‘আধার’ মিলিয়ে দিল পরিবারের সঙ্গে!
বছর দুই-তিন আগে ছ’জন নাবালক-নাবালিকাকে উদ্ধার করেছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার চাইল্ড লাইন। হিঙ্গলগঞ্জ, বাগদা, নৈহাটির মতো বিভিন্ন জায়গা থেকে। এদের বয়স আট থেকে পনেরোর মধ্যে। কিন্তু উদ্ধার করার পরে বাড়ির ঠিকানা কিংবা আত্মীয়-পরিজনের কথা জানতে চাইলেও তারা কিছুই বলতে পারেনি। কারণ, ওরা প্রত্যেকেই মূক ও বধির। জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির নির্দেশে ওই ছ’জনের ঠাঁই হয় কিশলয় হোমে। ২০১৬ সাল থেকে তারা সেখানেই ছিল।
চাইল্ড লাইন ও কিশলয় হোম সূত্রের খবর, উদ্ধারের পরে হোমে এনে ওই নাবালক-নাবালিকাদের সঙ্গে সাঙ্কেতিক ভাষায় কথা বলার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু লাভ হয়নি। ফলে এক প্রকার হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন সবাই। হোম কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে চাইল্ড লাইনেরও মনে হয়েছিল, আর বুঝি ওদের বাড়ির খোঁজ মিলবে না।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে হোমের অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে ওই ছ’জনেরও আধার কার্ড করানোর ব্যবস্থা করেন হোম কর্তৃপক্ষ। আর সেখানেই চোখ এবং হাতের আঙুলের ছাপ নেওয়ার পরে জানা যায়, তাদের আধার
কার্ড রয়েছে!
এর পরেই কিশলয় হোমের সুপার মলয় চট্টোপাধ্যায় তাদের ঠিকানা নিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। মলয়বাবু বলেন, ‘‘ওরা কিছু বলতে বা শুনতে না পাওয়ায় খুব অসুবিধায় পড়তে হয়েছিল। কিন্তু আধার করাতে গিয়ে যে বাড়ি খুঁজে পাওয়া যেতে পারে, এমন একটা ধারণা, কেন জানি না, আমার তৈরি হয়েছিল। আর সেটা মিলেও গিয়েছে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ওই ছ’জনের মধ্যে চার জনকে ইতিমধ্যেই চাইল্ড লাইন মারফত বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকি দু’জনের বাড়ির লোকজনকে খবর পাঠানো হয়েছে। তাঁরা তথ্যপ্রমাণ নিয়ে হাজির হলেই ওই দু’জনকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা চাইল্ড লাইনের কোঅর্ডিনেটর শিবাশিস দাস বলেন, ‘‘অন্ধ্রপ্রদেশ, কোচবিহার, ঝাড়খণ্ড এবং উত্তরপ্রদেশের চার নাবালককে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ ও বিহারের ভাগলপুরের দু’জন এখনও রয়েছে। তাদের পরিবারের লোকজনের অপেক্ষায় আছি আমরা।’’ শিবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘এক সময়ে মনে হয়েছিল, ওদের বাড়ির খোঁজ না পেলে কী হবে। কারণ, দু’জনের বয়স ১৮ বছরের কাছাকাছি। আর ক’মাস পরেই ওদের হোমে রাখা যেত না। কিন্তু বাইরে কোথায় যেত, কী হত, তা ভেবেই আমরা চিন্তিত ছিলাম। এখন নিশ্চিন্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy