Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Calcutta News

কৈখালিতে বধূর খুনে একাধিক অসঙ্গতি

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার কৈখালির চিড়িয়াবাগানের একটি বাড়ি থেকে নিউ টাউন থানার সিভিক ভলান্টিয়ার শম্পা দাসের (৩৬) রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়।

নিহত শম্পা দাস।

নিহত শম্পা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৮ ০১:৩৮
Share: Save:

কৈখালির চিড়িয়াবাগানে এক মহিলাকে নৃশংস ভাবে খুন করার ঘটনায় বহু প্রশ্নের উত্তর মেলেনি ২৪ ঘণ্টা পরেও।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার কৈখালির চিড়িয়াবাগানের একটি বাড়ি থেকে নিউ টাউন থানার সিভিক ভলান্টিয়ার শম্পা দাসের (৩৬) রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর স্বামী, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার সুপ্রতিম দাসকে দোতলায় চেয়ারে নাইলনের দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। তিন বছরের নাতি অনুরণনের আবদার মেটাতে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ সর্বক্ষণের পরিচারিকা মায়া সর্দারকে নিয়ে বাগুইআটির বাজারে গিয়েছিলেন মৃতার শাশুড়ি মীরা দাস। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে বাড়ি ফিরে পরিচারিকাই প্রথমে লক্ষ করেন, সদর দরজা খোলা। তার পরে শম্পাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া য়ায়। সিঁড়ির উপরে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে বসা অবস্থায় ছিল তাঁর শম্পার দেহ। পরনে সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাক। মুখের উপরে বালিশ। তার উপরে সোফার কুশন। রক্তে ভেসে যাচ্ছে শরীর।

এর পরেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তখনও সুপ্রতিম কী অবস্থায় রয়েছে, কেউ জানতেন না। বিমানবন্দর থানার পুলিশ এসে সুপ্রতিমকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে। তাঁর কনুইয়ের উপরের অংশে এবং কাঁধে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। পুলিশ শম্পার দেহ তোলার জন্য কুশন ও বালিশ সরানোর পরে বোঝা যায়, কতটা নৃশংস ভাবে তাঁকে খুন করা হয়েছে। তাঁর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করায় মুখ ভেসে যাচ্ছিল রক্তে। মুখেও ছিল ধারালো অস্ত্রের আঘাত। যা থেকে তদন্তকারীদের অনুমান, মৃত্যু নিশ্চিত করতে সব রকম পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সুপ্রতিম তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন, যখন বাড়িতে কেউ ছিল না, তখন মুখে কাপড় বাঁধা চার দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢুকে তাঁকে চেয়ারে বেঁধে মারধর করে। যার জেরে তিনি জ্ঞান হারান। তদন্তকারীরা দোতলার ঘরে লন্ডভন্ড আলমারি এবং বিছানার উপরে গয়নার বাক্স ও জামাকাপড়-সহ বিভিন্ন জিনিস ছড়ানো অবস্থায় পেলেও অসঙ্গতি কিছু রয়েই গিয়েছে।

সিঁড়ির সামনে পড়ে রয়েছে শম্পা দাসের দেহ।

পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর আগে কেষ্টপুরের শম্পার সঙ্গে বিয়ে হয় কৈখালির সুপ্রতিমের। শম্পার বোন সোমাও সিভিক ভলান্টিয়ার। শনিবার তিনি জানান, শুক্রবার তাড়াতাড়ি ছুটি হওয়ায় রাত আটটা নাগাদ শম্পা ইকো পার্ক থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। সাড়ে আটটা নাগাদ তিনি বাড়ি পৌঁছন। মৃতার শাশুড়ি জানান, তিনি বাড়ি ফেরেন রাত ৯টা নাগাদ। আধ ঘণ্টায় এত বড় ঘটনা ঘটে গেল? পুলিশকে সুপ্রতিম জানিয়েছেন, তিনি যখন দুষ্কৃতীদের হাতে বন্দি, তখনই আসেন শম্পা। তা হলে শম্পা যখন ঢুকলেন, তখন কি দরজা খোলা ছিল? দুষ্কৃতীরাই বা বাড়িতে ঢুকল কী করে? প্রতিবেশীরা কোনও শব্দ পেলেন না কেন? মীরার দাবি, তাঁদের বাড়ির দরজা টানলেই খুলে যায়। তা হলে কি দুষ্কৃতীরা তা জানত?

এ ভাবেই উদ্ধার করা হয় মৃতার স্বামী সুপ্রতিমকে।

মেরুদণ্ডের সমস্যায় সম্প্রতি ভাল করে হাঁটতে পারতেন না সুপ্রতিম। তাঁকে না মেরে দুষ্কৃতীরা শুধু শম্পাকে মারল কেন, এই প্রশ্নটাই ভাবাচ্ছে পুলিশকে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কেমন ছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সুপ্রতিম, পরিচারিকা ও মীরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও উত্তর মেলেনি। ধোঁয়াশা বেড়েছে। এ দিন ঘটনাস্থল থেকে রক্ত এবং চুলের নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।

—নিজস্ব চিত্র

অন্য বিষয়গুলি:

Shampa Das Kaikhali Murder Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy