প্রতীকী ছবি।
পায়ে পায়ে কাঁটা! দেড় বৎসরাধিক কাল স্কুল বন্ধ থাকার পরে যদিও বা অফলাইন ক্লাস আংশিক চালু হল, ছন্দপতন যেন শেষই হচ্ছে না।
কলকাতা পুরসভার আসন্ন ভোটের জন্য কোনও কোনও স্কুলকে অফলাইন ক্লাস ফের বন্ধ করে দিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে অনলাইন ক্লাসে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস। পাল্টাতে হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্টের রুটিন। এমনকি নতুনদের ভর্তি প্রক্রিয়া কী ভাবে চলবে, তা নিয়েও চিন্তায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা।
১৯ ডিসেম্বর কলকাতার পুরভোট। সেই ভোটের জন্য শহরের বেশ কিছু স্কুলভবন ইতিমধ্যেই নিয়ে নিয়েছে প্রশাসন। স্কুলের অফলাইন পঠনপাঠন বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ভোটের কাজের জন্য কয়েক দিনের মধ্যে আরও কিছু স্কুলবাড়ি নেওয়া হবে। প্রধান শিক্ষকদের প্রশ্ন, অতিমারিতে প্রায় দু’বছর পরে স্কুল খুলেছে। এ বার কি ভোটের জন্য বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা যেত না? মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট চলবে প্রায় সারা ডিসেম্বর জুড়েই। স্কুলগুলিতে তার সঙ্গে রয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়া।
যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার জানান, পুরভোটের জন্য ২৯ নভেম্বর থেকেই তাঁদের স্কুলের স্বাভাবিক পঠনপাঠন বন্ধ। স্কুলের অফিসঘর বাদে ভোটের কাজের জন্য ইতিমধ্যেই পুরো ভবন নিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্কুলে চলছে ভোটের প্রশিক্ষণ। ঠিক হয়েছে, বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র বা ইভিএম রাখার স্ট্রংরুম হবে এই স্কুলেই। ডিসি, আরসি (ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার, রিসিভিং সেন্টার)-ও হচ্ছে তাঁদের স্কুল। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে স্কুল আবেদন জানিয়েছে, ২৫ ডিসেম্বরের পরে তারা টেস্ট নেবে। অমিতবাবু বলেন, “এখন এমন অবস্থা যে, স্কুল সংলগ্ন একটি ক্লাবঘর থেকে মিড-ডে মিলের সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।”
যোধপুর পার্ক গার্লসের প্রধান শিক্ষিকা মাধবী নন্দী বিশ্বাসও জানান, ফের অনলাইন-পাঠ শুরু হয়েছে। মাধবীদেবী বলেন, “সবে ছন্দে ফিরছিল স্কুল। আমরা সংসদ ও পর্ষদকে জানিয়েছি, টেস্ট নিতে পারব ২৭ ডিসেম্বরের পরে।” বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়দীপ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, রবিবার তাঁদের স্কুলেও শুরু হবে ভোটের প্রশিক্ষণ। তিনি বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীরা প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করতে স্কুলে আসছিল। তাদের পাঠ্যক্রম কী ভাবে শেষ হবে, সেই নিয়ে চিন্তায় আছি।” মিত্র ইনস্টিটিউশন ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, “ভোটের আগে, ১৭ ডিসেম্বর থেকে আমাদের স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যাবে। আগের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ভোটের কাজের পরে যখন স্কুলভবন ফেরত পাই, তখন পুরো চত্বর এতটাই নোংরা হয়ে থাকে যে, ওই অবস্থায় পড়ুয়াদের স্কুলে ফিরিয়ে আনা যায় না। এখন তো করোনা পরিস্থিতিতে আরও সাবধানি হয়ে পড়ুয়াদের স্কুলে ফিরিয়ে পঠনপাঠন শুরু করতে হবে।”
সিবিএসই এবং সিআইএসসিই বোর্ডের অধীন স্কুলগুলোতে চলছে দশম ও দ্বাদশের প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা। ওই সব স্কুলের অধ্যক্ষেরা জানাচ্ছেন, এই দুই বোর্ডের অধীন বেসরকারি স্কুলগুলিকেও অতীতে ভোটের কাজের জন্য নেওয়া হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে এ বারে সিআইএসসিই বোর্ডের অধীনে রিজেন্ট পার্ক এলাকার ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলকেও ভোটের কাজে নেওয়া হয়েছে। ওই স্কুলের অধ্যক্ষ রঞ্জন মিত্র জানিয়েছেন, ১৯ তারিখে পুর ভোটের পরের দিনই পরীক্ষা আছে। ফলে, স্কুলের এক দিকে ভোটের কাজ চলবে, অন্য দিকে চলবে পরীক্ষাও। দক্ষিণ কলকাতার রামমোহন মিশনের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, “ভোটের কাজের জন্য এ ভাবে যদি আমাদের স্কুলগুলিকে নেয়, তা হলে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষার রুটিনটাই বদলে ফেলতে হবে। এই পরীক্ষাগুলি নেওয়া হচ্ছে সারা ভারতে। তাই পরীক্ষার রুটিন বদলানো সম্ভব নয়। নিতান্তই যদি বদলাতে হয়, তা হলে সারা ভারতের পরীক্ষার রুটিন পাল্টাতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy