ধৃত মাদক পাচারকারী জয়দেব দাস। —নিজস্ব চিত্র
ট্যাংরার বাসিন্দা জয়দেব দাসকে গ্রেফতারের পরেই গোয়েন্দারা বুঝে গিয়েছিলেন, তাঁরা সবে হিমশৈলের চূড়ায় রয়েছেন। ঠিকই অনুমান করেছিলেন বলে এখন মনে করছেন গোয়েন্দারা। জয়দেবকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর এ বার তার রাজনৈতিক যোগের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। শুধু বিজেপি নয়, তার সঙ্গে তৃণমূলের দু’একজন বড় নেতারও দহরম মহরম ছিল বলে জানা গিয়েছে।
মাদক বিক্রির টাকা কোনও ভাবে রাজনৈতিক নেতাদের ‘খুশি’ করার কাজে ব্যবহার হত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত চার মাসে জয়দেবের আয়ের হিসাব দেখেই গোয়েন্দাদের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছে। শুধু মাত্র গাঁজা বিক্রি করেই গত চার মাসে প্রায় এক কোটি টাকা রোজগার করেছে জয়দেব। এ ছাড়া চরস, ইয়াবা ট্যাবলেট, হেরোইনের মতো মাদকের ‘ডিলার’ হয়ে উঠেছিল ট্যাংরার এই বাসিন্দা। তবে এ সব যাতে সামনে না আসে, সে জন্য জয়দেব বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
সেই সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে, এমন নেতাদের কী ভাবে কাজে লাগাতে হবে, তা ভালই জানত জয়দেব। গোয়েন্দাদের ধারণা তেমনই। তাঁরা জানতে পেরেছেন, বরাবরই নেতা হওয়ার ইচ্ছে ছিল জয়দেবের। গত লোকসভা নির্বাচনে ‘ভারতীয় মানবাধিকার পার্টি’র প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনে তার দেওয়া তথ্যেও গরমিল খুঁজে পেয়েছেন গোয়েন্দারা। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, ফ্ল্যাট রয়েছে তার। কিন্তু সেই হিসেব ঠিক মতো দেওয়া হয়নি। দু’জন ব্যক্তিগত রক্ষীও ছিল। তাঁদের প্রতি মাসে ২৮ হাজার টাকা করে বেতন দিত জয়দেব। সেই হিসেবেও গরমিল। সোনার হার-গয়না পরতে ভালবাসে। কত টাকা মূল্যের সোনা তারা রয়েছে, সেই হিসেব দেয়নি জয়দেব।
আরও পড়ুন: চাষি বেচছেন ৮ টাকায়, আমরা ১২০ টাকায় কিনছি, পেঁয়াজের এত লাভ কার পকেটে যাচ্ছে?
জেরা করে জানা গিয়েছে, জয়দেবের বাবা-মা ওই এলাকার একটি ঝুপড়িতে থাকেন। ওই বাড়িতেও সিসি ক্যামেরা রয়েছে। স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে খবর, জয়দেবের পরিবারের বহু সদস্য এই মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এতটা সংগঠিত ভাবে মাদকের ব্যবসা করত যে, কারও পক্ষে বোঝা সম্ভব ছিল না জয়দেব আসলে কলকাতার মাদক কারবারের মাথা হয়ে উঠছে।
তবে জয়দেবের ‘গড ফাদার’ ছিল একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা। ওই নেতার যোগ নিয়ে আরও তথ্য পেতে চাইছেন গোয়েন্দারা। তাঁরা যে তথ্য পেয়েছেন, তার খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফেসবুকে নেতাদের ছবি, এমনকি টালিগঞ্জের এক প্রথম সারির অভিনেত্রীর সঙ্গেও তার ছবি রয়েছে।
আরও পড়ুন: পুলিশে ফোন করেননি কেন? চিকিৎসক খুনে বিতর্কিত মন্তব্য মন্ত্রীর, নিন্দার ঝড়
এই মাদক চক্রে জড়িত রয়েছে জয়দেবের স্ত্রী গৌরী দাসও। তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার সিসি ক্যামেরায় গোয়েন্দাদের আসতে দেখে, জয়দেবের স্ত্রী গৌরী তাঁদের পোষ্য রটউইলার ও ডোবারম্যানকে লেলিয়ে দেয় পুলিশ কুকুর হ্যান্ডলারের উপরে। পুলিশ ওই পোষ্য দু’টিকে পুরসভার কেনেল-এ রাখার আবেদন জানিয়েছিল আদালতে। বিচারক তা মঞ্জুরও করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy