নিতাই নস্কর
ব্যবসার কাজ সেরে শুক্রবার সকালেই বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল স্বামীর। কিন্তু তার আগেই ভোরবেলা হোয়াটসঅ্যাপে পুলিশের পাঠানো ছবি দেখে স্বামীর মৃতদেহ শনাক্ত করতে হল স্ত্রীকে!
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অসমের ধেমাজিতে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে হরিদেবপুরের বাসিন্দা নিতাই নস্করের (৫০)। মারা গিয়েছেন তাঁর গাড়ির চালক সোনু ঝা-ও। গুরুতর জখম গাড়ির আরও দুই যাত্রী। স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে এ দিন সকালেই অসমের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন নিতাইবাবুর স্ত্রী সোমা নস্কর। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে দেহরাদূনের কলেজে পাঠরতা দুই মেয়েও কলকাতায় ফিরে আসেন।
এ দিন হরিদেবপুরের ব্যানার্জিপাড়ায় নিতাইবাবুর ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে রয়েছেন বড় মেয়ে সোনিয়া। তিনি বলেন, ‘‘ভোরে ঘুম ভেঙে শুনলাম, বাবা আর নেই! এখনও কিছু বুঝতে পারছি না। খবর পেয়ে বোনরাও চলে আসছে।’’ চা পাতা তোলার পরে তা কাটা হয় যে যন্ত্রে, সেটাই তৈরি করতেন নিতাইবাবু। নিউ আলিপুর ও মহেশতলায় রয়েছে তাঁর কারখানা। নিতাইবাবুর শ্যালিকা হেনা মুন্সি বলেন, ‘‘মেশিন সরবরাহের জন্য প্রায়ই অসমের বিভিন্ন জায়গায় যেতেন জামাইবাবু। এ বারও তেমনই গিয়েছিলেন।’’
ওই ব্যবসায়ীর পরিবার সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে যন্ত্র সরবরাহের কাজেই উজানি অসম ও ইটাহারে গিয়েছিলেন নিতাইবাবু। কাজ সেরে ওই দিন রাত ১০টার পরে স্ত্রী সোমাদেবীকে ফোনও করেছিলেন। এর পরে এ দিন ভোরে অসমের চা বাগানের এক কর্মীই প্রথম ফোন করে দুর্ঘটনার খবর জানান সোমাদেবীকে। তার পরে অসম পুলিশ ফোন করে সোমাদেবীকে নিতাইবাবুর ছবি পাঠিয়ে দেহ শনাক্ত করায়। ধেমাজির পুলিশ সুপার রাকেশ রেড্ডি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ইটানগর থেকে ডিব্রুগড়ের দিকে আসছিল নিতাইবাবুর গাড়িটি। তাতে মোট চার জন আরোহী ছিলেন। রাত ২টো নাগাদ শিলাপথার ও ধেমাজির সীমানায় মরাঢল এলাকায় কানি বিল নদীর উপরে থাকা সেতুর বাঁকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি জলে পড়ে যায়। স্থানীয়দের থেকে খবর পেয়ে ধেমাজি থানার পুলিশ রাত ৩টে নাগাদ গাড়ি থেকে চার জনকে উদ্ধার করে। তবে ঘটনাস্থলেই নিতাইবাবু ও গাড়িচালকের মৃত্যু হয়।
বাবার মৃত্যুর খবর বিশ্বাস করতে পারছেন না সোনিয়া। কোনও ভাবে নিজেকে সামলে নিয়ে বারবার মাসির কাছে তিনি জানতে চাইছেন, ‘‘মা ঠিক আছে তো?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy