Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫

বিপদ জেনেও ‘বিপজ্জনক’ গাছ কাটায় উভয়সঙ্কট

পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে বিপজ্জনক গাছের সংখ্যা কত তা নিয়ে বছর তিনেক আগে বন দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তাতে শহরে বিপজ্জনক গাছের সংখ্যা ধরা পড়েছিল সাড়ে পাঁচশোর মতো।

যত কাণ্ড: রাস্তার পাশে বিপজ্জনক ভাবে হেলে যাওয়া এই গাছগুলি নিয়েই দোটানায় পুরসভা। রবিবার, রেড রোড (১) এবং উত্তর কলকাতার মদনমোহনতলা রোডে (২)। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক ও সুমন বল্লভ

যত কাণ্ড: রাস্তার পাশে বিপজ্জনক ভাবে হেলে যাওয়া এই গাছগুলি নিয়েই দোটানায় পুরসভা। রবিবার, রেড রোড (১) এবং উত্তর কলকাতার মদনমোহনতলা রোডে (২)। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক ও সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০১:৪০
Share: Save:

ফোর্ট উইলিয়ামের কাছে কে পি রোডের উপরে শুক্রবার গভীর রাতে গাছ উপড়ে মৃত্যু হয়েছে এক মোটরবাইক চালকের। তার পরে পুর প্রশাসনের অভ্যন্তরে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে সেই পুরনো প্রশ্ন। তা হল, শহরের বিপজ্জনক গাছগুলির কী অবস্থা? যদিও পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, যে গাছটি উপড়ে বাইকচালকের মৃত্যু হয়েছে সেটির রক্ষণাবেক্ষণ বা অন্য কোনও কিছুর সঙ্গে তাদের যোগ ছিল না। কারণ, ওই জমিটি পূর্ত দফতরের। অঞ্চলটি সেনাবাহিনীর আওতাধীন। তবুও বর্ষার মরসুমে বিপজ্জনক গাছের জন্য আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে কি না, সেই আশঙ্কা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে বিপজ্জনক গাছের সংখ্যা কত তা নিয়ে বছর তিনেক আগে বন দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তাতে শহরে বিপজ্জনক গাছের সংখ্যা ধরা পড়েছিল সাড়ে পাঁচশোর মতো। তখন সেগুলি কেটে ফেলার জন্য উদ্যোগীও হয়েছিল পুরসভা। কিন্তু, পরিবেশকর্মীদের একাংশের বাধায় সেই কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। তাঁদের যুক্তি ছিল, সবুজের পরিমাণ শহরে এমনিতেই কম। তার উপরে এতগুলি গাছ কেটে ফেললে সবুজ বলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, সেই সাড়ে পাঁচশো বিপজ্জনক গাছের মধ্যে পরবর্তীকালে ৩০টির মতো গাছ নিজের থেকেই পড়ে গিয়েছে। কিন্তু বাকিগুলি এখনও টিকে রয়েছে। ফলে এ ক্ষেত্রে ঠিক কী নীতি গ্রহণ করা হবে, তা নিয়ে উভয়সঙ্কটে পুর কর্তৃপক্ষ।

এক পদস্থ পুরকর্তা বলেন, ‘‘গাছগুলি অনেক পুরনো। সবই বড় গাছ। এতগুলো গাছ কেটে ফেলাও যৌক্তিক নয়।’’

কিন্তু বর্ষায় কোনও বিপদ হলে?

পুরসভার যুক্তি, বর্ষাকালে সাধারণত গাছ উপড়ায় না। বরং এপ্রিল-মে মাস নাগাদ কালবৈশাখীতে গাছ পড়ার আশঙ্কা থাকে। যদিও উদ্ভিদবিদদের একাংশের বক্তব্য, গাছ উপড়ে পড়ার একাধিক কারণ থাকতে পারে। ভারতীয় জাদুঘরে চাকুরিরত বটানিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেকশন) উদ্ভিদ-বিজ্ঞানী মানস ভৌমিক বলেন, ‘‘গাছের শিকড় মাটির কতটা গভীরে প্রবেশ করেছে বা গাছে পোকা ধরেছে কি না, এমন অনেক বিষয়ের উপরে গাছের ভারসাম্য নির্ভর করে। অনেক সময়ে মাটি আলগা হয়ে গেলে গাছ উপড়ে পড়ে। আবার গাছের আয়ু ফুরিয়ে গেলেও এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু কোন গাছের কী অবস্থা, সেটা জানার জন্য সরেজমিন পরীক্ষা করে দেখা দরকার।’’

সেই পরীক্ষা হয় ঠিকই। কিন্তু ওই খাতায়-কলমেই। তার ফলাফল সামনে আসে না। আর তাই বিপদও কাটে না সাড়ে পাঁচশো গাছের বিপজ্জনক গাছের।

অন্য বিষয়গুলি:

Tree Environment accident KMC Kolkata Municipal Corporation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy