ভুয়ো টিকা-কাণ্ডে রাজ্যকে ভর্ৎসনা হাি কোর্টের। —ফাইল চিত্র।
কসবা ভুয়ো টিকা-কাণ্ডে রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা কলকাতা হাই কোর্টের। কলকাতার বুকে এত বড় জালিয়াতির দায় প্রশাসন অস্বীকার করতে পারে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। ভুয়ো আইএএস সেজে দেবাঞ্জন দেব কী ভাবে গাড়িতে নীলবাতি লাগিয়ে ঘুরে বেড়ালেন দীর্ঘদিন এবং কলকাতা পুরসভারই বা টনক নড়ল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি।
ভুয়ো টিকা-কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। বিজেপি-র তরুণজ্যোতি তিওয়ারিও এ নিয়ে মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার তার শুনানিতে রাজ্যকে রীতিমতো তিরস্কার করেন বিচারপতি বিন্দল।
অভিযুক্ত দেবাঞ্জনের কীর্তি নিয়ে প্রতিদিনই কোনও না কোনও নতুন অভিযোগ উঠে আসছে। যে কারণে এই মামলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তিনিই এর শুনানি করতে চান বলে জানিয়েছেন বিচারপতি বিন্দল। তার পরই রাজ্য সরকার এবং কলকাতা পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, ‘‘দেবাঞ্জন যদি আইএএস হতেনও।নীলবাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে কী ভাবে ঘুরে বেড়ালেন? আইএএস হলেই কি নীলবাতি ব্যবহার করা যায়? এক জন লোক পুরসভার যুগ্ম কমিশনার সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, পুরসভার কমিশনার তখন কী করছিলেন? তিনিও চিনতে পারলেন না? ’’
নীলবাতির ব্যবহার নিয়েও রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন বিচারপতি বিন্দল। তিনি বলেন, ‘‘নীলবাতির ব্যবহার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে। তা মানা হচ্ছে না কেন? ’’ বর্তমানে রাজ্যে কারা কারা নীলবাতি ব্যবহার করেন, ২ জুলাইয়ের মধ্যে রাজ্যকে সেই তথ্য জানাতে বলেছেন তিনি। এ ছাড়াও দেবাঞ্জন মামলার তদন্ত কতদূর এগিয়েছে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে রাজ্য জানিয়েছে, এউ সংক্রান্তু আরও কিছু নথি জমা করবে তারা। তার জন্য একটু সময় দরকার। শুক্রবার ফের মামলার শুনানি হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে মোটরযান আইনে সংশোধন হওয়ার পর রাজ্য সরকারের তরফে যে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে সাফ বলা হয় যে, সংসদের সচিব, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল, অতিরিক্ত সলিশিটর জেনারেল, রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার, রাজ্যের প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান এবং দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের মতো জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রেই নীলবাতি ব্যবহারে অনুমতি দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও নীল-লাল, কোনও বাতিই ব্যবহার করেন না। তৃতীয় বার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর নেতা-মন্ত্রীদেরও তা নিয়ে সতর্ক করেছিলেন তিনি। দেবাঞ্জনকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ছিল, সৎ লোকজন এই ধরনের কাজ করেন। এতে প্রশাসনের কোনও ভূমিকা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy