অঝোরধারায়: বুধ-সন্ধ্যায় শহরে ফের ঝড়বৃষ্টি। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
আমপানের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে রয়েছে শহর। সেই ঝড়ের ক্ষত এখনও সামলে ওঠা যায়নি। তারই মধ্যে ফের বুধবার রাতে আছড়ে পড়ল কালবৈশাখী, ঘণ্টায় ৯৬ কিলোমিটার বেগে। এ দিনের ঝড়ে শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে আবারও গাছ পড়ে রাস্তা আটকে যাওয়ার খবর আসে। কোথাও ফের পড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি এবং ট্র্যাফিক সিগন্যাল। রাত বাড়তেই আসতে থাকে বাড়ি ভেঙে পড়ার খবরও।
বড়তলা থানা সূত্রের খবর, এ দিনের ঝড়ে গোয়াবাগানের একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের পাঁচিল ভেঙে পড়ে পাশের বস্তিতে। ক্ষতি হয়েছে বস্তির দু’টি বাড়ির। আমপানের সময়ে পাঁচিলটির কিছুটা ক্ষতি হয়েছিলই। অন্য দিকে, তেলেঙ্গাবাগান এলাকায় বটগাছ-সমেত একটি পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ে। দু’টি ঘটনাতেই হতাহতের খবর নেই।
লালবাজার এবং পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের ২৫টির মতো জায়গা থেকে গাছ পড়ার খবর এসেছে। যার মধ্যে রয়েছে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের একটি সিনেমা হলের কাছে, শরৎ বসু রোড এবং লেক রোডের সংযোগস্থল, বেলেঘাটা মেন রোড, চাউলপট্টি রোড, নারকেল ডাঙা মেন রোড, রাজা বসন্ত রায় রোড-সহ শহরের বেশ কয়েকটি জায়গা। শোভাবাজার এলাকার একটি গাড়ির উপর পড়ে যায় গাছ। তবে গাড়ির ভিতরে কারও ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বেলগাছিয়া ট্রাম ডিপোর সামনের রাস্তা, ফুলবাগান মোড় এবং বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালের কাছেও এ দিন গাছ পড়ে রাস্তার এক দিক বন্ধ হয়ে যায়। বেলগাছিয়া সেতুর উপরে ঝড়ের সময়ে বহু গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। সেখানে ট্রামলাইন তুলে ফেলার কাজ চলছে বলে রাস্তার একাংশ ব্যারিকেড করা আছে। প্রবল হাওয়ায় সেই ব্যারিকেড পড়ে যায়। ছোট গাড়িগুলি কাঁপতে থাকে।
এ দিনের ঝড়ে কাশীপুর রোড এবং চিৎপুর লকগেট উড়ালপুলের সংযোগস্থলে একটি বাতিস্তম্ভ রাস্তার মাঝখানে ভেঙে পড়ে। যার ফলে বন্ধ হয়ে যায় চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল দিয়ে গাড়ির যাতায়াত। ওই রাস্তা দিয়েই উত্তরমুখী গাড়ি বি টি রোডের দিকে যাওয়ার কথা। উড়ালপুলে ওঠার মুখে ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডবে ১০ জনেরও বেশি মোটরবাইক আরোহী ছিটকে পড়েন। তাঁদের পাশ দিয়ে উড়ে যায় টিনের চাল।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে রাজা এস সি মল্লিক রোডে দু’টি গাছ পড়ে যাওয়ায় বন্ধ হয় রাস্তা। বি কে পাল অ্যাভিনিউ, রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিট-সহ উত্তরের বিভিন্ন রাস্তাতেও গাছ পড়ে যায়। পুরসভা জানায়, তাদের দল গাছ কেটে রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ করছে। পুলিশও সেই কাজে হাত লাগিয়ে গাড়ির চলাচলের রাস্তা করে দিয়েছে।
টালিগঞ্জের এনএসি বসু রোডেও বিদ্যুতের তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলতে থাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক পুলিশকর্তা জানান, দমকা হাওয়া এবং বৃষ্টির পরে বেশ কিছু এলাকায় রাস্তার বাতি নিভে যায়। কিছু রাস্তায় একটি লেন বন্ধ হলেও পাশেরটি দিয়ে দু’দিকের গাড়ি বার করা হয়।
এ দিনের ঝোড়ো হাওয়ার প্রবল দাপট শহরবাসীকে ২০ মে-র সেই দুর্যোগের আতঙ্কই মনে করিয়ে দিয়েছিল। কয়েক হাজার গাছের দেহ আর ব্যাহত পরিষেবার ক্ষোভ নিয়ে যে আতঙ্ক এখনও বয়ে চলেছে এ শহর।
আরও পড়ুন: যাত্রী নিয়ে ফের ছুটল অটো, জারি নির্দেশিকা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy