ফাইল চিত্র।
কিছু হলেই কমিটি গঠনের রীতি নতুন নয়। রাজ্যের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল মসনদে বসার পর থেকেও বিভিন্ন বিষয়ে কমিটি গঠন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, সমস্যার সমাধানে কমিটি কী কাজ করল, তা কতটা ফলপ্রসূ হল— সেই সব বিষয়ে আর কিছু জানা যায় না। ক্ষমতাসীন দল অবশ্য বিরোধীদের এই সমালোচনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। আর তারই নিদর্শন, শহরে জল জমা-সহ নিকাশি পরিকাঠামোর দেখাশোনা, উন্নয়ন-সহ যাবতীয় কাজের জন্য পূর্ণাঙ্গ দফতর থাকা সত্ত্বেও (সুয়ারেজ অ্যান্ড ড্রেনেজ) কিছু দিন আগে ফের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়েছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ।
গত মাসে গঠিত ওই কমিটি শহরে জল জমার সমস্যার কী ভাবে সমাধান করা যায়, সে ব্যাপারে পরিকল্পনা গ্রহণ করবে। তার জন্য সদস্যেরা মাসের প্রথম ও তৃতীয় বুধবার নিয়মিত নিজেদের মধ্যে বৈঠক করবেন। কমিটি গঠনের নেপথ্যে পুর কর্তৃপক্ষের যুক্তি হল, জমা জল সরানোর সমস্যাটি একক ভাবে কোনও দফতরের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। তাই বিভিন্ন দফতরের মধ্যে আন্তঃ সমন্বয় গড়ে তোলা প্রয়োজন। সে কারণে পুর কমিশনার, স্পেশ্যাল পুর কমিশনার, পুর অর্থ দফতরের মুখ্য আধিকারিক-সহ আরও চারটি দফতরের (সিভিল, নিকাশি, নগর পরিকল্পনা, কলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম) পুরকর্তা ওই কমিটির সদস্য। আর সেচ দফতরের এক জন প্রতিনিধিও কমিটিতে থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কমিটির সদস্যেরা বৈঠকে বসেছিলেন। কিন্তু পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়নি নিকাশি দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তারক সিংহকেই! কেন তাঁকে কমিটি গঠনের ব্যাপারে আগে থেকে কিছু জানানো হল না, তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। তা হলে কি জমা জল-সমস্যার সমাধানে তারকবাবুর প্রতি ‘আস্থা’ নেই পুর কর্তৃপক্ষের? কারণ, প্রতি বছর বৃষ্টিতেই জল জমে শহরের বেহাল অবস্থা হয়। চলতি বর্ষাতেও ব্যতিক্রম হয়নি। সে কারণেই তারকবাবুর ‘নম্বর’ কাটা গিয়েছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
যদিও সেই জল্পনা পুরোপুরি উড়িয়ে তারকবাবু জানাচ্ছেন, এর মধ্যে বিতর্ক খোঁজা অর্থহীন। কারণ, পুর আইন অনুযায়ী কমিটি গঠনের ক্ষমতা পুর কমিশনারের রয়েছেই। তারকবাবুর কথায়, ‘‘উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের বিষয়টি আগে জানতাম না ঠিকই। তবে জানাটা বাধ্যতামূলকও নয়। কারণ, আইনবলে পুর কর্তৃপক্ষ এমন কমিটি তৈরি করতেই পারেন।’’ কিন্তু এতে নিকাশি সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে কোথাও ফাঁক তৈরি হবে না? কারণ নিকাশি দফতর এক ভাবে কাজ করছে, আর উচ্চ পর্যায়ের কমিটি আর এক ভাবে কাজ করছে, তাতে তো সমস্যা তৈরির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
তারকবাবুর উত্তর, ‘‘একদমই সমস্যা হবে না। কারণ বৈঠকের পরে কমিটি কী কী সিদ্ধান্ত নিল বা নিচ্ছে, সে ব্যাপারে আমাদের জানায়। কমিটির কোনও প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু বলার থাকলে তখন সেটা বলি। সেই অনুযায়ী কমিটি ওই প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, কমিটি যে কাজ করছে, তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। কারণ ভবানীপুরে উপনির্বাচনের দিন বৃষ্টি সত্ত্বেও জমা জলের ভোগান্তি পোহাতে হয়নি শহরবাসীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy