Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Municpal Corporation

অনুষ্ঠানের খরচে নাজেহাল অবস্থা, পাওনা মেটাতে নবান্নকে চিঠি ঋণে জর্জরিত কলকাতা পুরসভার

নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটির সঙ্গে বৈঠক, পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক বা দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান— এত দিন পুরসভাই এই ধরনের অনুষ্ঠানের খরচ বহন করত।

A Photograph of Kolkata Municipal Corporation

সমস্ত অনুষ্ঠানের বকেয়া বিল মেটাতে নবান্নকে চিঠি পাঠাল কলকাতা পুরসভা। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৩ ০৬:৩৫
Share: Save:

কলকাতা পুরসভার আয়ের থেকে ব্যয়ের বহর যে বেশি, তা নতুন কোনও খবর নয়। ঋণের বোঝা বেড়ে যাওয়ায় বকেয়া টাকা পরিশোধ করতেই হিমশিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। তার উপরে মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের খরচ মেটাতে গিয়েও নাকানিচোবানি খাচ্ছেন তাঁরা। এ বার তাই ওই সমস্ত অনুষ্ঠানের বকেয়া বিল মেটাতে নবান্নকে চিঠি পাঠাল কলকাতা পুরসভা।

২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে কলকাতায় উৎসব, অনুষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। বহু অনুষ্ঠানেই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকেন। রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর ও পুরসভার যৌথ উদ্যোগেই এই সমস্ত অনুষ্ঠান হয়। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটির সঙ্গে বৈঠক, পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক বা দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান— এত দিন পুরসভাই এই ধরনের অনুষ্ঠানের খরচ বহন করত। কিন্তু এ বার রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে অনুষ্ঠানের খরচ মেটাতে অনুরোধ করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

দুর্গাপুজোর আগে নেতাজি ইনডোরে পুজো কমিটির প্রতিনিধি ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। খাবার ও বাকি সব কিছু মিলিয়ে সেই অনুষ্ঠানের বিল হয়েছিল ৩৩ লক্ষ টাকা। যা মেটাতে পুরসভা কয়েক মাস আগে স্বরাষ্ট্র দফতরকে চিঠি দিয়েছিল। যদিও তার উত্তর আসেনি।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দেড় ঘণ্টার অনুষ্ঠানের জন্য ৩৫ লক্ষ টাকারও বেশি বিল হয়েছে। সেই টাকা মিটিয়ে দিতেও পুরসভা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরকে চিঠি দিয়েছে। পুর অর্থ বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, উৎসব, অনুষ্ঠানের এই সমস্ত খরচে রাশ না টানলে পুরসভা অচিরেই ভয়াবহ আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়বে।

গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর পুরসভার কর ও রাজস্ব আদায় আশানুরূপ ভাবে বেড়েছে। আদায় বাড়লেও ঋণের বোঝা এতটাই বেশি যে, তা সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। কেবল ঠিকাদারেরাই পাবেন এক হাজার কোটি টাকার বেশি। প্রায় এক বছর আগে থেকে পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশন বাবদ প্রাপ্য এককালীন টাকা পাচ্ছেন না। পুর অর্থ বিভাগের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘রাজস্ব আদায় বাড়লেও দেনার পরিমাণ অনেক বেশি।’’

পুরসভার অর্থ বিভাগের আধিকারিকদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, পুর তহবিল অন্য খাতে ব্যয় হওয়াতেই সমস্যা হচ্ছে। বিজেপির পুরপ্রতিনিধি সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘হিসাবের বাইরে খরচই পুরসভার আর্থিক দৈন্য দশার প্রধান কারণ।’’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুরসভার এক মেয়র পারিষদের কথায়, ‘‘খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে যতই বেশি আয় হোক না কেন, সমস্যা রয়েই যাবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE