এক দিকে ভূমিকম্প, অন্য দিকে গৃহযুদ্ধ! দুইয়ের ধাক্কায় বেসামাল মায়ানমার। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। চারদিকে ধ্বংসস্তূপ। বিভিন্ন দেশ থেকে সাহায্য পাঠানো হচ্ছে। তবে এ সবের মধ্যেও মায়ানমারের জুন্টা সেনা কিছু কিছু জায়গায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনার নিন্দা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। এই পরিস্থিতিতেও জুন্টাবাহিনীর হামলা চালিয়ে যাওয়াকে ‘জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে জানিয়েছে তারা।
রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুস সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’কে বলেন, “ভূমিকম্পের পরে যখন সবাই আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে, তখনও (জুন্টার) সেনাবাহিনী বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য!” এই পরিস্থিতিতে জুন্টা সেনা সরকারের সমস্ত সামরিক অভিযান অবিলম্বে বন্ধ রাখা উচিত বলে মনে করছেন তিনি। টমের বক্তব্য, জুন্টা সেনার উপর যাদের প্রভাব রয়েছে, তাদের উচিত এই বিষয়ে জুন্টার উপর চাপ বৃদ্ধি করা। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই হামলা যে গ্রহণযোগ্য নয়, তা জুন্টা সেনার কাছে স্পষ্ট হওয়া দরকার বলে মনে করছেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, মায়ানমারের উত্তর দিকে শান প্রদেশের নাংচোয় শুক্রবার বোমারু বিমানের হানায় অন্তত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। ভূমিকম্পের তিন ঘণ্টার মধ্যেই ওই হামলা চলেছিল বলে দাবি করা হচ্ছে। উত্তর-পশ্চিম মায়ানমারের সাগাইং প্রদেশের চ্যাং-ইউ শহরেও আকাশপথে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এই অঞ্চলটি জুন্টা সেনার বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দখলে রয়েছে। তাইল্যান্ড সীমান্তের কাছাকাছি কিছু এলাকাতেও বোমাবর্ষণ হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
আরও পড়ুন:
ঘটনাচক্রে, রবিবার সকালেই জানা যায়, জুন্টা-বিরোধী পিপল্স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ৩০ মার্চ থেকে আগামী দু’সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ এবং ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলবে বলে জানিয়েছে জুন্টা-বিরোধী ওই সশস্ত্র গোষ্ঠী। শুক্রবারের ভূমিকম্পের পর বেশ কিছু জোরালো ‘আফটারশক’ অনুভূত হয়েছে মায়ানমারে। সেনা সরকারের হিসাবে ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত ১৬৪৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নীচে আরও অনেকে আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।