—ফাইল চিত্র।
কর্মী নিয়োগে ধর্মীয় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া পুরনো নিয়োগ বিধি বদল করল কলকাতা পুরসভা। এখন থেকে কলকাতা পুরসভার কোনও পদেই নিয়োগের ক্ষেত্রে ধর্মীয় পছন্দের কথা বলা হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবর্তন করা হয়েছে নিয়োগ বিধিও। যে কোনও কাজের জন্য যে কোনও ধর্মাবলম্বী প্রার্থীই আবেদন করতে পারবেন।
এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুর প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘কয়েকটি নিয়োগ ঘিরে কিছু প্রশ্ন উঠেছিল। ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ধর্মীয় পছন্দের ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করা উচিত নয় বলেই আমরা মনে করেছি। তাই নিয়োগ বিধি বদলে দেওয়া হয়েছে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভার শ্মশান এবং হিন্দু কবরস্থানে কয়েক জন ফিল্ড ওয়ার্কার গ্রেড-থ্রি পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছিল, মুসলিম প্রার্থীদের আবেদন অগ্রাহ্য হবে। সেই বিজ্ঞাপন নিয়েই হইচই শুরু হয়। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, যদি কোনও মুসলিম প্রার্থীর যোগ্যতা থাকে, তা হলে তাঁকে কেন শ্মশানে বা হিন্দু কবরস্থানে নিয়োগ করা যাবে না। তবে যদি কোনও মুসলিম প্রার্থী এই কাজ করতে আগ্রহী না হন তা আলাদা কথা। কিন্তু কলকাতা পুরসভা এ ভাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে মুসলিম প্রার্থী গ্রাহ্য হবেন না, তা লিখতে পারে না।
এই বিতর্ক শুরু হতেই পুর কর্তারা বৈঠকে আলোচনা করেন। মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের বিজ্ঞাপনে কেন এমন প্রকাশিত হয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়, কলকাতা পুরসভার নিয়োগ বিধিতেই সংশ্লিষ্ট যোগ্যতার বিবরণ এমনই দেওয়া আছে। বহু বছর ধরে এ ভাবেই নিয়োগ চলছে। ঠিক যেভাবে মুসলিম কবরস্থানেও নিয়োগ হলে হিন্দু প্রার্থীদের আবেদন অগ্রাহ্য হবে বলে লিখে দেওয়া হয়। পুর কর্তারা জানাচ্ছেন, বছর কয়েক আগে কলকাতা পুরসভার উর্দু অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে শুধু মুসলিম প্রার্থীদের নিয়োগের বিজ্ঞাপন বেরোনোর পরেও হইচই হয়। এমনকি ওই পদগুলি কেন সংরক্ষণের আওতায় নেই, তা নিয়েও পুর দফতরে গুচ্ছ আবেদন পড়েছিল। সে সময়ও উর্দু অ্যাসিস্টান্ট পদের জন্য তফসিলি জাতি বা উপজাতির সংরক্ষণ কী ভাবে দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে বিতর্ক হয়। কারণ, সমস্ত সরকারি পদেই সংরক্ষণের নিয়ম কার্যকর হওয়ার কথা।
নিয়োগের বিজ্ঞাপন ও তার সংশোধনী ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন। কমিশনের সচিব মহম্মদ শাহিদ শনিবার বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভা যোগ্যতা মান নিয়ে যে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল বা পরে যে সংশোধনী প্রকাশ করতে বলেছিল, তা প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে যা বলার পুরসভা বলবে।’’ পুর প্রশাসনিক বোর্ডের এক কর্তার কথায়, ‘‘পুরনো প্রথা সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রগতিশীল পথে রয়েছি। এর পর আর বিতর্কের মানে হয় না। এতে সাম্প্রদায়িক শক্তিই জল বাতাস পাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy