচিন্তাও করছেন তিনি। তবে এতেও সমস্যা না মিটলে কী করা হবে তা নিয়ে সংশয়ে খোদ অধ্যক্ষ। সত্রাজিৎবাবুর হতাশ মন্তব্য, ‘‘মিথ্যা বলা আটকাব কী করে? যন্ত্র তো মিথ্যা ধরতে পারবে না! শিক্ষকদের মানসিকতার পরিবর্তন চাই।’’
সত্রাজিৎবাবু কলেজের দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছেন শিক্ষা দফতরে। অভিযোগে লিখেছেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি কলেজের উপস্থিতির খাতা অনুযায়ী, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষিকা জোনাকি সেনগুপ্ত এবং উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষিকা রীতা পাল কলেজে মাত্র ৩০ মিনিট ছিলেন। দু’জনেই সে দিন ঢোকেন সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। বেরোন সকাল ১১টায়।
অধ্যক্ষের দাবি, ওই সময়ের মধ্যে জোনাকি অর্থনীতি বিভাগের দু’টি ক্লাস করিয়েছেন বলে জানান। অধ্যক্ষের অভিযোগ, তিনি নিজে গিয়ে দেখেন ওই সময়ে অর্থনীতি বিভাগের ঘর বন্ধ ছিল। সে দিনের মতো ঘর খোলাই হয়নি। রীতা উপস্থিতির খাতায় উল্লেখ করেন, তিনি কলেজে ছিলেন ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। তার মধ্যেই উদ্ভিদবিদ্যার একটি ক্লাস নিয়েছেন তিনি। যদিও অধ্যক্ষের অভিযোগ, বেলা ১১টা নাগাদ কলেজে খুঁজেও রীতাদেবীর দেখা পাওয়া যায়নি।
এই একই জিনিস বারবার হতে থাকায় সে দিনই তিনি দুই শিক্ষিকাকে ডেকে কথা বলেছেন বলে জানান সত্রাজিৎবাবু। এ দিকে সে দিন তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ করেন ওই শিক্ষিকারা। এর পরে চিঠি লিখে শিক্ষা দফতর এবং কলেজের পরিচালন সমিতিকে বিষয়টি জানান সত্রাজিৎবাবু। তিনি বলেন, ‘‘কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকারা থাকছেন না। পড়ুয়ারা আসবেন কেন? তা ছাড়া শিক্ষক হয়ে কয়েক জন এমন মিথ্যে বলছেন, যা লজ্জাজনক।’’ তাঁর দাবি, অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কেউ কেউ কলেজে ঢুকে উপস্থিতির খাতায় নাম তুলে বেরিয়ে যান।
জোনাকির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ মিথ্যা কথা বলছেন। সে দিন ক্লাস নিতে গিয়েছিলাম। পড়ুয়ারা কেউ না এলে কী করব? তাই ফিরে আসি। তা ছাড়া কলেজ থেকে নিজস্ব কাজে ১১টা নাগাদ বেরোলেও ফিরে আসি।’’ তবে রীতার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর পরিবার সূত্রের খবর, তিনি জার্মানিতে আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছেন।
কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি শিবরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এমন হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমিও কলেজে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালুর পক্ষে।’’ কলেজগুলোতে শিক্ষকদের উপস্থিতির হার নিয়ে সমস্যার জেরে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করার কথাও ভাবছেন কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষকদের একাংশের দাবি, কাজের জন্য তাঁদের একাধিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হয়। বায়োমেট্রিক চালু হলে কী হবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy