প্রতীকী ছবি।
নির্দেশ ছিল, ‘সবুজ বাজি’ ছাড়া বাকি সব ধরনের বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ। এমনকি, কালীপুজোর রাতে সবুজ বাজিও ফাটানো যাবে দু’ঘণ্টা। তখনই অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, আদালতের সেই নির্দেশ মানা হবে তো? সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে কালীপুজোর আগের রাতেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ উঠল। এমন পরিস্থিতি যে হতে পারে, তা আঁচ করে পুলিশের তরফেও আগাম কোনও ব্যবস্থা রাখা হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে আজ, বৃহস্পতিবার পুজোর রাতে কী হবে, এখন বড় হয়ে উঠেছে সেই প্রশ্নটাই। যদিও পুলিশের শীর্ষ মহলের দাবি, আজ সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত কড়া নজরদারি চালানোই একমাত্র ওষুধ। ভুক্তভোগীদের
অবশ্য বক্তব্য, ‘‘পুজোর আগের দিন থেকেই যেখানে শব্দবাজি ফাটা শুরু হয়ে গিয়েছে, সেখানে পুজোর দিনে এমন নজরদারিতে কাজ হবে কি?’’
উল্লেখ্য, কালীপুজোয় নৈশ কার্ফু তুলে দেওয়ার ঘোষণা আগেই করেছিল রাজ্য। এর পাশাপাশি সবুজ বাজিতে যে ছাড় থাকছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বুধবার। ফলে পুজোর রাতে জোড়া ছাড়ের মধ্যে বিধি পালন করাতে গিয়ে কোনটা সবুজ বাজি আর কোনটা নয়, সেই কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে পুলিশকে।
গত বছর অতিমারির বাড়বাড়ন্তের মধ্যে সব রকমের বাজি বিক্রি এবং ফাটানো নিষিদ্ধ করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তা সত্ত্বেও শহর জুড়ে চলেছিল দেদার বাজি-তাণ্ডব। পুজোর রাত যত গড়িয়েছে, বাজি রুখতে ততই ‘নাজেহাল’ হতে হয়েছিল পুলিশকে। অভিযোগ, বড় রাস্তায় নজরদারি থাকলেও গলি বা বাড়ির ছাদে ফাটতে থাকা বাজির কার্যত নাগাল পায়নি তারা। এ বার বাজি নিয়ে হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াই চলতে থাকায়
পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। পুজোর আগের দিন পর্যন্তও পুলিশ নিশ্চিত হতে পারছিল না, কোন বাজিতে ছাড় রয়েছে আর কোনটিতে নয়! শুধু পরিবেশবান্ধব বাজি ফাটানো যাবে, এমন রায়ের পরেও সবুজ বাজি চেনা যাবে কী ভাবে, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। তারই মধ্যে এ দিন দক্ষিণের কসবা-সহ কিছু জায়গার পাশাপাশি উত্তরের বেলেঘাটা, মানিকতলা, কাশীপুর, কালিন্দীতে শব্দবাজি ফাটার অভিযোগ উঠেছে।
চিকিৎসক থেকে পরিবেশবিদদের বড় অংশই বলছেন, দুর্গাপুজোয় যাঁরা দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো করোনা-সতর্কতা ভুলে মণ্ডপে প্রতিমা দর্শন করতে ভিড় করেন, তাঁদের পক্ষে আদালতের রায়ের সুযোগ নিয়ে দেদার বাজি ফাটানো বিচিত্র নয়। এমনকি, সরকার রাতের কার্ফু তুলে নেওয়ায় পথে নেমে ফের বিধিভঙ্গের নজিরও গড়তে পারেন তাঁরা। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার মন্তব্য, ‘‘সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পুলিশকে এক দিকে পথের ভিড় সামলাতে হবে, অন্য দিকে নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোও রুখতে হবে। হাতে অস্ত্র বলতে কড়া নজরদারি আর কড়া আইন প্রয়োগ।’’
পুলিশ জানায়, নিষিদ্ধ বাজি ঠেকাতে বুধবার রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চলে ‘ব্লক রেইড’। যাতে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের একাধিক শীর্ষ কর্তা।
লালবাজার সূত্রে খবর, নিষিদ্ধ বাজি ঠেকাতে প্রতিটি থানায় পাঁচ-ছ’টি করে দল তৈরি করা হচ্ছে। তারা বিকেল থেকেই নিজেদের নিজেদের এলাকায় ঘুরে টহল দেবে। শহরের অলিগলি চষে ফেলতে মোট ১১৫টি অটো ভাড়া নিয়েছে পুলিশ। এর সঙ্গে ন’টি ডিভিশনে দু’জন ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে ১০০ জন পুলিশকর্মীকে ‘স্ট্যান্ডবাই’ রাখা হচ্ছে দু’দিনের জন্য। প্রয়োজন মতো ডিভিশনের ডিসি ওই পুলিশকর্মীদের নিয়ে দল তৈরি করে এলাকায় টহল দিতে পারেন। এ ছাড়াও থাকছে ২৭টি নজর-মিনার এবং ১৮টি বিশেষ মোবাইল নজরদারি দল। দেদার বাজি ফাটলে প্রয়োজনে একটি দল নিয়ে পথে বেরোতে পারেন গোয়েন্দাপ্রধানও। তিনি এ দিন আবেদন জানিয়েছেন, ‘‘মানুষ সতর্ক না হলে কোনও ব্যবস্থাই কাজে আসবে না। করোনাকালের স্মৃতি মনে করে অন্তত সকলে সতর্ক হোন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy