মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকেই রাজ্যের প্রস্তাবিত রুটে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প করার ব্যাপারে নীতিগত সায় দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। দু’জনেই বলেছিলেন, দ্রুত কাজ শেষ করতে হাতে হাত মিলিয়ে এগোবে কেন্দ্র ও রাজ্য। সেই আশ্বাস যে শুধু মুখের কথা নয়, তারই প্রমাণ মিলল চলতি সপ্তাহে।
২০ অগস্ট ওই বৈঠকের প্রেক্ষিতে প্রকল্পে কী কী জট ছাড়াতে হবে ও নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে হলে তার সময়সীমাই বা কী হতে পারে— তার প্রস্তাব পাঠিয়ে রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)। ২৩ সেপ্টেম্বর রাজ্যের সঙ্গে ফের বৈঠক। সেখানে সব জট কাটানোর অন্তত সম্ভাব্য সময় চূড়ান্ত করতেই রাজ্যের কাছে ওই তালিকা পাঠিয়েছে তারা।
সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ, বৌবাজার, লালদিঘি হয়ে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রস্তাব অনুমোদন পায় ২০০৮ সালে। কিন্তু পুরনো মেট্রোর সেন্ট্রাল স্টেশনের কাছে নতুন স্টেশন করা নিয়ে জমিজট তৈরি হয়। সমস্যা হয় মহাকরণের কাছে স্টেশন তৈরি নিয়েও। শুরু হয় রাজ্য ও কেন্দ্রের চাপান-উতোর। এখনও বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারাধীন। রাজ্য প্রস্তাব দিয়েছিল, সেন্ট্রালের আগেই বৌবাজার থেকে হিন্দ সিনেমার সামনে দিয়ে এস এন ব্যানার্জি রোড, ধর্মতলা ট্রামডিপো হয়ে লালদিঘির কাছে পৌঁছক মেট্রো। কিন্তু তাতে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ৭৬৪ কোটি টাকার দায়ভার কে নেবে, তা নিয়েও চাপান-উতোর শুরু হয়। হাইকোর্টে মামলার শুনানিতেও একই প্রশ্ন ওঠে। ২০ অগস্ট অবশ্য রেলমন্ত্রী জানান, রেলই এই অতিরিক্ত খরচ বইবে। তার পরেই কাজ দ্রুত শেষ করতে কোমর বেঁধে নেমেছে রেল মন্ত্রক।
রাজ্য পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, চিঠিতে কেএমআরসিএল দত্তাবাদ, মহাকরণ, এসপ্ল্যানেড, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, শিয়ালদহ ও হাওড়া ময়দান স্টেশন তৈরির জট কাটাতে সময় বেঁধে দিয়েছে। তার জন্য নিকাশি পাইপ, ফোনের কেব্ল, ট্রামলাইন সরানো, এসপ্ল্যানেডে হকার উচ্ছেদ, গাছ কাটা বা শিয়ালদহে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট বন্ধ রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই নিতে চাইছে কেএমআরসিএল। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার নিজেদের হাতে নিতেও চাইছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তার যাবতীয় জটও এই সময়সীমার মধ্যে কাটানোর প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। কোন কোন দফতর সংশ্লিষ্ট জট কাটানোর দায়িত্বে, চিঠিতে বলা আছে তা-ও। কেএমআরসিএল কর্তাদের মতে, প্রস্তাবিত রুটে মেট্রো চালাতে তার দু’পাশে অন্তত ২০ মিটার পর্যন্ত যাতে বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদন না করা হয়, তার জন্য কলকাতা পুরসভাকেও দ্রুত নির্দেশ দিতে হবে।
প্রস্তাবিত সময়সীমার সঙ্গে রাজ্য সহমত কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে কেএমআরসিএল। রাজ্য পরিবহণ কর্তারাও মেট্রো কর্ত়ৃপক্ষের দ্রুততায় নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করায় আশাবাদী। তবে তাঁদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রস্তাবিত রুটের ১০০ মিটারের মধ্যে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের নির্দিষ্ট করা তিনটি ঐতিহ্যবাহী সৌধ রয়েছে। তাই কাজ শুরুর আগেই তাদের অনুমতি নিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন ওই কর্তারা। এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা কাজ এগিয়ে ফেললাম। কিন্তু ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ মেট্রোর কাজের জন্য খোঁড়ার অনুমতিই দিল না। তখন পুরোটাই পণ্ডশ্রম হবে। তাই আমরা আগে অনুমতি নেওয়ার পক্ষপাতী।’’ এ নিয়ে ২৩ তারিখের বৈঠকে তাঁরা মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান পরিবহণ কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy