ফাইল চিত্র।
শহরের ফুটপাতে সদ্য রোপিত গাছের চারাগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে ‘ট্রি-গার্ড’ বা বাঁশের বেড়া তৈরি করে দেয় কলকাতা পুরসভা। সেই বেড়া তৈরির পিছনে পুরসভার ব্যয় নিয়ে অডিট রিপোর্টে প্রশ্ন ওঠায় চলতি আর্থিক বছরে এই খাতে পুর কর্তৃপক্ষ আর একটি টাকাও খরচ করবেন না বলে জানা গিয়েছে।
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় বনসৃজন প্রকল্পে যে সমস্ত গাছের চারা রোপণ করা হয়, সেগুলি রক্ষা করার জন্য বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় ‘ট্রি-গার্ড’ বা বেড়া। তাতে চারাগুলি সহজে নষ্ট হয় না। গত অর্থবর্ষে (২০১৯-’২০) ১৬টি বরো মিলিয়ে এ হেন বেড়া তৈরি করতে প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা খরচ করেছিল পুরসভা। আমপানের পরে সবুজায়ন প্রকল্পে কলকাতায় প্রচুর গাছ লাগানো হয়েছে। সেই সব গাছের জন্য চলতি অর্থবর্ষে বেড়া তৈরির প্রয়োজন থাকলেও আর্থিক সঙ্কটের কারণে তা করা যায়নি। তবে গত অর্থবর্ষে এই খাতে যে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করা হয়েছিল, তা আদৌ যুক্তিযুক্ত কি না, সেই প্রশ্নই তোলা হয়েছে ওই রিপোর্টে। তার পরেই বেড়া তৈরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য তথা উদ্যান দফতরের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, “এটা ঠিকই যে, ট্রি-গার্ড তৈরিতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়েছে। সেই খরচ নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। কিন্তু গাছ বাঁচাতে এর কোনও বিকল্প নেই। আগামী বছর এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’
পুরসভার উদ্যান দফতরের আধিকারিকেরা জানান, কলকাতা শহরে গাছ বাঁচাতে হলে বিশেষ ব্যবস্থা নিতেই হবে। তবে তা খরচসাপেক্ষ। সেই কারণে চলতি অর্থবর্ষে ছোট চারার পরিবর্তে বড় চারা বেশি করে লাগানো হয়েছে, যাতে চট করে সেগুলি নষ্ট না হয়। করোনা আবহ এবং লকডাউনের কারণে এ বছর বেড়া তৈরির কাজ সে ভাবে হয়নি।
পুর আধিকারিকেরা জানান, আমপানে কলকাতা শহরে প্রচুর গাছ পড়েছিল। সবুজের সেই ঘাটতি পূরণে শহরে লাগানো হয়েছে অনেক গাছ। সেই চারাগুলি বাঁচাতে বেড়া দেওয়ার দরকার ছিল। লকডাউনের জেরে পুরসভার আয় একেবারে তলানিতে ঠেকায় বেড়া তৈরিতে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অডিট রিপোর্টেও এ নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল।
সাধারণত, গাছ বাঁচাতে যে সমস্ত বেড়া তৈরি করা হয়, সেগুলি বছরখানেকের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। তখন নতুন করে বেড়া তৈরি করতে গিয়ে খরচের পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়। তবে পুরসভার উদ্যান দফতর বনসৃজনে যে সমস্ত গাছ লাগায়, সেগুলিকে রক্ষা করাটাও জরুরি। এ বিষয়ে নতুন করে বিকল্প কিছু ভাবতে হবে বলে মত পুর আধিকারিকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy