এ বার তাই দিল্লি সরকারের পরামর্শ নিয়েই পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির ভোল পাল্টাতে চাইছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘দিল্লির সরকারি স্কুলগুলির ধাঁচে কলকাতার পুর বিদ্যালয়গুলিকে কী ভাবে সংস্কার করা যায়, সেই বিষয়ে মেয়র পারিষদ দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিশদে কথা বলবেন।’’
ফাইল চিত্র।
ক্ষমতায় আসার পরে দিল্লির সরকারি স্কুলগুলির আমূল সংস্কার করেছে আম আদমি পার্টি। ফলে গত কয়েক বছরে দেখা যাচ্ছে, দিল্লির সাধারণ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবকেরা বেসরকারি স্কুলের বদলে তাঁদের সন্তানদের ভর্তি করাচ্ছেন সরকারি স্কুলেই। অথচ কলকাতায় ছবিটা পুরোপুরি উল্টো। এখানে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলি রীতিমতো ধুঁকছে, স্কুলছুটের সংখ্যাও বাড়ছে। পুর স্কুলগুলির শিক্ষাদানের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির সংস্কার ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য দিল্লির আপ সরকারের পরামর্শ নেবে কলকাতা পুরসভা।
এর জন্য পুরসভার মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) সন্দীপন সাহার নেতৃত্বে শিক্ষা দফতরের তিন আধিকারিক সোমবার রাতেই দিল্লি রওনা দিয়েছেন। আজ, মঙ্গলবার দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তাঁরা। পুরসভা সূত্রের খবর, দিল্লির মডেলে কলকাতা পুরসভার অধীনে থাকা স্কুলগুলির কী ভাবে সংস্কার করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া হবে।
২০১৩ সালে দিল্লিতে আম আদমি পার্টি ক্ষমতায় আসার পরে আমূল সংস্কার করা হয় সেখানকার সরকারি স্কুলগুলির। পুরনো ভাঙা স্কুল ভবনের সংস্কার করা থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের মধ্যে সার্বিক শিক্ষার উন্নতি ঘটাতে বছরভর মূল্যায়ন চালু হয়েছে। গত কয়েক বছরে দিল্লির সরকারি স্কুলগুলির পঠনপাঠন ব্যবস্থার এতটাই উন্নতি হয়েছে যে, বেসরকারি স্কুল থেকে নাম কাটিয়ে সরকারি স্কুলে এনে বহু পড়ুয়াকে ভর্তি করাচ্ছেন তাদের অভিভাবকেরা।
সূত্রের খবর, অরবিন্দ কেজরীবালের দল দিল্লিতে ক্ষমতায় এসেই অতিশী মারলেনাকে শিক্ষা উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ করেছিল। দিল্লিতে শিক্ষা সংস্কারে অতিশী হলেন মূল স্থপতি। ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে আপ-এর ‘পলিসি ফরমেশন কমিটি’-র সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি, দলের রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটির ‘অ্যাপেক্স এগজিকিউটিভ বডি’-র সদস্য হন তিনি। ২০০১ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ স্থানাধিকারী হিসাবে সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে ইতিহাস নিয়ে স্নাতক হয়েছিলেন অতিশি। ২০০৩ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। ২০০৫ সালে অক্সফোর্ডের ম্যাগডালেন কলেজে তিনি যোগদান করেন ‘রোডস স্কলার’ হিসাবে।
উপমুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শদাতা হিসাবেও কাজ করেছেন অতিশী। প্রধানত শিক্ষা দফতরের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন তিনি। আর এই কাজটি তিনি করেছেন এক টাকা মাসিক বেতনে। এই দায়িত্ব পাওয়ার পরে তিনি দিল্লির সরকারি স্কুলের ভোল পাল্টে দিয়েছেন।
অতিশীর পরামর্শেই দিল্লি সরকার শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে করে ২৪ শতাংশ। সেই বিপুল অর্থ বরাদ্দ হয় স্কুলগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে। চালু হয় মিশন বুনিয়াদ, যোগাযোগ বাড়ে স্কুল-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা মিলে তৈরি করেন ‘হ্যাপিনেস কারিকুলাম’। এ ভাবেই ধীরে ধীরে সরকারি স্কুল পিছনে ফেলে দিয়েছে বেসরকারি স্কুলগুলিকে।
কিন্তু এর ঠিক বিপরীত ছবি কলকাতায়। এখানে পুরসভা পরিচালিত প্রায় ২৭২টি স্কুল রয়েছে। বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু মাধ্যম ছাড়াও একটি ওড়িয়া মাধ্যম স্কুলও রয়েছে। কিন্তু পুরসভা সূত্রের খবর, ওই সব স্কুলে ক্রমশ স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে। স্কুলগুলির শিক্ষাদানের মানও তেমন ভাল নয়। স্কুল ভবনগুলির ভাঙাচোরা অবস্থাও চোখে পড়ার মতো। অথচ প্রতি বছর শিক্ষাখাতে পুরসভাকে মোটা টাকা খরচ
করতে হয়।
এ বার তাই দিল্লি সরকারের পরামর্শ নিয়েই পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির ভোল পাল্টাতে চাইছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘দিল্লির সরকারি স্কুলগুলির ধাঁচে কলকাতার পুর বিদ্যালয়গুলিকে কী ভাবে সংস্কার করা যায়, সেই বিষয়ে মেয়র পারিষদ দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিশদে কথা বলবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy