প্রতীকী ছবি।
শহর জুড়ে পথকুকুরদের টিকাকরণএবং নির্বীজকরণ প্রকল্প বাবদ প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর প্রায়৮৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। দফতরের তরফে কলকাতা পুরসভাকে বলা হয়েছিল, ওই বরাদ্দের মধ্যে প্রায় ৪৩ লক্ষ টাকা কুকুরদেরঅস্ত্রোপচার বাবদ চিকিৎসকদের জন্য খরচ করতে হবে। কিন্তু পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে প্রাণিসম্পদ দফতরকে পাল্টা জানানো হয়েছিল, অস্ত্রোপচার পুরসভা নিজস্ব চিকিৎসকদের দিয়ে করাবে। পরিবর্তে ওই ৪৩ লক্ষ টাকা প্রচারের কাজে খরচ করতে চায় তারা। যদিও সেই প্রস্তাব প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর নাকচ করে দিয়েছে।
শুক্রবার প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বিবেক কুমার বলেন, ‘‘পুরসভা প্রচারের জন্য যে বাড়তি টাকা খরচ করতে চেয়েছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। সেই টাকায় কুকুরের নির্বীজকরণের সংখ্যা বাড়াতে বলা হয়েছে। আমরা প্রচারের জন্য আলাদা টাকা বরাদ্দ করেছি। প্রচার যে কোনও প্রকল্পের বড় অংশ। কিন্তু এর জন্য বাড়তি টাকা খরচ করতে পারবে না পুরসভা।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, যে পদ্ধতিতে পুর স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে প্রাণিসম্পদ দফতরে প্রকল্পের খরচের জন্য সংশোধিত তালিকা পাঠানো হয়েছিল, তা মেয়র পরিষদেরবৈঠকে উত্থাপিত হওয়ার কথা। কিন্তু মেয়র পরিষদের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনাই হয়নি। পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রকল্পের জন্য টাকা বরাদ্দ করেছে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর। পথকুকুরদের টিকাকরণ ও নির্বীজকরণের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৮৯ লক্ষ টাকার কতটা, কোন খাতে ব্যয় করতে হবে, তা-ও বেঁধে দিয়েছে তারা। এ ক্ষেত্রেপুরসভা ওই খরচের তালিকা সংশোধন করতে চাইলে মেয়র পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাব পাঠানো উচিত ছিল। পুরসভার নিজস্ব প্রাণী চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র তিন জন। শহরে পথকুকুরের সংখ্যা প্রায় ৮৬ হাজার। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে শিবির করে এত বিপুল সংখ্যক পথকুকুরের নির্বীজকরণ কি ওই তিন জন চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব? পাশাপাশি, ৮৯ লক্ষ টাকার মধ্যে প্রচারের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১৯ লক্ষ। তা-ও কেন প্রচারের জন্য আলাদা টাকা খরচ করতে হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
সিপিএম কাউন্সিলর মধুছন্দা দেবের অভিযোগ, ‘‘এই প্রকল্পের মূল কাজ পথকুকুরদের নির্বীজকরণ। শহরে যে হারে পথকুকুরের সংখ্যা বাড়ছে, তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে আগামী দিনে ভয়াবহ বিপদ। বরাদ্দকৃত অর্থ মূল খাতে খরচ নাকরা মানে আসল কাজই পণ্ড হওয়া।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওই টাকা পুরসভা অন্য খাতে ব্যয় করতে চাইলে তা মেয়র পরিষদের বৈঠকে গৃহীত হওয়া দরকার। তা না হলে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।’’
বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘এক মাসেরও বেশি আগে ঘটা করে স্টার থিয়েটারে এই প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হল। কিন্তু আসল কাজই শুরু হয়নি। তার উপরে আসল কাজের টাকা প্রচারে ব্যয় করা ভস্মে ঘি ঢালার সমতুল্য।’’ কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের অভিযোগ, ‘‘প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর আপত্তি না জানালে মোটা টাকা নয়ছয় হতে পারত।’’ পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ যদিও বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে ৪৩ লক্ষ টাকা প্রচারের জন্য খরচ করার প্রস্তাব আমাদের তরফে পাঠানো হয়নি। এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। এত টাকা প্রচারের জন্য খরচ হয় নাকি?’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy