মঞ্চে পীযূষ গয়াল ও বাবুল সুপ্রিয়। — নিজস্ব চিত্র
আমন্ত্রণপত্রে মুখ্যমন্ত্রীর নাম না থাকা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা ছিলই। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধনের মঞ্চে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে সেই সংঘাত আরও বাড়ালের রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প এ রাজ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে না, এমন অভিযোগ তুলে একের পর এক তোপ দাগলেন। এমনকি, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প করতে গিয়ে রাজ্যের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে বলে উদ্বোধন মঞ্চ থেকেই তৃণমূল সরকারকে বৃহস্পতিবার কাঠগড়ায় তুলে গেলেন রেলমন্ত্রী।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধন মঞ্চকে কার্যত রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করলেন রেলমন্ত্রী। সেক্টর ফাইভ স্টেশনের অনুষ্ঠান মঞ্চে বাম সরকার এবং তৃণমূল সরকারের উদ্দেশে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস যখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল, তখন দু’টি দলই তাদের সমর্থন করেছে। কিন্তু কংগ্রেস কোনও দিনই এ রাজ্যে সে ভাবে উন্নয়নে শামিল হয়নি। মোদী সরকার আমাদের বলেছে, জমি পাওয়া গেলে এ রাজ্যে রেলের উন্নয়নে কোনও বাধা যেন না হয়।’’ অভিযোগ করেন, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ থেকে শুরু করে কেন্দ্রের কৃষকদের জন্য প্রকল্প, কোনও কিছুই মানছে না রাজ্য সরকার। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বাকি অংশ চালু করতে রাজ্য সরকারকে সম্পূর্ণ সহযোগিতার আর্জিও জানান রেলমন্ত্রী।
মেট্রোর উদ্বোধনের আমন্ত্রণপত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না থাকায় বিতর্ক শুরু হয়েছিল। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, ইচ্ছে করেই মুখ্যমন্ত্রীর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। দলের তরফে ইঙ্গিতও মিলেছিল যে, দলনেত্রীকে ডাকা হয়নি বলে কোনও নেতা-নেত্রীই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন না। তাই আমন্ত্রিত থাকলেও মন্ত্রী সুজিত বসু, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীদের কেউই অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, রেল মন্ত্রকের প্রোটোকল অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: সমাবর্তন-সঙ্ঘাত তুঙ্গে, উপাচার্যকে শো কজ, শুরু বরখাস্ত করার ‘বিবেচনা’ও
বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে প্রথমে কেন্দ্রীয় পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য পেশ করেন। এর পর রেলমন্ত্রী প্রথম পর্যায়ের এই ছ’টি স্টেশন সরোজিনী নাইডুকে উৎসর্গ করেন। বলেন, ‘‘এই বাংলা শ্যামাপ্রসাদের মাটি। তিনি তাঁর নামে কিছু দিন আগে কলকাতা বন্দরের নামকরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আমি ভাগ্যবান যে এক মাসের মধ্যে কলকাতায় আসতে পেরেছি। সরোজিনী নাইডুর নামে এই মেট্রো প্রকল্প সমর্পিত করছি। শুধু শ্যামাপ্রসাদ নন, বহু বিজ্ঞানী ও বিশিষ্টজনেরা এই বাংলার মাটিতে জন্মেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথম থেকেই পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার-সহ গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিকাশে সাহায্য করেছেন। উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন।’’
অবশেষে সপ্ন হল সত্যি, এক নজরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো
গয়াল এ দিন বলেন, ‘‘এই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে। রাজ্য সরকার আপত্তি করায় ২০১২ সালে তা থমকে যায়। পরে রুট পরিবর্তন করে ২০১৫ সালে জোরকদমে কাজ শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত সাড়ে ছ’হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ছ’টি স্টেশন উদ্বোধন হলেও পুজোর আগেই ফুলবাগান পর্যন্ত মেট্রো চালু হয়ে যাবে।’’
আরও পড়ুন: বাদুড়িয়ায় ‘কলেজ’ খুলে প্রশিক্ষণ, প্রৌঢ়দের ‘বাংলা গ্যাং’ ত্রাস পূর্ব উপকূলের ট্রেনে
এ দিন বিকেল পাঁচটা দশ নাগাদ রেলমন্ত্রী সল্টলেক সেক্টর ফাইভের অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। ছিলেন বাবুল সুপ্রিয় এবং মেট্রোর কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পদস্থ আধিকারিকরাও। রেলমন্ত্রীর ভাষণ চলে প্রায় এক ঘণ্টা। এর পর মেট্রোয় চড়ে এই সূচনা করেন মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তবে যাত্রীদের জন্য মেট্রো চলাচল শুরু হবে আগামিকাল, শুক্রবার থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy