Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪

রাজস্ব-ক্ষতির কারণ পুলিশই: পুরসভা

কমিটির সাত জন সদস্যের মধ্যে ইতিমধ্যেই পাঁচ জনের নাম ঠিক হয়ে গিয়েছে। দু’টি দফতর থেকে এখনও নাম আসেনি।

হাজরায় বেআইনি পার্কিং। ফাইল চিত্র

হাজরায় বেআইনি পার্কিং। ফাইল চিত্র

দেবাশিস ঘড়াই
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:২৯
Share: Save:

সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছিল। কিন্তু কলকাতা পুলিশের সঙ্গে এক প্রকার বিরোধে জড়িয়ে সেই সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হবে সে নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল পুরসভার অন্দরেই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য শহরের কোথায় কোথায় পার্কিং জ়োন তৈরি করা যায়, সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ‘মিউনিসিপ্যাল স্ট্রিটস টেকনিক্যাল কমিটি’ তৈরির কাজ শুরু করে দিল কলকাতা পুরসভা।

কমিটির সাত জন সদস্যের মধ্যে ইতিমধ্যেই পাঁচ জনের নাম ঠিক হয়ে গিয়েছে। দু’টি দফতর থেকে এখনও নাম আসেনি। সেগুলি চলে এলেই শহরে পার্কিং জ়োন তৈরি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজ শুরু করবে পুরসভা। এর ফলে পার্কিংয়ের ‘ভুল নীতি’র জন্য এত দিন ধরে যে রাজস্বের ক্ষতি হত, তা আর হবে না বলে আশা পুরকর্তাদের।

পুরসভার নথিতে সরাসরি বলা হয়েছে, কলকাতা পুলিশের পার্কিং সংক্রান্ত ‘ভুল’ সুপারিশের জন্যই এত দিন ধরে পুরসভার রাজস্বের ক্ষতি হয়ে আসছে। পুর নথি এ-ও বলছে, বেআইনি পার্কিংয়ের জন্য নাগরিকদের একাংশ পুরসভার দিকে আঙুল তুললেও তার পিছনে পুলিশের পার্কিং সুপারিশই দায়ী। তাই ১৯৮০ সালের কলকাতা পুর আইনের ৩৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী ‘মিউনিসিপ্যাল স্ট্রিটস টেকনিক্যাল কমিটি’ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ওই কমিটি পার্কিং সংক্রান্ত বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘কমিটি প্রতি মাসে এক বার করে বৈঠকে বসবে এবং তারাই যানবাহন চলাচল, পথচারীদের নিরাপত্তা-সহ পার্কিংয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ওই কমিটিতে পুলিশের এক জন প্রতিনিধিও থাকবেন।’’

কিন্তু পুরসভার রাজস্বের ক্ষতির পিছনে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা ঠিক কী?

পুর নথি বলছে, দিনের বেলার ‘ফি পার্কিং স্ট্রেচ/ জ়োন’ বা টাকা দিয়ে গাড়ি রাখার জন্য জায়গা চিহ্নিত করতে বরাবরই কলকাতা পুলিশের ডিসি-র (ট্র্যাফিক) অনুমোদন নেওয়া হয়। নতুন পার্কিং জ়োন তৈরির প্রয়োজন পড়লে পুরসভার পার্কিং দফতরের আধিকারিকেরা শহর জুড়ে পরিদর্শনের পরে একটি রিপোর্ট তৈরি করে অনুমোদনের জন্য পুলিশের কাছে পাঠায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের তরফে কোনও সুপারিশ পাওয়া যায় না বা পাওয়া গেলেও তা দেরিতে আসে। আবার অনেক ক্ষেত্রে এমন সুপারিশও পুলিশ দেয় যা ‘বাস্তবোচিত’ নয়। দেখা গিয়েছে, যেখানে পার্কিং করা উচিত নয় বলে পুলিশ সুপারিশ করেছে, সেখানেই ধারাবাহিক ভাবে বেআইনি পার্কিং হয়ে চলেছে। অথচ পুলিশের অনুমতি না পাওয়ার জন্য পুরসভা সেখান থেকে ফি আদায় করতে পারেনি। ফলে পুরসভার রাজস্বের ক্ষতি হয়েছে।

আবার যানবাহনের চলাচলের জন্য পুলিশ অনেক জায়গা থেকে পুরসভাকে ‘ফি পার্কিং জ়োন’ প্রত্যাহারও করতে বলেছে। পুরসভা সেগুলি প্রত্যাহার করলেও আসলে সেই সব জায়গায় অবাধে পার্কিং হয়েই চলেছে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘এই সমস্ত ঘটনা আমরা পুলিশকে জানালেও এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। ফলে অবাধে পার্কিং হওয়া সত্ত্বেও কেন পুলিশ আমাদের সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে পার্কিং প্রত্যাহার করতে বলেছে, তার যৌক্তিকতা আমরা খুঁজে পাইনি।’’

এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, ‘‘আমার এই বিষয়ে কিছু জানা নেই।’’ এ বিষয়ে ডিসি-র (ট্র্যাফিক) সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি। ডিসি (ট্র্যাফিক) সন্তোষ পাণ্ডেকে এ বিষয়ে একাধিক বার ফোন করা হলে প্রথমে তিনি ফোন ধরেননি। পরে ফোন ধরলেও বৈঠকে ব্যস্ত আছেন বলে জানান। বৈঠকের পরেও অবশ্য তিনি ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি মেসেজেরও।

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Kolkata Police Revenue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy