নিজস্ব চিত্র
হারিয়ে গিয়েছিল ‘লিও’। গঙ্গানগরের বাসিন্দা সোয়ানী দে তাঁর প্রিয় পোষ্য বিড়ালটিকে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ভেবেছিলেন, কাছে-পিঠে কোথাও গিয়েছে। ফিরবে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে। কিন্তু সে ফেরেনি। বেলা বাড়তেই তাই শুরু হয় খোঁজ। ছাদে উঠে ডাকাডাকি করতে শুরু করেন দে পরিবারের সদস্যেরা। শেষে সন্ধ্যা বাড়তেই জানা যায়, আটকে পড়েছে লিও। গঙ্গানগরে বিমানবিহারী আবাসন একেবারে বিমানবন্দরের পাঁচিল লাগোয়া। বাড়ির ছাদ থেকে কোনও কারণে সেই পাঁচিলের ভিতর পড়ে গিয়েছে লিও। আর বেরোতে পারছে না। তাতেই হয় বিপত্তি।
সোয়ানী জানিয়েছেন, ‘‘সাড়ে আটটার সময় আমরা জানতে পারি ও বিমানবন্দরের এলাকার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। আমরা প্রথমে কাছের ওয়াচ টাওয়ারে যোগাযোগ করি। সেখান থেকে এক জন সিআইএসএফ জওয়ান আসেন। তিনি চেষ্টা করেন লিওকে উদ্ধার করার। কিন্তু পারেননি। আঁচড়-কামড়ের ভয় পাচ্ছিলেন। তত ক্ষণে বেজে গিয়েছে সাড়ে ১০টা। তখন আমরা সিআইএসএফ-এর পাঁচ নম্বর গেটে যাই। কিন্তু ওখান থেকে বলা হয়, এ ভাবে কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। মোবাইল নম্বর নিয়ে বলা হল, কিছু পেলে যোগাযোগ করা হবে।’’
তত ক্ষণে ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে পোস্ট দিয়ে দিয়েছেন সোয়ানী। টুইটারেও একটি পোস্ট করা হয়। তাঁর বন্ধুরা শেয়ার করতে শুরু করেছেন ‘লিও’র আটকে পড়ার গল্প। তার পরেই রাতে দেড়টা নাগাদ সিআইএসএফ একটি গাড়ি আসে সোয়ানীর বাড়ির পাশের এলাকায়। সোয়ানী বলেন, ‘‘তখনও লিওকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাত দুটো পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোনও লাভ হয়নি।’
এর পরের ঘটনা শুক্রবার সকালের। যদিও সকাল থেকেই লিওকে বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা শুরু হয়। সোয়ানীকে সেই সময়েই এক সিআইএসএফ আধিকারিক ফোন করে বলেন, এয়ারপোর্ট ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে। সোয়ানী বলেন, ‘‘আমরা সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ পৌঁছে যাই। সেখান থেকে বলা হয়, ম্যানেজার বা ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমাদের একটি আবেদনপত্রও লিখতে বলা হয়। তার পর এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের অফিসে যাই। সেখানে তৎপরতা দেখাতে শুরু করেন এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ। লিওর ছবি ছাপিয়ে বেশ কয়েক জনকে দেওয়া হয়। পাস বানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় সঙ্গে সঙ্গে। বেলা ১২টা নাগাদ একটি গাড়িতে কয়েক জন সিআইএসএফ জওয়ান, এয়ারপোর্টের কর্মী ও আমরা উদ্ধারের জন্য বেরিয়ে পড়ি। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত বিমানবন্দরের ঘাসে লুকিয়ে থাকা লিওকে খুঁজে বার করি আমরা।’’
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সোয়ানী। তিনি বলেন, ‘‘এত দ্রুত ব্যবস্থা না করলে হয়ত লিওকে ফেরত পেতাম না।’’ বিমাববন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে মনোজকুমার বেহরা (জেনারেল ম্যানেজার-অপরেশনস) জানিয়েছেন, ‘‘আমরাও ভীষণ খুশি হয়েছি লিও উদ্ধার হওয়ায়। আমরা সকলে মিলেই চেষ্টা করেছিলাম। ওঁরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন, আমরাও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy