ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার সদর দফতর তো বটেই, এমনকি বরো অফিস, শাখা অফিসগুলিতেও কর্মীদের গরহাজিরা নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ, বরো অফিসগুলিতে পুরকর্মীরা সময়ে অফিসে ঢোকেন না। আবার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অফিস ছেড়ে চলে যান। এর ফলে পুরসভার কাজে বিস্তর ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষত রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির অন্যতম কারণ বিভিন্ন বরো অফিসে পুরকর্মীদের সক্রিয় না থাকা।
পুরকর্মীদের এই ফাঁকির প্রবণতা দূর করতে, কাজে স্বচ্ছতা ও গতি আনতে পুর কমিশনার বিনোদ কুমার গত ১০ জুন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। বলা হয়েছে, পুরসভার শীর্ষ কর্তারা মাসে অন্তত পাঁচ দিন করে সদর দফতর, বরো অফিস ও বিভিন্ন শাখা অফিস, পাম্পিং স্টেশন, গ্যারাজ ইত্যাদি জায়গায় আচমকা পরিদর্শনে যাবেন। কেবল পরিদর্শনই নয়, সংশ্লিষ্ট আধিকারিক পরিদর্শন শেষে কী দেখলেন, তা মেয়রের কাছে সবিস্তার রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রিপোর্টে বত্রিশটি বিষয় (আইটেম) থাকবে। সংশ্লিষ্ট অফিস পরিদর্শন শেষে পুর আধিকারিক প্রতিটি তালিকা পূরণ করবেন। পুরসভা সূত্রের খবর, রিপোর্ট কার্ডের ওই তালিকায় অফিসের নাম, পরিদর্শনের সময় ও তারিখ, পরিদর্শকের নাম ও পরিচয়, যে দিন পরিদর্শন হল সেই দিনের কর্মী সংখ্যা, ওই বিভাগে কর্মী কত জন থাকার কথা, কোনও কর্মী নিয়মিত অফিসে অনুপস্থিত থাকলে তার বিবরণ, বার বার অনুপস্থিত থাকার পরে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না— সবিস্তার লিখে মেয়রকে জমা দিতে হবে।
মেয়র হিসাবে শপথ নেওয়ার পরেই ফিরহাদ হাকিম ঘোষণা করেছিলেন, পুরসভার কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে তিনি জোর দেবেন। পুরকর্মীদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণার বদল ঘটাতে চান মেয়র। পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুরসভার বিভিন্ন অফিস পরিদর্শন সংক্রান্ত যে বিজ্ঞপ্তি কমিশনার জারি করেছেন, তাতে পুরকর্মীদের দায়সারা ভাবে কাজ করার দিন শেষ। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অফিস পরিদর্শনের সময়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুরকর্মীরা কেমন আচরণ করছেন, তা-ও নথিবদ্ধ করবেন পরিদর্শক। পুরসভা সূত্রের খবর, সদর দফতর ছাড়া অন্যান্য বরো অফিস বা শাখা অফিসে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে দিনের পর দিন কিছু পুরকর্মী গরহাজির থাকেন। পরিদর্শকেরা তেমন কর্মীদের সন্ধান পেলে রিপোর্টে বিবরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুর কমিশনার বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্পেশ্যাল মিউনিসিপ্যাল কমিশনার (সাধারণ ও উন্নয়ন), স্পেশ্যাল মিউনিসিপ্যাল কমিশনার (রেভিনিউ, পার্সোনেল ও সাপ্লাই), পুরসভার সেক্রেটারি ছাড়াও সমস্ত বিভাগের ডিজি-রা (ডিরেক্টর জেনারেল) পরিদর্শনে যাবেন। এ ছাড়াও, সিএমএফএ (চিফ মিউনিসিপ্যাল ফিনান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস) অফিসারও পুরসভার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টস অফিস পরিদর্শন করবেন। পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুরসভার কাজে গতি ও স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ বিভাগের কাজ নিয়ে অসন্তুষ্ট পুর কর্তৃপক্ষ। সময় মতো অফিস না আসা, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বাড়ির দিকে রওনা দেওয়ায় পুরসভার ক্ষতি হচ্ছে। এই ব্যবস্থা আর চলবে না। কাজ না করলে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy