অভিনব: পটচিত্রের মাধ্যমে করোনা সচেতনতার প্রচার। নিজস্ব চিত্র
কমিউনিটি রেডিয়োর বাঁধনে গোটা রাজ্যকে বেঁধে প্রান্তিক মানুষজনের কথা, হারিয়ে যেতে বসা লোকশিল্প-সংস্কৃতির ঐতিহ্য তুলে আনতে উদ্যোগী হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এই কাজে সাহায্য করছে ইউনিসেফ।
‘গণ প্রতিধ্বনি’ নামের এই যৌথ প্রকল্পে কোভিড মোকাবিলা তো বটেই, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিশুদের রক্ষা, শিক্ষার মতো বিষয় নিয়ে সচেতনতার প্রচার করা হবে, তুলে ধরা হবে রাজ্যের নানা কোণায় থাকা সাংস্কৃতিক জনগোষ্ঠীর সমস্যার কথা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি রেডিয়ো স্টেশন, ‘রেডিয়ো জেইউ’-এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ভাবে রাজ্যের সব ক’টি কমিউনিটি রেডিয়ো স্টেশনকে এক ছাতার তলায় এনে এই কাজের পরিকল্পনা করেছেন ইউনিসেফের এ রাজ্যের ‘কমিউনিকেশন ফর ডেভেলপমেন্ট’ বিশেষজ্ঞ বীণা সিংহ। যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি রেডিয়ো দীর্ঘদিন ধরে কোভিড মোকাবিলা-সহ নানা সামাজিক বিষয়ে যে ভাবে কাজ করে চলেছে, ইউনিসেফের এই প্রকল্প তারই স্বীকৃতি। এর ফলে যাদবপুর নিজের গোষ্ঠীর বাইরেও বৃহত্তর সমাজকে সঙ্গে নিয়ে সকলের জন্য কাজ করতে পারবে।’’
রেডিয়ো জেইউ-এর কনভেনর, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ইমনকল্যাণ লাহিড়ী জানান, দশ মাসের এই প্রকল্পে এ মাস থেকেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের নানা জায়গায় চলা দশটি কমিউনিটি রেডিয়ো সেন্টারকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সেই সঙ্গে ছো, বাউল, গম্ভীরা, ঝুমুর, পটের গানের মতো লোকশিল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা হবে। উঠে আসবে তাঁদের জীবনযাত্রার বাস্তব ছবি, সুখ-দুঃখের কথা।
ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও উত্তরবঙ্গের একাংশে এই কাজের দায়িত্বে রয়েছেন ঝাড়গ্রামে জনজাতি গ্রাম, লালবাজারে শিল্পগ্রাম ‘খোয়াব গাঁ’ গড়ে তোলার কর্ণধার, শিল্পী মৃণাল মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘শিল্পচর্চার মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষজনের জীবনযাত্রার সঙ্গী হওয়া, তা বোঝা সম্ভব। তাই লোকশিল্পের মাধ্যমে এ ভাবে যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’’ তিনি জানান, পটশিল্পীরা ইতিমধ্যেই করোনা সচেতনতায় পটের ছবি ও গান বেঁধেছেন।
ইউনিসেফ সূত্রের খবর, লোকশিল্পকে এই প্রকল্পের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেওয়ার পিছনে দু’টি উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমত, লোকশিল্পের মাধ্যমে আঞ্চলিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের সমস্যার কথা জানা সহজ হবে। দ্বিতীয়ত, লোকশিল্পীদের বর্তমান প্রজন্মের একাংশের এই সব শিল্প সম্বন্ধে অনীহা কিছুটা দূর করা যাবে। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, মালদহ, দার্জিলিং, ময়নার মতো নানা জায়গায় থাকা কমিউনিটি রেডিয়ো সেন্টারের মাধ্যমে এই কাজ হবে। বাংলার সঙ্গেই অনুষ্ঠান হবে সাঁওতালি, নেপালি, রাজবংশী, উর্দুর মতো নানা ভাষায়। ইমনকল্যাণ বলেন, ‘‘রেডিয়োর মাধ্যমে বার্তা দেওয়া যেমন চলবে, তেমনই ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে ওই সব লোকশিল্পের ছবি, ভিডিয়ো সম্প্রচার করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy