Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ভূতে ভয় নয়, হ্যালোউইনে মজেছে শহর

কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়। আর আজ, বৃহস্পতিবার পশ্চিমী দেশগুলিতে পালিত হয় হ্যালোউইন। প্রয়াত প্রিয়জনের স্মরণে এই উৎসব শুরু হলেও এখন এর মজাদার রূপটিই বেশি জনপ্রিয়।

 হাঁউ-মাউ-খাঁউ: হ্যালোউইনের কেনাকাটায় ব্যস্ত খুদে। বুধবার, নিউ মার্কেটের একটি দোকানে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

হাঁউ-মাউ-খাঁউ: হ্যালোউইনের কেনাকাটায় ব্যস্ত খুদে। বুধবার, নিউ মার্কেটের একটি দোকানে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২১
Share: Save:

সামনেই ঝুলছে একটি রক্তাক্ত কাটা হাত। তার ঠিক পাশেই ড্রাকুলা। সামনে দাঁড়ালেই লাল হয়ে উঠছে ড্রাকুলার চোখ। সঙ্গে অদ্ভুতুড়ে আওয়াজ। আছে নানা রকমের ভূতও। তাদের সামনে হাততালি দিলেই ভেসে আসছে হাড় হিম করা হাসির আওয়াজ। কোনও ভুতুড়ে বাড়ি নয়, এই ছবি দেখা যাচ্ছে খাস কলকাতার কয়েকটি দোকানে।

কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়। আর আজ, বৃহস্পতিবার পশ্চিমী দেশগুলিতে পালিত হয় হ্যালোউইন। প্রয়াত প্রিয়জনের স্মরণে এই উৎসব শুরু হলেও এখন এর মজাদার রূপটিই বেশি জনপ্রিয়। ভূত-প্রেতের সাজে সাজেন ছোট থেকে বড় সকলেই। জমে ওঠে পার্টি। সেখানে খাবার-পানীয় থেকে গান, সবেতেই থাকে ভুতুড়ে ছোঁয়া। গা ছমছমে পরিবেশের এই উদ্‌যাপন এখন জনপ্রিয় হচ্ছে এ শহরেও। বিভিন্ন পসরা নিয়ে হাজির ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট, নিউ মার্কেটের বেশ কিছু দোকান। দোকানের বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এত দিন শুধু শহরের নাইটক্লাব বা বারেই হ্যালোউইন পালন করার চল বেশি ছিল। এখন ধীরে ধীরে হ্যালোউইন জায়গা করে নিয়েছে বাড়ির পার্টিতে। এমনকি, শহরের কয়েকটি স্কুলেও হ্যালোউইন পালন করা হচ্ছে।

সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের নার্সারির এক ছাত্রীর মা প্রীতি শর্মা এসেছিলেন ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের একটি দোকানে। প্রীতি বলেন, ‘‘মেয়ের জন্য একটা ভূতের মুখোশ কিনলাম। ওটা নিয়ে ও স্কুলে যাবে। হ্যালোউইন ডে-তে বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করবে স্কুলে।’’ ওই স্কুলেরই আর এক পড়ুয়ার অভিভাবক জানালেন, তাঁর মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। মেয়ের জন্য কস্টিউম কিনতে এসে কঙ্কালের মতো দেখতে একটি পোশাক পছন্দ হয়েছে তাঁর। এর সঙ্গে তিনি কিনলেন ভুতুড়ে নখ, দাঁত আর লম্বা কান।

ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের এক বিক্রেতা শাহিদ জাফর জানান, তিনি দোকানে মূলত উপহার সামগ্রী বিক্রি করেন। গত কয়েক বছর ধরে হ্যালোউইন-এ পশ্চিমী ভূত-প্রেতের মূর্তি, পোশাক বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, ‘‘গত চার-পাঁচ বছর ধরে হ্যালোউইনকে কেন্দ্র করে এই সব জিনিসের চাহিদা বেড়েছে। ভ্যাম্পায়ার, ড্রাকুলা, কঙ্কাল, ড্রাকুলার দাঁতের বিক্রি ভালই।’’ শাহিদ জানান, অনেক স্কুলের মন্তেসরি বা নার্সারি বিভাগে দিনটিকে মজার দিন হিসেবে পালন হচ্ছে।

কেউ কেউ আবার বাড়িতে হ্যালোউইনের পার্টির জন্য ঘর সাজাতে কিনতে এসেছেন মাকড়সার জাল, কফিন থেকে বেরিয়ে আসা ভূত। এমনই এক ক্রেতা অনিল আগরওয়াল বলেন, ‘‘গত বছর থেকে আমাদের আবাসনে এই দিনটি পালন করা হয়। হ্যালোউইনে সব থেকে মজার হল ‘ট্রিক অর ট্রিট।’ আবাসনের বাচ্চারা ভূতের পোশাক পরে ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে ঘুরে উপহার চায়। আমরা বাড়ি সাজাই নানা ভুতুড়ে জিনিস দিয়ে। বিশেষ খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়।’’

এই দিনটি মজার দিন হিসেবে পালন করাই যায় বলে মনে করেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এটাকে খ্রিষ্টানদের ভূত চতুর্দশী উৎসব বলা যায়। বাঙালিরা নকলনবিশ। তাই অনেক বাঙালিরাও এই উৎসব পালন করছেন। তবে মজার দিন

হিসেবে বাচ্চারা এই দিনটা পালন করলে ভালই লাগবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Festival Kolkata Haloween
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy