চলছে খননকার্য।—ফাইল চিত্র।
আশঙ্কার ‘৫০ মিটারে’ পা রেখেছে বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ। মাসখানেক আগে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময়ে বিপর্যয়ের জেরে বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল এই অংশেই। সপ্তাহ দুয়েক আগে নতুন করে পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরুর পরে তাই অনেক বেশি সতর্ক মেট্রোকর্তারা।
দুর্গা পিতুরি লেন, সেকরাপাড়া লেন এবং গৌর দে লেনের একাধিক জীর্ণ বাড়ির নীচের পথ নিরাপদে পার করাই এখন বড় পরীক্ষা মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে। বিপর্যয় কাটিয়ে উঠে সুড়ঙ্গ খননের দ্বিতীয় পর্বে হংকংয়ের বিশেষজ্ঞ জন ইন্ডিকটের নেতৃত্বাধীন কমিটি আগেই পঞ্চাশ মিটারের লক্ষ্যমাত্রা মেনে এগোনোর ফর্মুলা ঠিক করে দিয়েছে। আপাতত সেই পরামর্শ মেনেই অল্প অল্প করে এগোচ্ছে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ।
সপ্তাহ দুই আগে নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট সংলগ্ন এলাকার নীচে খনন শুরু করার পরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১০০ মিটার পথ পেরিয়েছে টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘ঊর্বী’। গত সপ্তাহে বৌবাজারের চৈতন সেন লেন লাগোয়া অংশে ভূগর্ভে ঢুকেছিল টিবিএম। ওই অংশেও একাধিক জীর্ণ বাড়ি রয়েছে। তবে বড় কোনও বিপর্যয় ছাড়াই নির্বিঘ্নে তা পেরিয়ে এসেছে ওই যন্ত্র।
মেট্রোকর্তারা আশাবাদী, যে ভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তাতে বাকি পথও নির্বিঘ্নে পেরোনো যাবে। তবে, মাস কয়েক আগের বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে সতর্ক নজরদারি চালানো হচ্ছে। একাধিক পুরনো বাড়িতে বসানো হয়েছে টিল্ট মিটার এবং ক্র্যাক মিটার। বাড়ি হেলে পড়ার বা ফাটল বৃদ্ধি পাওয়ার ন্যূনতম আশঙ্কা দেখা দিলে তার আভাস দেবে ওই যন্ত্র। ছ’ঘণ্টা অন্তর, দিনে চার বার করে পাঠ (রিডিং) নেওয়া হচ্ছে যন্ত্রের। এ ছাড়া ১০টির বেশি বাড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সুড়ঙ্গ খননের সময়ে জলে মাটি ধুয়ে যাওয়াতেই গত অগস্টে বিপত্তি দেখা দিয়েছিল বৌবাজারে। জল-কাদা মেশানো মাটি টিবিএমের আস্তরণ ফুঁড়ে ঢুকে পড়তে শুরু করেছিল নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে। ওই ধরনের বিপর্যয়ের যাতে পুনরাবৃত্তি না-হয়, তার জন্য অনেক আগে থেকেই টিবিএম ঊর্বী-তে একাধিক নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করা হয়েছে।
যন্ত্রে থাকছে ত্রিস্তরীয় বিশেষ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এ ছাড়া নরম মাটি যাতে ধুয়ে যেতে না পারে, সে জন্য থাকছে অতি দ্রুত ‘গ্রাউট’ করার ব্যবস্থাও। যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক পাম্প ছাড়াও থাকছে বিশেষ পলিইউরেথিন গ্রাউট করার প্রযুক্তি। সাধারণত সিমেন্ট, বেন্টোনাইট-সহ একাধিক রাসায়নিকের মিশ্রণকে জলে গুলে যন্ত্রের সাহায্যে পাঠানোকেই বলে গ্রাউট। রাসায়নিকের ওই মিশ্রণ দ্রুত জমে গিয়ে উল্টো দিক থেকে আসা জলের প্রবাহকে ঠেকিয়ে দেয়। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গের কাজের দায়িত্বে থাকা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দাবি, নতুন প্রযুক্তির গ্রাউট-মিশ্রণ জলের প্রবাহ ঠেকাতে অনেক বেশি কার্যকরী। নিজের আয়তনের দশ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়া ওই গ্রাউট ব্যবহার করা হবে সুড়ঙ্গের উপরের আবরণ তৈরিতে। ফলে মাটি বসে যাওয়ার আশঙ্কা কার্যত থাকবে না বলেই দাবি মেট্রোকর্তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy