কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও মেয়র পারিষদ তারক সিংহ । — ফাইল চিত্র।
মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ফোন মেয়র পরিষদ তারক সিংহকে। আর তাতেই ইস্তফার মত বদল করার ইঙ্গিত দিলেন তিনি। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে মেয়র পারিষদ তারক বলেছেন, ‘‘আমাকে মেয়র ফোন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, শহরে জমা জলের সমস্যা নিয়ে আমাকে কিছু বলেননি। দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন। আমাদের মধ্যে কোনও সমস্যা আগেও ছিল না, এখনও নেই।’’ মেয়রের ফোনের পর কি তিনি ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র পারিষদ (নিকাশি) বলেন, ‘‘আমার শরীর ভাল নেই। তাই আজ (শনিবার) হয়তো কোথাও যেতে পারব না। আর এখনও আমি আমার ইস্তফা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’’ তবে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, মেয়রের ফোনের পর মানভঞ্জন হয়েছে তারকের। তাই আর পদত্যাগ করে দল বা মেয়রের অস্বস্তি বৃদ্ধি করতে নারাজ প্রবীণ এই নেতা। অথচ শুক্রবার কলকাতা শহরে জমা জলের সমস্যা নিয়ে মেয়র ক্ষোভপ্রকাশ করায় শনিবারই পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন তারক।
তারককে পদত্যাগ করতে হলে পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়ের কাছে এসে নিজের ইস্তফাপত্র জমা দিতে হত। সেই ইস্তফাপত্র মালা গ্রহণ করলে তবেই তারক তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতেন। যে হেতু শনিবার তারক পুরসভায় আসবেন না বলে জানিয়েছেন, তাই তাঁর ইস্তফার সম্ভাবনাও নেই বলে মনে করছেন কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ। তা ছাড়া, মেয়র পারিষদ (নিকাশি) মাঝপথে পদত্যাগ করলে, পুর প্রশাসনের কাজকর্ম নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে যেত বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই মেয়রের সঙ্গে তারকের ফোনে কথা হওয়ার খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত, শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে কলকাতার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের থেকে জল জমে থাকার অভিযোগ পান ফিরহাদ। শহরের বিভিন্ন জল জমার অভিযোগ পেয়েই উপস্থিত আধিকারিকদের উদ্দেশে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মেয়র। প্রকাশ্যেই ফিরহাদ বলেছিলেন, ‘‘আধিকারিকেরা কোনও কাজ করেন না। ঘরে বসে থাকেন। আর এলাকায় এলাকায় জল জমে থাকে। আমাদের মিথ্যে রিপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।’’ ক্ষোভের সুরে তিনি আরও বলেন, ‘‘অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র এলাকা না ঘুরে এসেই বলেন কাজ হয়ে গিয়েছে। আমাকে তারকদা হোয়াট্সঅ্যাপ করে কোথাও জল জমে নেই বলে জানান। কিন্তু আমি অভিযোগ পাচ্ছি, জল জমে রয়েছে। আধিকারিকেরা কী করছেন?’’এর পরেই সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে জমা জল প্রসঙ্গে মেয়রের ক্ষোভপ্রকাশের পর তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলে তারক বলেন, ‘‘ওর (মেয়র) কথায় আমি অসম্মানিত হয়েছি। মেয়রের আমার উপর আস্থা নেই। তাই আমি পদত্যাগ করব।’’ কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতেই তারকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেন তাঁরা।
তবে শনিবার জমা জলের সমস্যা নিয়ে তারক বলেছেন, ‘‘শুক্রবার মেয়র ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠান শুরু করার আগেই শহরে জমা জলের সমস্যা নিয়ে আমরা পদক্ষেপ করেছিলাম। তবে যথাযথ সময়ে মেয়রকে জানাননি কলকাতা পুরসভার বেশ কিছু আধিকারিক। আবার কিছু ক্ষেত্রে মেয়র ও আমাকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল। যেই কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘কলকাতা পুলিশ এবং পুরসভার তালিকা ধরে শহরে জমা জল জলের যে অভিযোগ জানানো হয়েছিল, তার বেশির ভাগই নিরসন করে দেওয়া গিয়েছে।’’ শুক্রবার কলকাতা পুরসভার ভবনে উত্তাপের পরিবেশ তৈরি হলেও, শনিবার কিছুটা হলেও তা শীতল হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy